দেড় মাস পর পাওয়া গেল সেই ২৮৪ মহিষের মালিক
প্রকাশ: ২৩ আগস্ট, ২০২৫

দেড় মাসের বেশি সময় পর চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের কালীরচর থেকে প্রশাসনের জিম্মায় নেওয়া সেই ২৮৪ মহিষের মালিকানা শনাক্ত হয়েছে। এসব মহিষ ১৪ জন ব্যক্তির। তাঁরা উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উড়িরচরের বাসিন্দা। সেখান থেকে মহিষগুলো বাল্কহেডে (নৌযান) করে কালীরচরে চরাতে নিয়ে আসা হয়েছিল।
দীর্ঘ সময় ধরে তদন্তের পর উপজেলা প্রশাসন এসব বিষয় নিশ্চিত হয়েছে। প্রশাসনের জিম্মায় থাকা মহিষ যাতে মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া যায় সে লক্ষ্যে গত বৃহস্পতিবার গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের একটি উপকমিটি। এই উপকমিটি আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে প্রকৃত মালিকদের কাছে মহিষগুলো হস্তান্তর করবে। কমিটি গঠনের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মংচিংনু মারমা নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ৪ জুলাই চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের কালীরচরে এসব মহিষ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। ওই দিন বেলা গড়াতেই মহিষগুলোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। কারা এসব মহিষের মালিক—এ নিয়ে কৌতূহল দেখা দেয় দ্বীপের বাসিন্দাদের মধ্যে। ছড়াতে শুরু করে নানা গুজবও।
এ পরিস্থিতিতে ৯ জুলাই এসব মহিষের মালিক কে, তা নির্ধারণ করতে তিন সদস্যের কমিটি করে উপজেলা প্রশাসন। এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আলী আজমকে। কমিটি মহিষের প্রকৃত মালিকদের কাছে মালিকানা–সংক্রান্ত কাগজপত্র তলব করেছে।
বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত দুটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দীর্ঘ যাচাই-বাছাই শেষে তদন্ত কমিটি ১৪ ব্যক্তিকে মালিক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। সুষ্ঠুভাবে মহিষ হস্তান্তরের জন্য গঠিত হয়েছে তিন সদস্যের উপকমিটি। কমিটির আহ্বায়ক সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম সফিকুল আলম চৌধুরী। নৌবাহিনীর স্থানীয় কন্টিনজেন্ট কমান্ডারের একজন প্রতিনিধি ও উপজেলা আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তা স্বপন কুমার পাল সদস্য হিসেবে রয়েছেন। মালিকদের উপকমিটির তিন সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়।
মহিষের মালিকদের একজন আবদুর রহিম। তিনি বলেন, অন্য মালিকদের মধ্যে চারজন রাখাল, অন্যরা তাঁর স্বজন ও প্রতিবেশী। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা একই বাথানে মহিষ লালনপালন করে আসছেন। তাঁরা একসঙ্গে মহিষগুলো কালীরচরে চরাতে নিয়ে এসেছিলেন। আরেক মালিক মো. রিয়াদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা টিকা কার্ড ও মহিষের দাগ-বর্ণের লিখিত বিবরণ জমা দিয়েছি। এর বাইরে আর কোনো কাগজপত্র থাকে না মহিষের।’
ইউএনও মংচিংনু মারমা বলেন, ভবিষ্যতে সন্দ্বীপের কোনো চারণভূমিতে পশু স্থানান্তর করলে অবশ্যই প্রশাসনকে আগে থেকে জানাতে হবে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা না হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।