Advertisement

হাঁটুপানিতে টইটুম্বুর মাঠ, দুর্ভোগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

কালবেলা

প্রকাশ: ৭ আগস্ট, ২০২৫

বিদ্যালয়ের মাঠে থইথই করছে পানি। ছবি : কালবেলা
বিদ্যালয়ের মাঠে থইথই করছে পানি। ছবি : কালবেলা

পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় ভারি বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার সাহেবাবাদ লতিফা ইসমাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের মাঠ। জলাবদ্ধতার কারণে মাঠে থইথই করছে পানি। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ও খেলাধুলা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার সাহেবাবাদ ইউনিয়নের সাহেবাবাদ লতিফা ইসমাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের ব্যবহৃত মাঠ পানিতে টইটম্বুর। প্রায় হাঁটু পর্যন্ত পানি জমেছে। ভারি বৃষ্টিতে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বিদ্যালয়ঘেঁষা পুকুরের পানি পরিপূর্ণ হয়ে মাঠ ডুবে গেছে। এতে পুকুরের মাছ এখন সাঁতার কাটছে মাঠে। শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটক দিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারছে না। বন্ধ রয়েছে অ্যাসেম্বলি, শরীরচর্চা ও খেলাধুলা। এ জলাবদ্ধতার কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় কিছুদিন ধরে চলমান বৃষ্টির পানিতে বিদ্যালয়ের পাশের পুকুর পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে মাঠ পানিতে তলিয়ে গেছে। যার ফলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে আসা-যাওয়া করতে অসুবিধা হচ্ছে। পানি ভরা পিচ্ছিল মাঠ দিয়ে যাতায়াতের সময় পা পিছলে পড়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এতে ইউনিফর্ম ও বই-খাতা ভিজে যাচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়ের ব্যবহৃত মাঠে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শুধু নয় আশপাশের ছেলেমেয়েরাও খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিদ্যালয় ছুটির পর আশপাশের ছেলেমেয়েরা এখানে খেলাধুলা করে। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানি জমে বিদ্যালয় সংলগ্ন পুকুরের পানি বেড়ে গিয়ে এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ সমস্যা নিরসনে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ তোলেন স্থানীয়রা।

মুনতাহা হোসাইন মিরা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, বৃষ্টির কারণে বিদ্যালয় মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে আমরা দুর্ভোগে পড়েছি। মাঠে পানি থাকার কারণে আমরা আমাদের নিয়মিত খেলাধুলা করতে পারছি না। টিফিনের সময়ও ক্লাসে বসে থাকতে হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রিয়া বলেন, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় পাশের পুকুরের পানি বেড়ে গিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে প্রবেশ করেছে। এতে আমাদের যাতায়াতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। মাঠে পানি থাকায় আমরা খেলাধুলা করতে পারছি না।

সাহেবাবাদ লতিফা ইসমাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জসিম উদ্দিন বলেন, বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যালয়সংলগ্ন পুকুর পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে পানি প্রবেশ করে এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পানি জমার কারণে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলায় ব্যাঘাত ঘটছে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা প্রধান ফটক দিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারছে না, পকেট গেট দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

সাহেবাবাদ লতিফা ইসমাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আতিকুর রহমান বলেন, মাঠটি মূলত সাহেবাবাদ ডিগ্রি কলেজের। তবে এ মাঠটি মূলত আমাদের বিদ্যালয়ের প্রয়োজনেই ব্যবহৃত হয়। জলাবদ্ধতার বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। আমরা বিষয়টি নিয়ে কমিটি ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের সঙ্গেও কথা বলেছি। যদি কোনো বরাদ্দ না পাই তবে নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে জলাবদ্ধতার স্থায়ী নিরসনে পদক্ষেপ নেব।

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ শহীদুল করিম বলেন, বৃষ্টির কারণে বিদ্যালয়ঘেঁষা পুকুরের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিদ্যালয়ের মাঠ জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। আমি ওই বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে মাঠ থেকে পানি সরানোর ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছিলাম। তবে পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে। কমিটির সঙ্গে মিটিং করে সাময়িকভাবে বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে। পরে এ সমস্যা নিরসনে স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Lading . . .