চবিকে শতভাগ আবাসিক করার দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট, ২০২৫

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শতভাগ আবাসন নিশ্চিত করার দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার বেলা আড়াইটার দিকে ভবনটির সব ফটকে তাঁরা তালা ঝুলিয়ে দেন। এ ভবনে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের কার্যালয় রয়েছে। উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার ভবনের ভেতরেই রয়েছেন।
এর আগে একই দাবিতে বেলা দেড়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়। এর এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ কিছু শিক্ষার্থী প্রশাসনিক ভবনে তালা দেন। কর্মসূচিতে শতভাগ আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করতে না পারলে বিকল্প হিসেবে আবাসন ভাতা নিশ্চিতের দাবি তোলেন শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীদের ‘আবাসন ভাতা দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘আবাসন আমার অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’, ‘হয় আবাসন দেন, না হয় আবাসন ভাতা দেন’, ‘হলের নামে বৈষম্য, মানি না মানব না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সমাবেশে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রবিউল হাসান বলেন, ‘আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয় শহর থেকে অনেক দূরে। যার কারণে অনেক শিক্ষার্থীকে শাটল ট্রেনের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে আসতে হয়। অনেক সময় দেখা যায় ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়া কিংবা অন্য কোনো সমস্যার কারণে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসতে পারেন না। তাই আমাদের অনেক দিনের দাবি শিক্ষার্থীদের জন্য শতভাগ আবাসন নিশ্চিত করা। সেটা নিশ্চিত করার আগপর্যন্ত সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসন ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে।’
ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী কাজী আসমানি বিনতে তাজবী বলেন, ‘আমি কয়েকটা হলে আবেদন করেছি বিভাগের চেয়ারম্যান, ডিনদের সুপারিশসহ। আমাদের মতো অনেকেই আবেদন করেছেন, কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না। হলের আসন বরাদ্দে অনিয়ম হচ্ছে।’
আজ বেলা সাড়ে তিনটায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ফটকগুলোতে দেওয়া তালা খোলা হয়নি। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরাও প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান করছেন। কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের একজন, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তাওসিফ ইয়াসির বলেন, ‘আমরা অনেকবার প্রশাসনের কাছে আবাসনসংকট নিরসনের জন্য দাবি জানিয়েছি, স্মারকলিপিও দিয়েছি। এরপরও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। যার কারণে আজ প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছি। আবাসনসংকট নিরসনের বিষয়ে সুস্পষ্ট পদক্ষেপ না জানানো পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনে তালা থাকবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. সাইফুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আমাদের দাবি দিয়েছে, কিন্তু আমরা পূরণ করিনি, এমনটা কোনো সময় হয়নি। তারা প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছে আমাদের কোনো আলটিমেটাম না দিয়েই। আমি এখন প্রশাসনিক ভবনেই উপস্থিত কিন্তু ওরা আমাদের কাছে লিখিত কোনো দাবি নিয়ে না এসে প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছে। এভাবে তালা দেওয়া যথার্থ মনে হয়নি।’
শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে বক্তব্য জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. ইয়াহইয়া আখতার এবং সহ-উপাচার্য মো. কামাল উদ্দিনের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তাঁরা কল রিসিভ করেননি।