Advertisement

পাইলসের পরিবর্তে পিত্তথলির অস্ত্রোপচার, পালালেন ডাক্তার-নার্স

যুগান্তর

প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

24obnd

ফরিদপুরে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে হ্যাপি বেগম (৩৫) নামে এক রোগীর পাইলসের অস্ত্রোপচারের পরিবর্তে পিত্তথলির অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। এতে ওই রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে বিষয়টি জানাজানি হয়।

খবর পেয়ে সিভিল সার্জন ও বিএমএ নেতৃবৃন্দসহ অনেকে হাসপাতালটিতে ছুটে যান এবং তাৎক্ষণিকভাবে সত্যতা পেয়ে হাসপাতালটির কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেন।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলী এলাকার শাহ সূফি সড়কের সৌদি-বাংলা প্রাইভেট হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী রোগী জেলার সদরপুর উপজেলার আসলাম হোসেনের স্ত্রী।

রোগীর স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, আজ দুপুরের দিকে হ্যাপি বেগম পাইলসের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন এবং হাসপাতালটির চিকিৎসক ফজলুল হকের (শোভন) শরণাপন্ন হন। কিন্তু সন্ধ্যা ৭ টায় তাকে অপারেশন থিয়েটরে প্রবেশ করিয়ে পিত্তথলির অস্ত্রোপচার করেন মো. নজরুল ইসলাম নামে আরেক চিকিৎসক।

ভুল অপারেশনের বিষয়টি বুঝতে পেরে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান চিকিৎসক, নার্সসহ স্টাফরা। ঘটনার ৩ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও রোগীকে কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয় না। পরে রোগীর স্বজনরা প্রশাসন, সাংবাদিক ও ছাত্র প্রতিনিধিদের বিষয়টি অবগত করেন।

পরে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ফরিদপুর সিভিল সার্জন মাহামুদুল হাসান, বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডা. আলি আকবর হাওলাদার হাসপাতালে আসেন। এ সময় তারা ওই রোগীর শারীরিক পরীক্ষা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

রোগীর মেয়ে জান্নাতি আক্তার অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালে আরেকজন রোগী ভর্তি ছিলেন, তার পিত্তথলিতে পাথর হয়েছে। কিন্তু তার জায়গায় আমার আম্মুকে অপারেশন করেছে। কোনো কাগজপত্র যাচাই-বাছাই ছাড়া কেন অপারেশন করল।

তবে এমন অবস্থায় হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা পালিয়ে যায় বলে তরুণ সংগঠক আবরাব নাদিম অভিযোগ করে বলেন, ৩ ঘণ্টা হয়ে গেলেও রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। একজন চিকিৎসকের কাছে রোগীদের নিরাপত্তা কোথায়। রোগীর কাগজপত্র, ফিটনেস না দেখেই অপারেশন করা হয়েছে। এরা মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করে। আমরা এ ঘটনার উপযুক্ত বিচারের দাবি জানাই এবং হাসপাতালটি স্থায়ীভাবে বন্ধের দাবি জানাই।

হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট ও চিকিৎসকের অবহেলা ও গাফিলতির বিষয় জানিয়ে সিভিল সার্জন ডা. মাহামুদুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ডাক্তার ঠিকভাবে কাগজপত্র দেখেনি। এর কারণে পাইলসের রোগীর পিত্তথলির অপারেশন করেছে। আজ থেকেই হাসপাতাল বন্ধ থাকবে এবং আগামীকাল তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তের প্রেক্ষিতে হাসপাতাল ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের ফরিদপুর সদর হাসপাতাল ও ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন

Lading . . .