ছয় মাসেও আকাশের মরদেহ আনতে পারেনি পরিবার
প্রকাশ: ৭ আগস্ট, ২০২৫

কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার আন্দিকোট ইউনিয়নের সোনারামপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে নুর মোহাম্মদ আকাশ। অভাবের সংসারে বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে সৌদি আরবে পাড়ি জমান তিনি।
সৌদি আরবের জিয়াদ এলাকায় একটি পেট্রল পাম্পে কাজ পায় আকাশ। কিন্তু চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সেই পেট্রোল পাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে আগুনে মারা যান আকাশ। যে বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে আকাশ অল্প বয়সে প্রবাসে পাড়ি দিয়েছিল তাদের দুঃখের অথৈ সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন তিনি।
দুর্ঘটনায় আকাশের মৃত্যুর ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও লাশটি দেশে আনতে পারেনি পরিবার। তার লাশ সৌদি আরবের জিয়াদ এলাকায় একটি হাসপাতালে রয়েছে বলে জানিয়েছে পরিবার।
আকাশের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, মা সাহিদা বেগম ছেলের ছবি ও কাপড়চোপড় হাতে নিয়ে বিলাপ করেছেন। তার আহাজারি যেন থামছে না। আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠছে আকাশ। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষাও খুঁজে পাচ্ছে না প্রতিবেশী ও স্বজনরা।
মা সাহিদা বেগম বলেন, আমার আকাশ আমার কষ্ট দূর করতে বিদেশ গেছে। আমার কলিজা আমারে রাইখা চইলা গেছে। আপনারা আমার কলিজার লাশটা আইনা দেন, আমি তারে বুকে জড়াইয়া ধইরা মাটি আমার বুকটা শান্তি করমু।
আকাশের বাবা রফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, ৯ মাস আগে আমার ছেলেটা বিদেশ গেছে। ৩ মাসের মধ্যেই সে মারা গেছে। ৬ মাস হয়ে গেল লাশটা আনতে পারি নাই। সরকারের কাছে দাবি, আমার আকাশের লাশটা দেশে আনার ব্যবস্থা করেন।
আন্দিকোট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নোয়াব আলী সরকার বলেন, ছয় মাস আগে সৌদি আরবে পেট্রল পাম্পে আগুন লেগে আকাশ মারা যায়। এখনো তারা লাশটি দেশে আনতে পারে নাই৷ লাশ আনার মতো সামর্থ্য তাদের নাই। তাই সরকারি খরচে তার মরদেহটি দেশে আনার ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে অনুরোধ।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুর রহমান বলেন, ঘটনাটি আমাকে আগে জানানো হয়নি। আজকে জানলাম, পরিবারের সদস্যরা লিখিত আবেদন করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার হবে।