চাক্তাইয়ের ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন ভোগান্তি ভাঙা সড়ক
প্রকাশ: ৯ আগস্ট, ২০২৫

কোথাও সড়কের ইট উঠে গেছে, কোথাও আবার সড়কজুড়ে কাদা। এর মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকা যানবাহনে পণ্যবোঝাই করা হচ্ছে। জরাজীর্ণ সড়ক ও কাদার কারণে পণ্য পরিবহন করতে গিয়ে নানা ধরনের ভোগান্তিতে পড়ছেন পণ্য ওঠানামায় নিয়োজিত শ্রমিকেরা। চট্টগ্রাম নগরের অন্যতম পাইকারি আড়ত চাক্তাই এলাকার চিত্র এটি। ভাঙা সড়কের কারণে দুর্ভোগে রয়েছেন চাক্তাইয়ের ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, গত সাত-আট মাস ধরেই চাক্তাই এলাকার অন্তত পাঁচটি সড়ক বেহাল। শুষ্ক মৌসুমে কোনোরকমে চলাচল করা গেলেও বর্ষায় এসব সড়কে ভোগান্তি বেড়েছে। সড়কজুড়ে বৃষ্টির কারণে কাদা জমে থাকে। এতে পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। ছোট যানবাহন ও ঠেলাগাড়ি প্রায়ই সড়কে কাত হয়ে যায়।
প্রায় সাত-আট মাস ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা, বিশেষ করে মধ্যম চাক্তাই ও রাজাখালী সড়কের অবস্থা বেশি খারাপ। পাশের মকবুল সওদাগর সড়ক ও সোবহান সওদাগর সড়ক ভাঙা ও কাদায় ভরা। বাজারে অন্তত পাঁচটি সড়ক এমন। এগুলো দিয়ে খাতুনগঞ্জের যানবাহন চলাচল করে।আহসান খালেদ, যুগ্ম সম্পাদক, চাক্তাই শিল্প ও ব্যবসায়ী সমিতি
দেশে ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে আসা ট্রাক, মিনি ট্রাক ও ছোট-বড় যানবাহন চট্টগ্রাম জেল রোড ও বক্সিরহাট সড়ক দিয়ে খাতুনগঞ্জে প্রবেশ করে। এরপর সেগুলো খাতুনগঞ্জ থেকে চাক্তাই এলাকার রাজাখালী সড়ক, সোবহান সওদাগর সড়ক, মকবুল সওদাগর সড়ক এবং চাক্তাই নতুন ও পুরাতন সড়ক হয়ে মূল সড়কে আসে। চাক্তাই এলাকায় এসব সড়ক খুবই বেহাল।
সম্প্রতি সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মধ্যম চাক্তাই এলাকায় ফইল্লার পুল (প্রথম পুল) থেকে মধ্যম চাক্তাই পুল পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে ইট ও পিচ উঠে গেছে। মকবুল সওদাগর সড়ক ও সোবহান সওদাগর সড়কের এক পাশে কাদা ও ভাঙা। রাজাখালী সড়কের পুরোটিতেই কাদা ছড়িয়ে রয়েছে। সেখানে যানবাহন চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে। এসব সড়কের পাশেই চালের অধিকাংশ আড়ত ও দোকান। দোকান ও আড়তের সামনেও কাদা জমে থাকতে দেখা গেছে।
চাক্তাই শিল্প ও ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক আহসান খালেদ বলেন, সাত-আট মাস ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা, বিশেষ করে মধ্যম চাক্তাই ও রাজাখালী সড়কের অবস্থা বেশি খারাপ। পাশের মকবুল সওদাগর সড়ক ও সোবহান সওদাগর সড়ক ভাঙা ও কাদায় ভরা। বাজারে অন্তত পাঁচটি সড়ক এমন। এগুলো দিয়ে খাতুনগঞ্জের যানবাহন চলাচল করে।
ব্যবসায়ী সমিতিগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চাক্তাই খালকেন্দ্রিক গড়ে ওঠা পাইকারি এই বাজারে বর্তমানে চাল, ডাল, মসলাজাতীয় পণ্যের আড়ত রয়েছে। খাতুনগঞ্জ ও আছদগঞ্জ ছাড়া শুধু চাক্তাই এলাকায় দোকান সংখ্যা আনুমানিক তিন হাজারের বেশি। এসব দোকানে এবং খাতুনগঞ্জ অংশে পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য পাঁচটি সড়কে অন্তত দুই হাজারের কাছাকাছি ছোট-বড় যানবাহন প্রতিদিন চলাচল করে। সব মিলিয়ে অন্তত এক থেকে দেড় কিলোমিটার সড়ক খানাখন্দে ভরা।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতি, চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতি, চাক্তাই শিল্প ও ব্যবসায়ী সমিতি এবং চট্টগ্রাম চাল ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা জানান, সড়ক বেহালের কারণে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বৃষ্টিতে পণ্য ওঠা-নামার খরচ বাড়তি দিতে হয়। শ্রমিকেরাও কাদায় ভরা সড়কে পণ্য নিয়ে যেতে চান না। সড়কেও এ অবস্থার কারণে চালকেরা বাড়তি ভাড়া দাবি করেন। অধিকাংশ গাড়ি বাজারে ঢুকতে চায় না।
বেহাল সড়কের কারণে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বৃষ্টিতে পণ্য ওঠা-নামার খরচ বাড়তি দিতে হয়। শ্রমিকেরাও কাদায় ভরা সড়কে পণ্য নিয়ে যেতে চান না। সড়কেও এ অবস্থার কারণে চালকেরা বাড়তি ভাড়া দাবি করেন। অধিকাংশ গাড়ি বাজারে ঢুকতে চায় না।
চাক্তাই শিল্প ও ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি ওমর আজম বলেন, আগের চাক্তাইয়ের সে ঐতিহ্য নেই। নানা সমস্যায় জর্জরিত খাতুনগঞ্জ, চাক্তাই ও আছদগঞ্জ। এর মধ্যে যোগ হয়েছে ভাঙা সড়কের ভোগান্তি। এখন আর কেউ ব্যবসায় আগ্রহ পাচ্ছে না। বাজারে রাজনৈতিক প্রভাব, চাঁদাবাজি, পরিবহন খরচ বৃদ্ধির কারণে ভোগান্তিতে অধিকাংশ ব্যবসায়ী।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলীকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। যেসব স্থানে কাজ হয়নি, সেখানে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।