রিকশার চাবি কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীর মাথা ফাটানোর অভিযোগ
প্রকাশ: ৮ আগস্ট, ২০২৫

ভাড়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এক রিকশাচালকের চাবি কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদ করায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে রড দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল কর্মী মোজাহিদুল ইসলামসহ তিনজনের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত অন্য দুজনের নাম–পরিচয় পাওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম খাইরুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং আল-বেরুনী হলের আবাসিক ছাত্র।
ভুক্তভোগী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশমাইল ফটক–সংলগ্ন একটা মোটরসাইকেল গ্যারেজে মোটরসাইকেল সারাতে যান খাইরুল। এ সময় এক রিকশাচালক ওই গ্যারেজের সামনে কান্নাকাটি করছিলেন। খাইরুল রিকশাচালকের কোনো সমস্যা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে রিকশার ভাড়া নিয়ে কথা–কাটাকাটির জেরে তিনজন তাঁর রিকশার চাবি কেড়ে নিয়েছেন বলে জানান। অভিযুক্ত তিনজন একটু দূরে দাঁড়িয়ে ধূমপান করছিলেন। এরপর খাইরুল তাঁদের কাছে গিয়ে নিজের পরিচয় দিয়ে রিকশার চাবি ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মোজাহিদুলসহ তিনজন খাইরুলকে বেধড়ক মারধর করেন। এতে খাইরুলের মাথা ফেটে যায় এবং তাঁর কান কেটে রক্ত বের হয়। এ ঘটনার পর আজ শুক্রবার খাইরুলের মাথা ফাটার রক্তাক্ত ছবি বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক ফেসবুক গ্রুপে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়।
ভুক্তভোগী খাইরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযুক্ত তিনজনের কাছে গিয়ে পরিচয় দিয়ে তাঁর রিকশার চাবি ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করি। তখন হীরা ভাই (মোজাহিদুল) আমাকে গালাগালি দিয়ে বলেন “তুই কে তাঁর রিকশা ফেরত চেওয়ার?” তখন আমি বলি ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী আমি। এরপরই তাঁরা তিনজন আমাকে মারধর করেন। একপর্যায়ে হীরা ভাই এক দোকান থেকে রড নিয়ে এসে আমার মাথায় আঘাত করলে আমার মাথা ফেটে রক্তে ভেসে যায় এবং পাথর দিয়ে আমার বাঁ পাশের কানে ১০ থেকে ১২ বার আঘাত করেন। আমি কানে এখন কম শুনতেছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী খাইরুলকে মারধর করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার খাইরুলের অভিযোগপত্র তাঁরা পেয়েছেন। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছেন। অভিযুক্তের পরিবার তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আগামী রোববার অভিযুক্ত এ ব্যাপারে অবস্থান জানাবেন। ওই দিনই বসে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত মোজাহিদুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহিরউদ্দীন বাবর বলেন, ‘সে ছাত্রদলের কেউ না। আমাদের এত বড় কমিটিতে তার নাম নেই। সে ২০১৪ সালের দিকে রাজনীতি করত। সে আমাদের কেউ না।’