Advertisement

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হলের ক্যানটিনে পচা ডিম ও বাসি খিচুড়ি

প্রথম আলো

প্রকাশ: ৯ আগস্ট, ২০২৫

অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন করায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ক্যানটিনে তালা দেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশন সেটি বন্ধ ঘোষণা করেন। আজ দুপুরেছবি: প্রথম আলো
অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন করায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ক্যানটিনে তালা দেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশন সেটি বন্ধ ঘোষণা করেন। আজ দুপুরেছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাওল হল ও এ এফ রহমান হলের ক্যানটিনে পচা ও বাসি খাবার বিক্রির অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। এই অভিযোগে আজ শনিবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা ওই ক্যানটিনে তালা লাগিয়ে দেন। একই অভিযোগে ক্যানটিনের পাশের আরেকটি খাবারের দোকানও বন্ধ করে দেন শিক্ষার্থীরা।

বেলা আড়াইটার দিকে ক্যানটিনে তালা দেওয়ার পর সেখানে এ এফ রহমান হলের আবাসিক শিক্ষক মোরশেদুল হক, সহকারী প্রক্টর কোরবান আলী, নুরুল হামিদ ক্যানটিন ও খাবারের দোকান পরিদর্শন করেন। এ সময় ক্যানটিনের ফ্রিজে বাসি খাবার দেখতে পান তাঁরা। এরপর প্রক্টরিয়াল বডি ওই ক্যানটিন ও পাশের খাবারের দোকানটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। শিক্ষার্থীদের দুই হলের ডাইনিংয়ে গিয়ে রাতে খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন তাঁরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা প্রক্টরিয়াল বডির কাছে ১৩টি দাবি তুলে ধরেন।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এ সময় এ এফ রহমান হলের ডাইনিংয়ে আবাসিক শিক্ষক মোরশেদুল হককে নিয়ে অভিযান চালান। অভিযানে ডাইনিংয়ের স্টোররুম ও ফ্রিজ থেকে বেশ কিছু পচা ডিম উদ্ধার করেন তাঁরা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পাশাপাশি অবস্থিত আলাওল ও এ এফ রহমান হলের একটিই যৌথ ক্যানটিন রয়েছে। দুই হল ও হলের বাইরে থাকা শিক্ষার্থীরা সেখানে খাবার খান। দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ওই ক্যানটিন ও আশপাশের দোকানের খাবারের মান নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে।

রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ক্যানটিনের কর্মচারীদের পরিচ্ছন্নতার অভাব রয়েছে। পচা ও বাসি খাবার পরিবেশন করা হয়। আজ সকালেও তাঁকে নোংরা খাবার পরিবেশন করা হয়েছে। তিনি প্রতিবাদ করলে ক্যানটিনের লোকজন বলেন, ‘খেলে খান, না খেলে চলে যান।’

এরপর বেলা আড়াইটার দিকে আলাওল ও এ এফ রহমান হলের শিক্ষার্থীরা এসে ক্যানটিন ও পাশের খাবারের দোকানে তালা দেন।

রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আবদুল আউয়াল বলেন, ‘দুই মাস আগেও এই ক্যানটিনের খাবার খেয়ে আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। আজ আবারও পচা–বাসি খাবার দেওয়া হয়েছে এক শিক্ষার্থীকে। তখন আমরা ক্ষুব্ধ হয়ে ক্যানটিনে তালা দিই।’

তবে ক্যানটিনের ম্যানেজার হেলাল উদ্দিন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার কথা অস্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, ফ্রিজে পাওয়া পচা খাবার পরশুর অনুষ্ঠানের বেঁচে যাওয়া। ওই খাবার ফেলে দেওয়ার জন্য রাখা হয়েছিল।

পচা ডিম পাওয়া যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এ এফ রহমান হলের ডাইনিংয়ের ব্যবস্থাপক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘হলে যে পচা ডিম পাওয়া গেছে, সেগুলো ফেরত দেওয়ার জন্য রাখা হয়েছিল। একই ফ্রিজে পচা ও ভালো ডিম ছিল, তবে আলাদা জায়গায় রাখা হয়েছিল।’

জানতে চাইলে এ এফ রহমান হলের আবাসিক শিক্ষক মোরশেদুল হক বলেন, ‘এ ব্যাপারে প্রাধ্যক্ষ যেন পদক্ষেপ নেন, সে বিষয়ে কথা বলব। কোনো পদক্ষেপ না নিলে আমি দায়িত্ব ছেড়ে দেব। আর খাবারের দোকান ও ক্যানটিনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’

শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা হল কর্তৃপক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলব। এই দোকান ও ক্যানটিন বন্ধ থাকবে।’

Lading . . .