Advertisement

কুমিল্লায় শিশু হত্যার দায়ে চাচির যাবজ্জীবন, প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড

প্রথম আলো

প্রকাশ: ২০ আগস্ট, ২০২৫

24obnd

কুমিল্লার তিতাসে সাত বছর বয়সী শিশু সায়মন ওরফে আরিয়ানকে হত্যার অভিযোগে তার চাচিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও চাচির প্রেমিককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক সাব্বির মাহমুদ চৌধুরী এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বিল্লাল পাঠানের বাড়ি তিতাস উপজেলার বিরামকান্দিতে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শেফালী আক্তার একই উপজেলার কলাকান্দি উত্তরপাড়ার মাস্টার বাড়ির জামাল মিয়ার স্ত্রী। রায় ঘোষণার সময় আসামি বিল্লাল ও শেফালী কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাঁদের কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

শিশু সায়মন উপজেলার কলাকান্দি গ্রামের উত্তরপাড়ার মাস্টার বাড়ির প্রবাসী আবুল কাসেমের ছেলে। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আদালতে অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মো. ইকরাম হোসেন বলেন, দণ্ডপ্রাপ্তদের অন্তরঙ্গ মুহূর্ত দেখে ফেলায় আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে পূর্বপরিকল্পিতভাবে শিশু সায়মন ওরফে আরিয়ানকে হত্যা করে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৬ আগস্ট বিকেলে শিশু সায়মন মায়ের সঙ্গে তিতাসের বাতাকান্দি বাজারে যায়। সেখান থেকে কোমল পানীয় কিনে শেফালী আক্তারের ছেলের সঙ্গে খেলার জন্য গিয়ে আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। দুই দিন পর সায়মন নিখোঁজের ঘটনায় তিতাস থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তার মা।

জিডির পরদিন সকালে সায়মনের অর্ধগলিত পোড়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই দিনই এ ঘটনায় সায়মনের মা খোরশেদা আক্তার চাচি শেফালী বেগম ও অজ্ঞাতনামা পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরে মামলার তদন্তে বিল্লাল পাঠানের নাম উঠে আসে। ঘটনার পর পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২০২৩ সালের ২২ আগস্ট আসামি শেফালী আক্তার ও একই বছর ৩১ ডিসেম্বর আসামি বিল্লাল পাঠানকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়। আসামি বিল্লাল পাঠান ও শেফালী হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০২৪ সালের ৮ অক্টোবর আসামি বিল্লাল পাঠান ও শেফালী আক্তারের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে আদালত বিল্লাল পাঠানকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। আর আসামি শেফালী আক্তারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত। এ ছাড়া লাশ গুমের অভিযোগে আরেকটি ধারায় উভয় আসামিকে পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন বিচারক।

রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন শিশু সায়মনের মা খোরশেদা আক্তার। তিনি রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

Lading . . .