বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করল আ.লীগ কর্মীরা
প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বরিশালের মুলাদীতে বাবুল ব্যাপারী (৫৫) নামে এক বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগ কর্মীরা।
শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে মুলাদী সদর ইউনিয়নের দড়িচরলক্ষীপুর (কাঠেরপুল) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় তারা কুপিয়ে আরও আটজনকে আহত করেছে। আহতদের মধ্যে দুজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহত বাবুল ব্যাপারী ওই গ্রামের মৃত গহর আলী ব্যাপারীর ছেলে। ২০১৮ সালের নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা কেন্দ্র করে মামলা এবং জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড বলে দাবি পরিবারের।
নিহতের স্বজন ও পরিবারের সদস্যরা জানান, দড়িচরলক্ষীপুর গ্রামের করিম মল্লিক, ইয়াসিন মল্লিক, রফিক মল্লিকের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে।
নিহতের ভাতিজা মো. আলীম ব্যাপারী জানান, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি ও তার চাচা বাবুল ব্যাপারী বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় আ.লীগের করিম মল্লিক ও তার লোকজন তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। ওই ঘটনায় করিম মল্লিকসহ ১০ জনকে আসামি করে মামলা করলে বিরোধ তৈরি হয়। এছাড়া দড়িচরলক্ষীপুর এলাকায় একটি জমি নিয়ে করিম মল্লিক ও তার লোকজনের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে। ওই বিরোধের জের ধরে শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে করিম মল্লিক (৬০), ইউসুফ মল্লিক (৩৫), রফিক মল্লিক (৩২), শফিক মল্লিক (৩০), তামিম মল্লিক (২৮), ইয়াসিন মল্লিকসহ আ.লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগের ১৪-১৫ জন কর্মী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীরা কোনো কথা না বলেই আলীম ব্যাপারী ও বাবুল ব্যাপারীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। তারা বাবুল ব্যাপারীর বাম হাত ও বাম পা কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এ সময় আলীম ব্যাপারীর স্ত্রী হাচিনা বেগম, ভাইয়ের স্ত্রী রেশমা বেগমসহ বাড়ির লোকজন তাদের রক্ষা করতে গেলে হামলাকারীরা তাদেরও কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে। আহতদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে মুলাদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বাবুল ব্যাপারীকে মৃত ঘোষণা করেন। আলীম ব্যাপারী ও রেশমা বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের বড় ভাই জালাল ব্যাপারী জানান, ২০১৮ সালে মামলার পর থেকেই করিম ব্যাপারী ও তার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়। তারা মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। মামলা তুলে না নেওয়ায় বাবুল ব্যাপারীকে হত্যা করা হয়েছে।
মুলাদী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব কাজী কামাল হোসেন বলেন, বাবুল ব্যাপারী মুলাদী সদর ইউনিয়ন বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। আলীম ব্যাপারী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী। ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ কর্মীরা বাবুল ব্যাপারীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
মুলাদী থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, পূর্বশত্রুতা ও জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।