কুয়াকাটায় জেলের জালে ধরা পড়ল ২০ কেজি ওজনের বিরল বাদুড় মাছ
প্রকাশ: ৯ আগস্ট, ২০২৫

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত–সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে এক জেলের জালে ২০ কেজি ওজনের বিরল প্রজাতির ‘বাদুড় মাছ’ ধরা পড়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে মাছটি মহিপুরের একটি মৎস্য আড়তে বিক্রির জন্য আনা হয়। পরে স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. সরোয়ার হোসেন মাছটি কিনে নেন।
জেলে মো. আবু হানিফ জানান, পাঁচ দিন আগে তিনি ইলিশ শিকারের জন্য সাগরে গিয়েছিলেন। চরবিজয়–সংলগ্ন এলাকায় জাল ফেললে মাছটি ধরা পড়ে। এ সময় প্রচুর ইলিশও জালে ওঠে। মাছটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ প্রায় এক ফুট করে, তবে লেজ প্রায় দুই ফুট লম্বা। পুরুত্বও বেশি। এলাকায় এ মাছের তেমন চাহিদা না থাকায় তিনি ২৫০ টাকা কেজি দরে মোট পাঁচ হাজার টাকায় সরোয়ার হোসেনের কাছে বিক্রি করেন।
ক্রেতা সরোয়ার হোসেন বলেন, মাছটি ঢাকার বাজারে নিয়ে বিক্রি করা হবে। বিরল আকৃতির মাছটি দেখতে আড়তে ভিড় জমান উৎসুক মানুষ।
মহিপুরের জেলেরা জানান, এ ধরনের মাছ সচরাচর আড়তে দেখা যায় না, তাই চাহিদাও কম। স্থানীয় জেলেদের কাছে মাছটি ‘বাদুড় মাছ’ নামে পরিচিত।
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও সামুদ্রিক প্রাণী বিশেষজ্ঞ মো. কামরুল ইসলাম বলেন, এই মাছ সাধারণত ইন্দো-প্যাসিফিক ও ফিলিপাইন সাগরে বিচরণ করে। বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরেও এদের পাওয়া যায়। সাদা পেট, কালো বা বাদামি পিঠ, লম্বা পাতলা লেজ, প্রসারিত মাথা এবং বাদুড়ের ডানার মতো দুটি পাখনা এদের বৈশিষ্ট্য। স্ত্রী প্রজাতি ৬ ফুট পর্যন্ত লম্বা ও ৯০ কেজি পর্যন্ত ওজনের হতে পারে, পুরুষ তুলনামূলক ছোট।
কামরুল ইসলাম আরও বলেন, এ মাছ একসঙ্গে ২ থেকে ১০টি বাচ্চা জন্ম দেয়। গর্ভকাল ৯ থেকে ১২ মাস। তারা ১৮০ মিটার গভীরতা থেকে অগভীর উপসাগর ও বালুময় তটরেখায় বাস করে। খাদ্য হিসেবে সমুদ্রের তলদেশে থাকা মলাস্ক, ক্রাস্টেসিয়ান ও ছোট মাছ শিকার করে। হাঙর গোত্রীয় হওয়ায় এবং পিঠের চামড়া মোটা থাকায় এ মাছ খাদ্য হিসেবে ততটা জনপ্রিয় নয়।