Advertisement

মাসহ কুবি শিক্ষার্থীকে হত্যা: বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য

যুগান্তর

প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

24obnd

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন রিনথি (২৩) ও তার মা তাহমিনা বেগম ফাতেমা (৫২) হত্যার ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছে কুমিল্লা জেলা পুলিশ। আলোচিত এই হত্যাকানণ্ডের মূল আসামি মোবারক হোসেনকে (২৯) গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় পালানোর প্রস্তুতিকালে তাকে কুমিল্লার বাগিচাগাঁও এলাকা থেকে আটক করা হয়।

মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লা জেলা পুলিশের মিডিয়া শাখার একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

আটক মোবারক হোসেন (২৯) কুমিল্লা দেবিদ্বার উপজেলার কাবিলাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল জলিল মিয়ার ছেলে। সে কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাও এলাকায় বসবাস করত।

কুমিল্লা জেলা পুলিশের মিডিয়ার শাখার বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, নিহত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন রিনথি (২৩) ও তার মা তাহমিনা বেগম ফাতেমা (৫২) কালীয়াজুড়ি এলাকায় ভাড়া বাসায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। গত ৮ সেপ্টেম্বর সকালে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত সুমাইয়া আফরিনের বড় ভাই তাজুল ইসলাম জানান, ‘সেদিন রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে বাসায় এসে দেখি মূল দরজা সামান্য খোলা। ভেতরে ঢুকে দেখি, মায়ের ঘরের লাইট নিভানো ছিল। ভেবেছিলাম মা আর বোন ঘুমাচ্ছে, তাই ডাকিনি। কিছুক্ষণ পর আমার ছোট ভাই সাইফুল বাসায় ফিরে বোনের ঘরে গিয়ে বোনকে ডাকে, কোনো সাড়া না পেয়ে হাত ধরে দেখে ঠান্ডা। এরপর মায়ের কাছে গিয়ে তাকেও ডাকতে থাকে, কোনো সাড়া দেয় না। মায়ের গায়ের চাদর সরিয়ে দেখি মুখ ফুলে গেছে, রক্ত বের হচ্ছে। তখনই বুঝি মা আর বোন আর বেঁচে নেই।’

তাজুল জানান, পরে তারা ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভুক্তভোগী সুমাইয়া আফরিনকে কথিত জ্বীনে ধরায় বাবুস সালাম জমিরিয়া মাদরাসায় ঝাড়ফুঁক করাতে যেতেন। সেখানেই আসামি মোবারকের সঙ্গে পরিচয় হয়। ঝাড়ফুঁকের নামে তাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন মোবারক। ঘটনার দিন দুপুরে রিনথিকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে তা দেখে ফেলেন তাহমিনা বেগম। বাধা দিলে প্রথমে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মোবারক। পরে রিনথিও প্রতিরোধ করলে তাকেও হত্যা করে। এরপর চারটি মোবাইল ও একটি ল্যাপটপ চুরি করে পালিয়ে যায়।

পুলিশ জানায়, ঘটনার পর থেকেই আত্মগোপনে থাকা মোবারকের কাছ থেকে চুরি করা মোবাইল ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে। কুমিল্লা জেলা পুলিশ জানিয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তি ও কৌশলগত অভিযানে অল্প সময়ের মধ্যেই এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান বলেন, মোবারকের আগে থেকেই এই পরিবারে যাতায়াত ছিল। যে কারণে সে এই সুযোগটা নিয়েছে। তবে সে কেন হত্যা করেছে এটা আমরা এখনো জানতে পারিনি। তিনি এই পরিবারে পানি পড়া আর ঝাড়ফুঁক করতেন। হত্যার আগে তিনি প্রায় তিন ঘন্টা ধরে তাদেরকে পানি পড়া ও ঝাড়ফুঁক দিয়ে অজ্ঞান করে রাখেন। এরপর সুমাইয়ার মাকে শ্বাসরোধ করে এবং তাকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, রোববার দুপুর ২.৩০ টায় তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে। এখানে পরিবারের কেউ যুক্ত আছে কিনা সেটা আমরা এখনো জানতে পারিনি। আমরা সব উদ্ধার করার চেষ্টা করছি।

Lading . . .