Advertisement

আসন পুনর্বিন্যাসে সব হিসাব পালটে গেছে

যুগান্তর

প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

24obnd

নির্বাচন কমিশনের আসন পুনর্বিন্যাসের ফলে কুমিল্লা-২ (হোমনা-তিতাস) আসনে বিএনপির সব হিসাব পালটে গেছে। অতি সম্প্রতি পুনর্বিন্যাসের গেজেট প্রকাশিত হওয়ার পর এমপি প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়। এই আসন থেকে মেঘনা উপজেলা বাদ পড়ায় নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি স্থানীয় বিএনপি সাবেক মন্ত্রী এম কে আনোয়ারের মৃত্যুর পর এই আসনে জোরেসোরে কাজ করছিল বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মেঘনা উপজেলার বাসিন্দা অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া। তার সাংগঠনিক ভিতও তৈরি হয় এই উপজেলাকে কেন্দ্র করে। কিন্তু নতুন বন্দোবস্তে মেঘনা উপজেলা কুমিল্লা-১ আসনে যুক্ত হওয়ায় বিপাকে পড়েন সেলিম ভূঁইয়া। এদিকে কমিল্লা-১ আসনে দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন। স্থানীয় না হওয়ায় কমিল্লা-২ আসনে সেলিম ভূঁইয়ার অবস্থান দুর্বল হয়ে গেছে। তিনি এখন আদালতে দৌড়ঝাঁপ করছেন। এম কে আনোয়ারের মেয়েসহ অনেকেই প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছেন। তবে শেষ পর্যন্ত কুমিল্লা-২ আসনে বিএনপি থেকে কে মনোনয়ন পাচ্ছে তা নিয়ে চলছে নতুন সমীকরণ।

এ আসনে বিএনপির প্রয়াত নেতা সাবেক মন্ত্রী এম কে আনোয়ারের শূন্যতা পূরণ করবেন কে? এই আসন থেকে বারবার নির্বাচিত হয়েছেন এম কে আনোয়ার। অসংখ্য অনুসারী রেখে গেছেন তিনি। সম্প্রতি তার মেয়ে খাদিজা আনোয়ারের কথা শোনা যাচ্ছে। এখানে প্রবীণ কোনো প্রার্থী না থাকলেও নতুন মনোনয়নপ্রত্যাশীর দীর্ঘ তালিকা দেখা যাচ্ছে। এই আসনে দৃশ্যত সেলিম ভূঁইয়া ঝরে পড়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, কুমিল্লা-২ আসনে হোমনার সঙ্গে তিতাস উপজেলাকে যুক্ত করা হয়েছে। আর এতেই বদলে গেছে রাজনৈতিক অনেক হিসাব। মেঘনা উপজেলা বাদ পড়ায় সেলিম ভূঁইয়াকে বাদ রেখেই চলতে সমীকরণ। মনোনয়ন পেতে লবিং তদবিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন একাধিক প্রার্থী। মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় রয়েছেন তিতাস উপজেলার বাসিন্দা কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. আক্তারুজ্জামান সরকার, বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক এপিএস আব্দুল মতিন। হোমনা থেকে এম কে আনোয়ারের কন্যা খাদিজা আনোয়ার রিনা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুল আজিজ মোল্লা এবং যুক্তরাজ্য জিয়া পরিষদের সহসভাপতি মনোয়ার সরকার। নতুন সমীকরণে এসব প্রার্থীদের মধ্যে কে বাগিয়ে নিতে পারেন বিএনপির মনোনয়ন-এমন আলোচনা চলছে। বিএনপির ভোট ব্যাংকে এবার ধানের শীষ প্রতীক যিনি পাবেন তিনিই এমপি নির্বাচিত হবেন এমনটা বলা যায় অনায়াসে। যার ফলে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তুমুল লবিং এবং দৌড়ঝাঁপের খবর শোনা যাচ্ছে। প্রয়াত সাবেক মন্ত্রী এম কে আনোয়ার কন্যা খাদিজা আনোয়ার রিনা বলেন, বাবার শূন্যতা পূরণ করার মতো কেউ নেই এখানে। তারপরও এলাকার মানুষ তার কন্যা হিসাবে আমাকে চাচ্ছে। আমি দল এবং পরিবারের সঙ্গে আলোচনা কারে সিদ্ধান্ত নিব। কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. আক্তারুজ্জামান সরকার বলেন, আমি দীর্ঘ ১২ বছর কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। গত ৩ বছর যাবৎ জেলার আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছি। দীর্ঘ এ সময়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজপথে থেকে আন্দোলন সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছি। জেল জুলুম অত্যাচারের শিকার হয়েছি। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের পাশে থেকে তাদের দুঃখ বেদনার ভাগ নিয়েছি। আগামী নির্বাচনে কুমিল্লা-২ আসন থেকে মনোনয়ন চাইব। দল আমার এই ত্যাগের মূল্যায়ন করবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে আশাবাদী।

বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক এপিএস আব্দুল মতিন বলেন, আমি এই জনপদের অনেক উন্নয়নের অংশীদার। আমার হাত দিয়ে এই কুমিল্লা অঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের পাশে থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে জোরালো ভূমিকা পালন করেছি। আগামী নির্বাচনে মনোনয়নের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।

সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান মোল্লা বলেন, হোমনার বিএনপি ঐক্যবদ্ধভাবে আমাকে চাচ্ছে। উপজেলা চেয়ারম্যান হিসাবে এই জনপদের উন্নয়নে অনেক কাজ করেছি। তাই আগামী নির্বাচনে আমার কাজের মূল্যায়ন হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। যুক্তরাজ্য জিয়া পরিষদের সহসভাপতি মনোয়ার সরকার বলেন, ছাত্রদলের মাধ্যমে বিএনপির রাজনীতিতে আমার পদার্পণ। দেশ-বিদেশে গত ১৭ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছি। ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী নেতাকর্মীদের অনেক সহযোগিতা করেছি। এলাকার অবহেলিত জনগোষ্ঠীর কল্যাণে কাজ করছি। এলাকায় আমার বিপুল জনসমর্থন রয়েছে। আশা করি, আগামী নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন আমার ভাগ্যেই জুটবে।

আরও পড়ুন

Lading . . .