প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য পরিচয়ে নাজমুল হুদা নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার উদ্ধবগঞ্জ এলাকায় হাজী শহীদুল্লাহ্ প্লাজায় সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির নেতা আল মামুন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের সহযোগী ব্যবসায়ী রুহুল হায়দার শামীম, মফিজুল ইসলাম মুকুল ও শহিদুল ইসলাম পান্না।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আল মামুন বলেন, মোগরাপাড়া ইউনিয়নের আলাপদী এলাকার কৃষ্ণাদি মৌজায় ৯ বন্ধু মিলে ১২৬ শতাংশ জমি কেনেন। ওই জমি আম-মোক্তারনামা দলিলের মাধ্যমে এমএ বাছেত ও তার স্ত্রী দৌলতুন নেছার কাছ থেকে কেনেন। জমি তারা ভোগদখলে আছেন। পরে এমএ বাছেতের মৃত্যু হলে তার স্ত্রী, বড় ছেলে আরিফুল রহমান, দ্বিতীয় পুত্র নাজমুল হুদার কাছ থেকে অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে দলিল করে নেন। ওই দলিলে নাজমুল হুদার শ্বশুর আনোয়ার হোসেন ও চাচা শ্বশুর বদিউর রহমান সাক্ষী হিসেবে দলিল সম্পাদন করেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে জমি বিক্রি করার পরও নাজমুল হুদা সিনিয়র সহকারী জজ সোনারগাঁ আদালতে একটি দেওয়ানি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে দলিল বাতিল চাওয়া হয়। আদালতে মামলা থাকার পরও সহকারী কমিশনার ভূমি কার্যালয়ে ভুয়া দলিলের মাধ্যমে নামজারির আবেদন করেন। পরে দুপক্ষের উপস্থিতিতে নামজারির আবেদন বাতিল করে দেন। প্রতারণার মাধ্যমে নামজারি করতে না পারায় তিনি পুনরায় আদালতে ওই জমিতে স্থিতিবস্থা বজায় রাখার আবেদন করেন। আদালত উভয়পক্ষকে স্থিতিবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে এনসিপির সোনারগাঁ উপজেলার সদস্য পরিচয়ে ওই জমিতে সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে দেন নাজমুল হুদা। এতে আদালত অবমাননার সামিল হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
ব্যবসায়ী আল মামুনের দাবি, জমির এ বিরোধকে কেন্দ্র করে তার কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন নাজমুল হুদা। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে এনসিপির নাম ব্যবহার করে অপহরণ ও হত্যার হুমকি প্রদান করেন। জমি বিক্রির পরও জমি ফেরতের জন্য আদালতে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নাজমুল হুদার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার বাবা এমএ বাছেতের মৃত্যুর পর তাকে মামুন গংরা অপহরণ করে সাবরেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে জোরপূর্বক জমি পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে লিখে নেন। এ ঘটনায় তিনি (আল মামুন), সাব রেজিস্ট্রার ও জেলা রেজিস্ট্রারকে বিবাদী করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। তিনি এনসিপিকে ব্যবহার করেননি বলে দাবি করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সোনারগাঁ উপজেলা আহ্বায়ক শাকিল সাইফুল্লাহ বলেন, জমিসংক্রান্ত বিষয়ে উভয়পক্ষ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আদালতের রায়ে জমিতে স্থিতিবস্থা বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সোনারগাঁয়ে এনসিপির পরিচয়ে কেউ প্রতারণা করলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।