Advertisement

পোকা দমনে ‘আলোক ফাঁদ’, কমছে কীটনাশকের ব্যবহার

কালবেলা

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

আলোক ফাঁদ ধানের পোকা দমনে একটি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। ছবি : কালবেলা
আলোক ফাঁদ ধানের পোকা দমনে একটি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। ছবি : কালবেলা

রোপা আমন ফসল নির্বিঘ্নে উৎপাদনের লক্ষ্যে ক্ষতিকর বালাই পর্যবেক্ষণ ও দমনে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে ৯টি ইউনিয়নে ‘আলোক ফাঁদ’ ব্যবহার কার্যক্রমের বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বাস্তবায়নের মাধ্যমে কৃষকরা পাচ্ছেন সফলতা কম খরচে উৎপাদন বেশি হবে, ভেবে স্বস্তি ফিরে এসেছে কৃষকদের মধ্যে।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার বিনোদনগর ইউনিয়নের খামারদেবীপুর মাঠে এ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম ইলিয়াস কৃষকদের মধ্যে আলোক ফাঁদের কার্যকারিতা ও প্রয়োগ পদ্ধতি তুলে ধরেন। এ সময় কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কেরামত আলী, উপসহকারী তাপস কুমার সরকার, উপসহকারী মুকুল বাবুসহ জনপ্রতিনিধি, কৃষক উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, আলোক ফাঁদ ধানের পোকা দমনে একটি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। আলোক ফাঁদ তৈরিতে বাঁশের খুঁটি, বৈদ্যুতিক বাল্ব ও সৌর বিদ্যুতের সোলার প্যানেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ধানক্ষেত থেকে দূরে বাঁশের ৩টি খুঁটির সাহায্যে মাটি থেকে ২-৩ ফুট ওপরে একটি বৈদ্যুতিক বাল্ব জ্বালিয়ে এর নিচে একটি পাত্রে ডিটারজেন্ট পাউডার অথবা কেরোসিন মিশ্রিত পানি রেখে ফাঁদটি তৈরি করা হয়। সন্ধ্যার পর আলোক ফাঁদের আলোয় আকৃষ্ট হয়ে ধানক্ষেতের বিভিন্ন পোকামাকড় এসে পাত্রের পানিতে পড়ে। অতি অল্প খরচে তৈরি এই আলোক ফাঁদ এটি ব্যবহার করে বেশ উপকৃত হচ্ছেন কৃষকরা।

কৃষক সুজাউদ দোউলা বলেন, আমি ৫ বিঘা জমিতে ধান চাষ করছি।‌ গত বছর পোকা নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় ছিলাম ভালোভাবে ফসল করতে পারিনি। এবার কৃষি অফিসের পরামর্শে আলোক ফাঁদ করে অনেক উপকৃত হচ্ছি। এখন সহজেই পোকা নির্ধারণ করে, ওষুধ দিতে পারছি। এতে করে ফসল ভালো হবে আশা করি।

কৃষক মমিনুল ইসলাম বলেন আমি ৩ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি, ধান ভালো হয়েছে। তবে খুব টেনশনে আছি, ওষুধ দিয়েও অনেক সময় কাজ হয় না। তবে এবার কৃষি অফিসের সহযোগিতায় আলোক ফাঁদ করে উপকার পাওয়া যাচ্ছে। কারণ সঠিক ওষুধ ব্যবহার করতে পারছি পোকা নির্ধারণের জন্য।

কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম ইলিয়াস বলেন, আলোক ফাঁদের মাধ্যমে ক্ষতিকর পোকার উপস্থিতি সহজে শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। এর ফলে সময় মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে এবং অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার কমানো সম্ভব হবে।

তিনি আরও বলেন, এ কার্যক্রম পরিবেশবান্ধব উপায়ে বালাই দমন নিশ্চিত করার পাশাপাশি কৃষকদের উৎপাদন খরচ হ্রাসে সহায়তা করবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের স্থানীয় কর্মকর্তারা নিয়মিত মাঠ পর্যায়ে আলোক ফাঁদ পর্যবেক্ষণ করছেন এবং কৃষকদেরও এতে সম্পৃক্ত করছেন।

উল্লেখ্য, নবাবগঞ্জ উপজেলায় গত বছর রোপা আমন চাষ হয়েছিল ২১ হাজার ৭২৫ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৭২৯ হেক্টরে।

Lading . . .