Advertisement

কক্সবাজারে ১৬ বছর পর বিএনপির সম্মেলন, কারা হাল ধরছেন

প্রথম আলো

প্রকাশ: ২০ আগস্ট, ২০২৫

কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কে বিএনপি নেতা–কর্মীদের মিছিল। সম্প্রতি তোলাছবি: প্রথম আলো
কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কে বিএনপি নেতা–কর্মীদের মিছিল। সম্প্রতি তোলাছবি: প্রথম আলো

১৬ বছর পর কক্সবাজার জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে এই সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সম্মেলন মারামারিতে পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর আর কোনো সম্মেলন হয়নি। কেন্দ্র থেকে সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীকে সভাপতি ও শামীম আরা স্বপ্নাকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পর আর নতুন কোনো কমিটি হয়নি।

দলীয় সূত্র জানায়, এবারের সম্মেলন ঘিরে নেতা–কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনার কমতি নেই। তবে জেলায় বিএনপির রাজনীতিতে এখন সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি হচ্ছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। এক দশকের বেশি সময় পর দেশে ফেরার পর থেকেই তিনি স্থানীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ফলে জেলা বিএনপির নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কে হবেন, তা অনেকটাই নির্ভর করছে তাঁর ওপর। নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে কাউন্সিলরদের ওপর সালাউদ্দিনের প্রভাবই সবচেয়ে বেশি কাজ করবে বলে মনে করছেন নেতা–কর্মীরা।

বিএনপিতে নতুন জোয়ার

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা তৎপর হয়ে ওঠেন। আত্মগোপনে থাকা নেতা-কর্মীরা ফিরতে শুরু করেন। কারাবন্দী নেতা-কর্মীরা জামিনে মুক্ত হয়ে এসে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে কক্সবাজারের ইউনিয়ন, উপজেলা ও পৌরসভার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, কক্সবাজার জেলায় বিএনপির ১৪টি ইউনিট আছে। ইতিমধ্যে আটটি ইউনিটের সম্মেলন শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট সাতটি ইউনিটের মধ্যে চলতি আগস্টে উখিয়া, চকরিয়া, কক্সবাজার সদর উপজেলা ও কক্সবাজার পৌরসভা বিএনপির সম্মেলন হবে। এরপর রামু ও ঈদগাঁও উপজেলা বিএনপির সম্মেলন হবে। সবশেষে আগামী সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে জেলা বিএনপির সম্মেলন হবে। এখন তার প্রস্তুতি চলছে।

সম্মেলন ঘিরে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সভা-সমাবেশ চলছে বলে জানান শাহজাহান চৌধুরী। তিনি বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে জেলার চারটি আসনে জিততে বিএনপির নেতা-কর্মীরা কাজ করছেন। অতীতের বিভেদ ভুলে নেতা-কর্মীরা এখন ঐক্যবদ্ধ।

তবে নেতা–কর্মীরা বলছেন, জেলায় বিএনপির রাজনীতির নানা পরিবর্তন অনেকটাই সালাহউদ্দিন আহমদের ওপর নির্ভর করছে।

সম্মেলনকে ঘিরে চাঙা নেতা-কর্মীরা

জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরী প্রথম আলোকে বলেন, জেলার তিন উপজেলা ও একটি পৌরসভার সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। ২২ আগস্ট উখিয়া, ২৩ আগস্ট চকরিয়া, ২৮ আগস্ট কক্সবাজার পৌরসভা এবং ৩০ আগস্ট কক্সবাজার সদর উপজেলা বিএনপির সম্মেলন হবে। সম্মেলন ঘিরে নেতা-কর্মীদের তৎপরতা বেড়েছে।

দলের নেতারা বলেন, ২৩ আগস্ট চকরিয়া সরকারি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হচ্ছে চকরিয়া উপজেলা বিএনপির সম্মেলন। ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এনামুল হক বলেন, সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

উখিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সরওয়ার জাহান চৌধুরী বলেন, সম্মেলন ঘিরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা চাঙা হয়ে উঠেছেন। ত্যাগী, জনপ্রিয় ও মেধাবী নেতারা কমিটিতে অগ্রাধিকার পাবেন বলে আশা তাঁদের।

টানা ২৫ বছর ধরে কক্সবাজার পৌরসভা বিএনপির সভাপতি ও আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন রফিকুল হুদা চৌধুরী। ২৮ আগস্টের সম্মেলনে তিনি সভাপতি প্রার্থী। পাশাপাশি জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি ও পৌরসভার সাবেক কাউন্সিল রফিকুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল কাইয়ুম, সাবেক পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমসহ অনেকে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হচ্ছেন।

দলের নেতারা বলেন, ১২টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত কক্সবাজার পৌরসভাতে বিএনপির সাংগঠনিক ইউনিট আছে ২৩টি। ইতিমধ্যে ১৯টি ইউনিটের সম্মেলন হয়েছে। অবশিষ্ট আছে চারটি ইউনিটের ২ নম্বর (নুনিয়াছটা) ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের (পাহাড়তলী) এলাকার কিছু অংশ।

কক্সবাজার সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল মাবুদ বলেন, সম্মেলন ঘিরে নেতা-কর্মীরা চাঙা। সম্প্রতি মারা গেছেন আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব ছৈয়দ নুর। কমিটির সভাপতি-সাধারণ সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন আবদুল মাবুদ, রাশেদ মোহাম্মদ আলী, আইনজীবী সাইফুল্লাহ নুরীসহ বেশ কয়েকজন।

Lading . . .