Advertisement

আইফোনই কাল হলো রেদওয়ানের

কালবেলা

প্রকাশ: ১৮ আগস্ট, ২০২৫

অভিযুক্ত জহুরুল মুন্সী। ছবি : সংগৃহীত
অভিযুক্ত জহুরুল মুন্সী। ছবি : সংগৃহীত

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় রেদওয়ান খুনের রহস্য উন্মোচন হয়েছে। অনুসন্ধান শেষে জানা গেছে, আইফোন নিয়ে পূর্বের ক্ষোভ থেকে বন্ধুর হাতে খুন হন তিনি। উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের চাড়ালদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

রেদওয়ান (২৫) সদরপুর উপজেলার বাইশরশি গ্রামের সৌদি প্রবাসী আবু বক্কর সোহেল মিয়ার ছেলে। অভিযুক্ত জহুরুল মুন্সী (২৬) ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের চাড়ালদিয়া গ্রামের ভ্যানচালক লোকমান মুন্সীর ছেলে।

র‍্যাব ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রেদোয়ান ও জহুরুল শিবচরের একটি আলিয়া মাদ্রাসায় দাখিল পর্যন্ত একসঙ্গে পড়ালেখা করত। তারা ঘনিষ্ঠ দুই বন্ধু ছিল। রেদওয়ানের একটি আইফোন ছিল। সেটি মাদ্রাসায় পড়া অবস্থায় চুরি হয়ে যায়। পরে রেদওয়ান থানায় ডায়েরি করার পরে পুলিশ ফোনটি জহুরুলের কাছ থেকে উদ্ধার করে।

মাদ্রাসায় পড়া শেষে জহুরুল ঢাকায় একটি প্রাইভেট কলেজে ভর্তি হয় এবং রেদওয়ান ফরিদপুর পলিটেকনিক্যাল কলেজ থেকে ডিপ্লোমা পাস করে। বুধবার (১৩ আগস্ট) রেদওয়ানকে ফোন করে জহুরুল তার গ্রামের বাড়ি চাড়ালদিয়ায় আসতে বলে। রেদওয়ান কথামতো সন্ধ্যার পর জহরুলের বাড়িতে যায়। বাড়িতে গল্প করার একপর্যায়ে জহুরুল রেদওয়ানের গলায় ছুরি দিয়ে পোঁচ মারে, সঙ্গে সঙ্গে রেদওয়ান মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য শরীরের স্থানে ছুরিকাঘাত করে সে।

পরে বাড়ির পাশের ডোবায় রেদওয়ানের লাশের সঙ্গে বালুর বস্তা বেঁধে ডুবিয়ে দেয়।

এদিকে রেদওয়ান বাড়ি না ফেরায় ১৪ আগস্ট তার মা সদরপুর থানায় ছেলে নিখোঁজের বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে নিখোঁজের চার দিন পর ১৭ আগস্ট বিকেলে চাড়ালদিয়া বিলের ভেতর রেদওয়ানের লাশ ভেসে ওঠে। পুলিশ সেখান থেকে অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে। পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে রেদওয়ানের লাশ শনাক্ত করেন।

র‍্যাব-১০-এর একটি দল হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে অভিযানে নামে। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে জহুরুলকে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়। তখন র‍্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে খুনের কথা স্বীকার করে। এ সময় হত্যার কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, মানিব্যাগ, ব্যবহৃত পোশাক ও ছুরি জব্দ করে।

এ বিষয়ে র‍্যাব ফরিদপুর-১০-এর কমান্ডার অফিসার তরিকুল ইসলাম কালবেলাকে জানান, রেদওয়ান ও জহুরুল দুই বন্ধ ছিল। জহুরুলের বসতঘরেই খুন করা হয়েছে। মোবাইল চুরির পূর্বের ঘটনা নিয়ে ঘাতকের ক্ষোভ ছিল। এ থেকেই মূলত খুন করেছে সে।

ভাঙ্গা থানার তদন্তকারী অফিসার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রামপ্রসাদ জানান, গতরাত ১২টায় রেদওয়ানের মা রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আমরা এখনো কাগজে-কলমে আসামিকে পাইনি। শুনেছি র‍্যাবে আটক করেছে।

Lading . . .