Advertisement

চ্যাটজিপিটি দিয়ে বিদায়ী বার্তা লিখে ‘ধরা খেলেন’ ২ ফুটবলার

প্রথম আলো

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফাবিও সিলভা (বাঁয়ে) ও ক্রিস্টান্টাস উচেছবি: প্রথম আলো গ্রাফিক্‌স
ফাবিও সিলভা (বাঁয়ে) ও ক্রিস্টান্টাস উচেছবি: প্রথম আলো গ্রাফিক্‌স

বিশ্বজুড়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার বেড়েই চলেছে। এই প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে যেমন সহজ করছে, আবার মাঝেমধ্যে ঝামেলাতেও ফেলছে। কিছু কিছু ঘটনা তো হাস্যরসেরও জন্ম দিচ্ছে। ফাবিও সিলভা ও ক্রিস্টান্টাস উচে তেমনই এক মজার ঘটনার জন্ম দিয়েছেন।

সম্প্রতি গ্রীষ্মকালীন দলবদলে ইংলিশ ক্লাব উলভারহ্যাম্পটন ছেড়ে জার্মান ক্লাব বরুসিয়া ডর্টমুন্ডে নাম লিখিয়েছেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড সিলভা। আর নাইজেরিয়ান অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার উচে স্প্যানিশ ক্লাব হেতাফে থেকে ধারে যোগ দিয়েছেন ইংলিশ ক্লাব ক্রিস্টাল প্যালেসে।

দুজনই পুরোনো ক্লাবকে বিদায় জানাতে বার্তা তৈরির জন্য জনপ্রিয় এআই চ্যাটজিপিটির সহায়তা নেন। এরপর তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন।
এতেই ধরা খেয়েছেন সিলভা ও উচে।

ফুটবলপ্রেমীরা দেখেন, দুজনের বিদায়ী বার্তায় হুবহু মিল। শব্দচয়ন, আবেগের উপস্থাপনা, এমনকি যতিচিহ্নও এক! শুধু দুজন আলাদা ক্লাবে খেলতেন বলে ক্লাবের নাম দুটি আলাদা।

দুজনের সেই পোস্ট একত্র করে মানুষ শেয়ার দিতে শুরু করেছেন। অদ্ভুত মিল খুঁজে পেয়ে অনেকেই হাসাহাসি করছেন। একজন লিখেছেন, ‘দুই খেলোয়াড়, এক বিদায়ী বার্তা!’ আরেকজন লিখেছেন, ‘চ্যাটজিপিটি নাকি কপি–পেস্ট মেশিন?’

কারও কারও মতে, পুরোনো ক্লাবের প্রতি সিলভা ও উচের আন্তরিকতার অভাব আছে। তাঁরা মনে করছেন, চ্যাটজিপিটির সহায়তা যে কেউ নিতেই পারে। কিন্তু সেখানে নিজস্ব কিছু কথা যোগ করা উচিত ছিল।

গত ২৯ আগস্ট উলভারহ্যাম্পটন ছেড়ে ডর্টমুন্ডে যোগ দেওয়ার পর ফাবিও সিলভা ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা বার্তার শুরুতে লেখেন, ‘যখন আমি উলভসে আসি, তখন অনেক উচ্চাশা, স্বপ্ন আর নিজের ছাপ রাখার ইচ্ছা নিয়ে এসেছিলাম। আমি জানি, প্রত্যাশা পূরণ করতে পারিনি। তবে ফুটবল আর জীবন শুধু সংখ্যার খেলা বা মাঠের কয়েকটি মুহূর্ত নয়...।’

পাঁচ দিন পর হেতাফে থেকে ধারে ক্রিস্টাল প্যালেসে যোগ দিয়ে ক্রিস্টান্টাস উচে লেখেন, ‘যখন আমি হেতাফেতে আসি, তখন অনেক উচ্চাশা, স্বপ্ন আর নিজের ছাপ রাখার ইচ্ছা নিয়ে এসেছিলাম। আমি জানি প্রত্যাশা পূরণ করতে পারিনি। তবে ফুটবল আর জীবন শুধু সংখ্যার খেলা বা মাঠের কয়েকটি মুহূর্ত নয়...।’

পোস্টের শেষাংশে সিলভা লেখেন, ‘এখানে থাকার সময় আমি শিখেছি, বেড়ে উঠেছি, সবচেয়ে বড় কথা পরিবারের আসল মানে বুঝেছি। উলভস আমাকে সেটা দিয়েছে। প্রথম দিন থেকেই ক্লাবের মানুষগুলো আমাকে সব ধরনের সহায়তা করেছে। আমি সব সময় এই ক্লাবের ভক্ত হয়ে থাকব। ধন্যবাদ, উলভস। হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা।’

শুধু ক্লাবের নাম বদলে উচেও একইভাবে লেখেন, ‘এখানে থাকার সময় আমি শিখেছি, বেড়ে উঠেছি, সবচেয়ে বড় কথা পরিবারের আসল মানে বুঝেছি। হেতাফে আমাকে সেটা দিয়েছে। প্রথম দিন থেকেই ক্লাবের মানুষগুলো আমাকে সব ধরনের সহায়তা করেছে। আমি সব সময় এই ক্লাবের ভক্ত হয়ে থাকব। ধন্যবাদ, হেতাফে। হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা।’

এখন প্রশ্ন হলো—ফাবিও সিলভা ও ক্রিস্টান্টাস উচে ভিন্ন দেশের ফুটবলার, দুজন কখনো এক ক্লাবেও খেলেননি, এমনকি তাঁদের মাতৃভাষাও আলাদা। তাহলে পুরোনো ক্লাবের উদ্দেশে লেখা বার্তা কীভাবে হুবহু মিলে গেল?

ধারণা করা হচ্ছে, দুজন চ্যাটজিপিটিকে একই কমান্ড দিয়েছিলেন। হয়তো বলেছিলেন, ‘আমার ক্লাবকে বিদায় বলো।’ চ্যাটজিপিটি যেহেতু মুহূর্তেই খুঁজে বের করতে পারে, কে কোন ক্লাবের খেলোয়াড়; তাই ক্লাবের নাম বদলে বাকি কথাগুলো একই ভাষায় সাজিয়ে দিয়েছে।

সিলভা–উচে কারোরই নতুন ক্লাবের জার্সিতে অভিষেক হয়নি। আন্তর্জাতিক বিরতি শেষে ক্লাব ফুটবল আবার মাঠে গড়ালে তাঁদের খেলতে দেখা যাবে।

Lading . . .