Advertisement

পেয়ারা বাগান ঘুরে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা

কালবেলা

প্রকাশ: ৭ আগস্ট, ২০২৫

বাগান থেকে পেয়ারা বিক্রির জন্য নেওয়া হয়। ছবি : কালবেলা
বাগান থেকে পেয়ারা বিক্রির জন্য নেওয়া হয়। ছবি : কালবেলা

পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার আটঘর ও কুড়িয়ানা অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী পেয়ারা বাগানে এখন পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। দেশের একমাত্র ভাসমান পেয়ারা বাজারকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এ অঞ্চলটি এখন শুধু কৃষিপণ্য উৎপাদনের জন্য নয়, বরং পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেও পরিচিতি পাচ্ছে। জুলাই-আগস্ট মাসে এ অঞ্চলে পেয়ারা ও আমড়ার মৌসুম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জমে ওঠে এই জনপদের নদীঘেরা বাগানগুলো।

নদীপথে নৌকায় করে ঘুরে ঘুরে পেয়ারা ও আমড়া সংগ্রহের দৃশ্য, সঙ্গে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও নির্জন পরিবেশ দর্শনার্থীদের কাছে এক নতুন অভিজ্ঞতা এনে দেয়। দেশের নানা প্রান্ত থেকে প্রতিদিন ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসছেন এ এলাকায়। অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে নৌকা ভাড়া করে বাগানে ঘুরে বেড়ান, সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে টাটকা ফল কেনেন।

স্থানীয় আদমকাটি গ্রামের কৃষক পরিতোষ মণ্ডল বলেন, প্রচুর পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে, পাশাপাশি এখন পর্যটকদের কারণে আয় বেড়েছে দ্বিগুণ। অনেকেই নৌকা, হোটেল, গাইড সার্ভিস দিয়েও রোজগার করছেন। পেয়ারা বাগান ঘিরে গড়ে উঠেছে ছোট ছোট হোটেল, খাবার দোকান এবং স্থানীয় হস্তশিল্প বিক্রির স্টল।

ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক আনোয়ার হোসেন বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভাসমান পেয়ারা বাজারের ভিডিও দেখে আগ্রহ জন্মায়। এখানে এসে সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি। নৌকায় বসে চারদিকে সবুজ পেয়ারা বাগান আর পাখির ডাক শুনে মনটাই ভালো হয়ে গেছে। এটা বাংলাদেশের এক অনন্য সৌন্দর্য। এমন জায়গা আরও যত্ন নিয়ে রক্ষা করা দরকার।

একই অভিমত বরিশাল থেকে আসা কলেজ শিক্ষার্থী মো. হাবিবুল্লাহ মিঠুর। তিনি বলেন, বন্ধুদের নিয়ে এসেছি। এখানে এসে অনেক কিছু জানার ও দেখার সুযোগ হয়েছে। কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি পেয়ারা কেনা, নৌকা ভ্রমণ- সব মিলিয়ে অভিজ্ঞতাটা দারুণ।

স্থানীয় প্রশাসনও পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবার মান নিশ্চিতে কাজ করছে বলে কালবেলাকে জানিয়েছেন নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ভাসমান পেয়ারা বাজার পর্যটকদের কাছে এখন অন্যতম আকর্ষণ। আমরা পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং ভ্রমণপিপাসুদের জন্য নৌকা চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।

ইউএনও বলেন, এই ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারিভাবে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আমরা চাই, এই স্থানটি শুধু পেয়ারা উৎপাদনের জন্য নয়, দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেও দেশ-বিদেশে পরিচিত হোক। এই ঐতিহ্যবাহী পেয়ারা বাগান ও ভাসমান বাজার পর্যটন শিল্পের এক অনন্য সম্ভাবনা হয়ে উঠছে, যা শুধু নেছারাবাদের নয়, পুরো দেশের গর্ব।

Lading . . .