Advertisement

স্পেনের ভিসার নামে সৌদিতে ফেলে রাখে, উলটো মামলায় হয়রানি

যুগান্তর

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ছবি: যুগান্তর
ছবি: যুগান্তর

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়নের বিলঘর গ্রামে ইউরোপের স্পেনে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে সৌদি আরবে নিয়ে মরুভূমিতে ফেলে রাখে স্থানীয় আদম ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন ও তার আত্মীয়স্বজনরা।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, প্রতারণার বিষয়টি জানাতে চাইলে উলটে তাদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এ অভিযোগে বিলঘর জারু মার্কেট এলাকায় এক সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গ্রামের বাসিন্দা আইয়ুব সরকার।

আইয়ুব সরকারের অভিযোগ, গত বছরের আগস্ট মাসে একই গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে তারেক মিয়াকে ইউরোপে পাঠানোর জন্য বিল্লাল হোসেনের কাছে ২৭ লাখ টাকা দেওয়া হয়। প্রথমে ভুয়া ভিসা দিয়ে ইউরোপের স্পেনে পাঠানোর চেষ্টা করা হলেও ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফিরে আসে। পরে বিল্লাল জানায়, সরকার পরিবর্তনের কারণে সমস্যায় পড়েছে। এরপর ইউরোপে পাঠানোর অজুহাতে তারেককে সৌদি আরবে নিয়ে যাওয়া হয়।

দীর্ঘদিন কোনো খোঁজখবর না পাওয়ার পর জানা গেছে, তাকে সৌদি মরুভূমিতে ফেলে রাখা হয়েছে। বিষয়টি জানতে চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে জামাল মিয়া, আইয়ুব সরকারসহ একাধিক পরিবারের বিরুদ্ধে ভাঙচুর, চাঁদাবাজি ও নানা অভিযোগে একাধিক মিথ্যা মামলা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আইয়ুব সরকার আরও বলেন, তিনি বিল্লাল হোসেনের কাছ থেকে একটি জমি ক্রয় করেছিলেন; কিন্তু নির্ধারিত সময়ে জমির রেজিস্ট্রি না করে উল্টো তার কাছ থেকে সাক্ষ্য না পাওয়ায় ওই জমি দখল রাখতে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম ভূইয়া, মো. কবির হোসেন, আবু জামাল, হুমায়ুন কবির, মজিবুর রহমান জাকিরসহ কয়েক শতাধিক এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।

তারা অভিযোগ করেন, আবদুল মান্নান ও তার ভাইয়েরা নিজেরাই নিজেদের ঘরবাড়ি ভেঙে সাজানো মামলা করছে। প্রকৃত ভুক্তভোগীদের হয়রানি না করে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

বক্তারা বলেন, সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রতারণা ও মানবপাচারের মতো অপরাধ করে তারা পার পেয়ে যাচ্ছে। তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত তদন্ত করে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানান তারা।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে আবদুল মান্নানের আপন ভাই সুরুজ মিয়া বলেন, তার ভাই নিজেরাই বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করে নিজেরাই মামলা করেছে।

সংবাদ সম্মেলন শেষে এলাকাবাসী বিলঘর জারু মার্কেট থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় মার্কেটে এসে শেষ হয়। সেখানে বিল্লাল হোসেন ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।

বিল্লাল হোসেন বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করায় তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় মান্নান মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

কসবা থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি আমাদের কানে এসেছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে যা পাওয়া যাবে, এর ভিত্তিতেই পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Lading . . .