নাঙ্গলকোটে জোড়া লাগানো যমজ কন্যা জন্ম, উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ
প্রকাশ: ৭ আগস্ট, ২০২৫

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম নিয়েছে মাথা জোড়া লাগানো যমজ কন্যাশিশু। মঙ্গলবার রাতে পার্শ্ববর্তী লাকসাম উপজেলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে এ বিরল ঘটনার জন্ম হয়।
নবজাতক দুই শিশুর নাম রাখা হয়েছে সাফা ও মারওয়া।
উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের দ্রুত ঢাকায় স্থানান্তরের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
জানা গেছে, প্রসূতি আসমা বেগম নাঙ্গলকোট উপজেলার রায়কোট উত্তর ইউনিয়নের বেকামলিয়া মধ্যমপাড়ার বাসিন্দা। তিনি দিনমজুর তৈয়ব আলীর স্ত্রী। ১২ বছর সংসার জীবনে দুই কন্যা সন্তানের পর এবার জন্ম নিয়েছে মাথা-সংযুক্ত জোড়া যমজ শিশু।
গর্ভকালীন ৮ মাসে আলট্রাসনোগ্রামে যমজ সন্তানের অস্তিত্ব ধরা পড়লেও, তারা জোড়া লাগানো— এ তথ্য জানা যায়নি। মঙ্গলবার প্রসব ব্যথা শুরু হলে আসমাকে লাকসামের গ্রীন লাইফ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গাইনি সার্জন ডা. কামরুন নাহারের নেতৃত্বে সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম হয় দুই নবজাতকের।
বর্তমানে সাফা ও মারওয়া চিকিৎসাধীন রয়েছে লাকসাম গ্রীন লাইফ হাসপাতালে। তাদের সার্বক্ষণিক দেখভালে রয়েছেন শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. ওমর ফারুক, সার্জারি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. রায়হানুল হকসহ একটি অভিজ্ঞ মেডিকেল টিম। হাসপাতালের পরিচালক মনির হোসেন জানান, শিশু দুটি আপাতত স্থিতিশীল থাকলেও তাদের উন্নত চিকিৎসা অত্যাবশ্যক।
শিশুদের বাবা তৈয়ব আলী বলেন, আমি একজন দিনমজুর, একটি মুরগির খামারে কাজ করি। চিকিৎসকরা ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন, কিন্তু আমাদের পক্ষে সেই ব্যয় বহন করা অসম্ভব। তাই সরকার, বেসরকারি সংস্থা ও সমাজের সহৃদয়বান মানুষের সহযোগিতা কামনা করছি।
মা আসমা বেগম বলেন, সন্তানদের এমন অবস্থায় দেখে আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। আর্থিক সংকটের কারণে চিকিৎসা করাতে পারছি না। এলাকাবাসী ও সমাজের মানুষের প্রতি অনুরোধ—দয়া করে আমাদের সন্তানদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিন।
চিকিৎসক ডা. রায়হানুল হক জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শিশু দুটির মাথা একত্রে সংযুক্ত, তবে তারা আলাদা আলাদা শ্বাস নিচ্ছে। দেশে এখন এ ধরনের জোড়া লাগানো শিশুদের উন্নত চিকিৎসা সম্ভব। তাদের দ্রুত ঢাকায় পাঠানো জরুরি।
হাসপাতাল পরিচালক মনির হোসেন আরও বলেন, রোগী ভর্তির পরপরই গাইনি ও শিশু বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি মেডিকেল টিম গঠন করে চিকিৎসা শুরু করা হয়। হাসপাতালের পক্ষ থেকেও পরিবারকে কিছু আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।