‘যারা নির্বাচনের বিরুদ্ধে কথা বলবে তাদের জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে’
প্রকাশ: ৭ আগস্ট, ২০২৫

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার যাত্রা শুরু হয়েছে। এ গণতন্ত্র বাংলাদেশের জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য শুরু করেছি। গত ১৬ বছর ধরে ত্যাগ, জেল, গুম, খুনের শিকার হয়েছি দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। এ কর্মসূচি দেশের মানুষের গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার এবং মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার যাত্রা। আমরা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আজকের জনসভা, মিছিল প্রমাণ করেছে দেশের মানুষ ধানের শীষের পক্ষের শক্তি। দেশের মানুষ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তির পক্ষে। দেশের মানুষ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সৈনিক, বেগম খালেদা জিয়ার সৈনিক, তারেক রহমানের নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়। যারা নির্বাচনের বিরোধিতা করবে তাদের দেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করবে।
বুধবার বিকালে নগরীর নিউ মার্কেট মোড়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত কেন্দ্র ঘোষিত বিজয় র্যালি পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে বিজয় র্যালিটি নিউ মার্কেট মোড় থেকে শুরু হয়ে কোতোয়ালি মোড়, লালদিঘী, বক্সির বিট, আন্দরকিল্লা মোড়, চেরাগি মোড় হয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
এর আগে বিকাল ৩টা থেকে নগরী ও জেলার বিভিন্ন ইউনিট থেকে শীর্ষ নেতাদের নেতৃত্বে হাজার হাজার মানুষের মিছিল নিউমার্কেটে এসে যোগ দেয়। ব্যান্ড-বাদ্য বাজিয়ে, ধানের শীষ, তারেক রহমানের ছবি নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে সবাই র্যালিতে যোগ দেন।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের সভাপতিত্বে ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন এবং মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শওকত আজম খাজার পরিচালনায় এতে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি হারুন অর রশীদ, ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, শ্রম সম্পাদক এএম নাজিম উদ্দীন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক আবু সুফিয়ান, বর্তমান আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আব্বাস, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী প্রমুখ।
আমির খসরু আরও বলেন, বিএনপিতে যারা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবে তাদের রাজনীতি বিএনপিতে নেই। যারাই শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবে তাদের বিরুদ্ধে বিএনপি ব্যবস্থা নিবে। দেশের মানুষ এখন সুষ্ঠু রাজনীতি চায়, দেশের মানুষ সহনশীল রাজনীতি চায়, দেশের মানুষ পরস্পরের প্রতি সম্মানবোধ জানিয়ে রাজনীতি করতে চায়।
তিনি বলেন, রাজনীতিতে মত পার্থক্য থেকেও একে অপরের প্রতি সম্মান দেখিয়ে বিএনপি নতুন রাজনীতি শুরু করেছে বাংলাদেশে। আমাদের সবাইকে সেটা ধারণ করতে হবে। সফলভাবে তারেক রহমানের নেতৃত্বে ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচারকে বিদায় করতে পেরেছি। আমাদের বহু প্রাণের বিনিময়ে, ত্যাগের বিনিময়ে আজকে এ জায়গায় বিএনপির নেতৃত্বে দেশের জনগণকে নিয়ে সফলভাবে গণতন্ত্রের পথে চলতে শিখেছি। বিএনপিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীর কোনো স্থান নেই। বারবার বলছি, কোনো শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীর জায়গা হবে না বিএনপিতে। ৫-৬ হাজারকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কোনো দখলদার, চাঁদাবাজদের জায়গা নেই বিএনপিতে। তাই সুশৃঙ্খল রাজনীতির চর্চা করতে হবে। কোনো ভাইয়ের রাজনীতি বিএনপিতে চলবে না। শুধু বিএনপির রাজনীতি করতে হবে।
নির্বাচন সম্পর্কে আমির খসরু বলেন, এখন নির্বাচনি সড়কে প্রবেশ করেছি। দেশের মানুষ ধানের শীষের অপেক্ষায় আছে। লক্ষ লক্ষ জনতা আজকে এখানে জমায়েত হয়েছে শুধু গণতন্ত্রের যে অগ্রযাত্রায় আমরা নেমেছি, সেটাকে সফলভাবে আরও বেশি সমাদর করতে। এ গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে কেউ যাতে বাধাগ্রস্ত করতে না পারে সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। এ নির্বাচনের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, কিছু কিছু শক্তি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তাদের জন্য কোনো জায়গা দেওয়া হবে না। গণতন্ত্রের বিজয়ের পথে আমরা চলছি, দেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। এ পথে যারা বাধাগ্রস্ত করবে আগামী দিনে দেশের মানুষ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করবে।
শেখ হাসিনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা রাজনীতি করবে, ভোটে যাবে না। তারা রাজনীতি করবে, গণতন্ত্র বিশ্বাস করবে না। তারা রাজনীতি করবে তাদের মতো করে সমস্যা সমাধানের জন্য। জনগণকে বাইরে রেখে, যেটা শেখ হাসিনা বারবার করেছে। দেশের মানুষকে বাইরে রেখে সে তার মতো করে দেশ চালিয়েছে। আবারও কিছু কিছু শক্তি নেমেছে দেশের মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে জনগণকে বাইরে রেখে তাদের মতো করে সিদ্ধান্ত নিয়ে, তাদের মতো করে দেশ চালাতে। এটা বাংলাদেশের মানুষ কোনো দিনও গ্রহণ করবে না।