মা-মেয়ে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন, মিলল লোমহর্ষক তথ্য
প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিনা বেগম হত্যার মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় কুমিল্লা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকায় পালিয়ে যাওয়ার সময় কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার আসামির নাম মোবারক হোসেন। তিনি দেবিদ্বার উপজেলার কাবিলপুর গ্রামের মৃত আবদুল জলিলের ছেলে ও পেশায় কবিরাজ।
পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, ঝাড়-ফুঁক করার সুবাদে মোবারক হোসেন সুমাইয়া আফরিনদের বাসায় যাতায়াত করতেন। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় সুমাইয়াদের ভাড়া বাসা নগরীর কালিয়াজুরি এলাকায় নেলি কটেজ নামের বাসায় প্রবেশ করে মোবারক। এরই মধ্যে মোবারক তাদের বাসায় ঝাড়-ফুঁক করে পানি ছিটিয়ে বেরিয়ে যায়। আবার বেলা সাড়ে ১১টায় বাসায় প্রবেশ করে, যা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে।
তিনি আরও বলেন, মোবারক তাদের বাসায় থাকাকালীন সময়ে এক পর্যায়ে সুমাইয়া আফরিনকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় তার মা বাধা দেন। এতে মোবারক ক্ষুব্ধ হয়ে সুমাইয়াকে এক ঘরে আটকে মা তাহমিনা বেগমকে অন্য একটি রুমে নিয়ে বালিশচাপায় হত্যা করে। এরপর সুমাইয়াকে তার রুমে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।
এসপি বলেন, সুমাইয়া প্রতিরোধ করলে তাকে গলা টিপে হত্যা করে। হত্যার পর মোবারক সুমাইয়াদের ঘর থেকে চারটি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ নিয়ে পালিয়ে যায়। র্যাব ও পুলিশ পৃথক দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যাওয়া ব্যক্তিই গ্রেপ্তার খাদেম মোবারক।
ধর্ষণ হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, ধর্ষণ হয়েছে কিনা বিষয়টি ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এর আগে সোমবার ভোরে কুমিল্লা নগরীর কালিয়াজুড়ি এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে মা এবং মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতরা হলেন কুমিল্লা নগরীর সুজানগর এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের স্ত্রী তাহমিনা বেগম (৫২) ও তার মেয়ে সুমাইয়া আফরিন (২৩)। তিনি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
মা ও বোনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বড় ভাই ফয়সাল বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। সোমবার বাদ মাগরিব নিজ গ্রাম কুমিল্লার সুজানগরের সুন্নিয়া জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা এবং পরে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।