আইআইইউসিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা শিক্ষার্থীদের
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (আইআইইউসি) প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া তাদের ১৫ দফা দাবি নিয়ে সমঝোতা না হওয়ায় ক্যাম্পাসে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করেছেন। যদিও কর্তৃপক্ষ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানের জন্য একটি রোডম্যাপ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রোডম্যাপ দিলে মনঃপূত না হওয়ার কারণে রাত ৮টার দিকে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোস্তফা মুনির চৌধুরী কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, অধিকাংশ শিক্ষার্থী আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে রোডম্যাপ দিলে দাবি মেনে নিয়ে ফিরে গেলেও কিছু কিছু শিক্ষার্থী রোডম্যাপ মেনে না নিয়ে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেনে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ধারণা, রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার জন্য কিছু শিক্ষার্থী রোডম্যাপ দেওয়া সত্ত্বেও তা মেনে নেয়নি। এদিকে শিক্ষার্থীরা বলছেন, রোডম্যাপ শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী না হওয়ার কারণে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৫ দফা দাবি নিয়ে মঙ্গলবার ছিল আন্দোলনের তৃতীয় দিন। রোববার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা ১৫টি দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলেন। তাদের আন্দোলনের উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হলো—লেট ফি বাতিল, প্রয়োজনীয় ল্যাব স্থাপন, হল রুম থেকে ক্লাসরুম সরিয়ে নেওয়া, সব সেমিস্টারে ইমপ্রুভমেন্টের সুযোগ দেওয়া, পরিবহনের আধুনিকায়ন করা ও মেডিকেল সংস্কার করা।
এ ছাড়া আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সোমবার প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও ও অবরুদ্ধ করে রাখার পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন অনুষদের বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করেন। সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে মঙ্গলবার রোডম্যাপ ঘোষণা করার কথা ছিল।
কিন্তু দিনভর আলোচনায় প্রশাসন তাদের দাবির একটি রোডম্যাপ তুলে ধরলেও তাতে অসংগতি রয়েছে। কোনো দাবি বাস্তবায়নে চার মাস, কোনোটা আবার চার বছর সময় নেওয়া হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের আস্থাহীনতা তৈরি হয়। ফলে তারা রোডম্যাপ প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরে রাত ৮টার দিকে শিক্ষকরা প্রশাসনিক ভবনে অবরুদ্ধ হন এবং শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যান। বুধবার থেকে ক্যাম্পাসে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি চলবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোস্তফা মুনির চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো বাস্তবায়নে বিভিন্ন মেয়াদের সময়ের প্রয়োজন। আমরা রোডম্যাপ ঘোষণা করার পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ মেনে নিলেও কিছু শিক্ষার্থী তা মেনে নেয়নি। আমার ধারণা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কিছু ছাত্র রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য বাহিরের কিছু অছাত্র নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল করার জন্য চেষ্টা করছে। রোডম্যাপ দেওয়ার পরও এভাবে যদি আন্দোলন চলতে থাকে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।