হংকং ম্যাচে যে দুই বাধা অতিক্রম করতে হবে টাইগারদের
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

এশিয়া কাপে বাংলাদেশের প্রথম লক্ষ্য ‘সুপার ফোর’ খেলা, মানে সেরা ৪ দলের মধ্যে থাকা। আর সে লক্ষ্য পূরণের প্রথম শর্তই হলো, নিজেদের গ্রুপে প্রথম দুই দলের মধ্যে জায়গা করে নেয়া। আর তা করতে হলে অন্তত দুটি ম্যাচ জিততে হবে।
বাংলাদেশ ভক্ত ও সমর্থকদের বিশ্বাস, গ্রুপের সবচেয়ে দুর্বল প্রতিপক্ষ হংকংয়ের সাথে সহজেই জিতবে বাংলাদেশ। তার সাথে আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কার যে কোনো এক দলের বিপক্ষে জিতলেই সেরা চারে খেলা সম্ভব হবে।
মাঠের হিসেব কী হবে, তা বলে দেবে সময়। তবে ধারণা করা হচ্ছে, আফগানদের চেয়ে লঙ্কানদের হারানো তুলনামূলক সহজ কাজ টাইগারদের। দুই মাস আগে শ্রীলঙ্কার মাটিতে লঙ্কানদের সাথে সিরিজ বিজয়টা হয়ে আছে সাহস, আস্থা ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক।
আর রশিদ খানের নেতৃত্বে ফজলহক ফারুকি, নুর আহমেদ, মোহাম্মদ নবির গড়া আফগান বোলিং তোড় সামলানো কঠিন হতে পারে তানজিদ তামিম, পারভেজ ইমন, লিটন দাস, জাকের আলী অনিকদের জন্য। তাই মনে করা হচ্ছে, গ্রুপে হংকংয়ের পর শ্রীলঙ্কাই হতে পারে বাংলাদেশের তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ।
আজ ১১ সেপ্টেম্বর রাতে আরব আমিরাতের আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে হংকংয়ের সাথে গ্রুপে প্রথম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। টাইগাররা আইসিসি র্যাংকিংয়ের ১০ নম্বর দল। আর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে হংকং সেরা ২০ দলে নেই।
তাই অবস্থান, আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা, শক্তি ও সামর্থ্যের বিচারে হংকং বাংলাদেশের চেয়ে অনেক পিছিয়ে। অনেক দুর্বল প্রতিপক্ষ। সেদিক থেকে বাংলাদেশের জয়টা প্রত্যাশিত এবং টাইগারদের জেতা উচিত।
টাইগার সমর্থকরা একটি সহজ জয়ের আশায় আছেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে হংকংয়ের করুণ পরিণতি (৯৪ রানে অলআউট হয়ে ৯৪ রানে হার) দেখে সে আশা করাই যায়।
কিন্তু শুনে ও জেনে অবাক হবেন ইতিহাস। পরিসংখ্যান কিন্তু ওত সহজ জয়ের আশা দিচ্ছে না। কাগজে-কলমে হংকংয়ের চেয়ে বাংলাদেশ যতই শ্রেয়তর প্রতিপক্ষ হোক না কেন, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে দুই দলের মুখোমুখি একমাত্র দেখায় টাইগারদের রয়েছে তিক্ত স্মৃতি।
২০১৪ সালের ২০ মার্চ চট্টগ্রামে সেটি ছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচ। যে ম্যাচে মাত্র ১০৮ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। ওই সামান্য পুঁজি নিয়ে শেষ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। হংকং জিতেছিল ২ উইকেটে।
হোক মাত্র একবারের মোকাবিলা এবং ১১ বছর আগে। তারপরও যে দলের সাথে ওই একবারের মোকাবিলায় জয় ধরা দেয়নি, সেই দলের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে একটু হলেও শঙ্কায় বুক কাঁপতে পারে টাইগারদের। সেদিক থেকে বাংলাদেশের সামনে আছে একটা মনস্তাত্ত্বিক বাধা।
সেটাই একমাত্র দুশ্চিন্তা নয়। আরও আছে। বৃহস্পতিবার রাতে যে মাঠে খেলা, আরব আমিরাতের সেই আবু জায়েদ স্টেডিয়ামে আগে কখনো জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। এই স্টেডিয়ামে এর আগে বাংলাদেশ দুটি ম্যাচ খেলেছে। দুটিতেই পরাজিত হয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, দুটি ম্যাচই ছিল ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে।
একটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৪ রান ( ৯ উইকেটে) করে ৮ উইকেটে হেরেছিল টাইগাররা। অপরটিতে কাগিসো রাবাদার দানবীয় ফাস্টবোলিংয়ের (৩/২০) মুখে মাত্র ৮৪ রানে অলআউট হয়ে ৬ উইকেটে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছিল বাংলাদেশ।
আবু জায়েদ স্টেডিয়ামে আরও একটি ম্যাচে অংশ নিয়ে জিততে পারেনি বাংলাদেশ। সেটা ছিল ওই ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ওয়ার্ম আপ ম্যাচ। সে খেলায় ১৪৭ রানের (৭ উইকেটে ) ছোট পুঁজি নিয়ে ৪ উইকেটে হেরে গিয়েছিল লিটন দাসের দল।
তার মানে আজকের ম্যাচে লিটন দাস, তানজিদ তামিম, পারভেজ ইমন, জাকের আলী অনিক, শেখ মেহেদী, তাসকিন ও মোস্তাফিজদের সামনে বাধা শুধু হংকংই নয়; ইতিহাস, পরিসংখ্যান আর মাঠ। এই বাধার প্রাচীর টপকাতে হবে টাইগারদের। ওই মনস্তাত্ত্বিক লড়াই জিতে এশিয়া কাপ শুরু করতে পারবে লিটন দাসের দল? সেটাই দেখার।