কিংসের বিরুদ্ধে ফিফার তদন্ত শুরু, অভিযোগ প্রমাণিত হলে কী হবে
প্রকাশ: ১৮ আগস্ট, ২০২৫

চুক্তির অর্থ না পাওয়ায় এ মাসের শুরুতে বসুন্ধরা কিংসের বিরুদ্ধে ফিফায় অভিযোগ দায়ের করেন ক্লাবটির সাবেক রোমানিয়ান কোচ ভ্যালেরিও তিতা ও ফরাসি ট্রেইনার খলিল চাকরৌন। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তকাজ শুরু করেছে ফুটবল সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
ফুটবলে কোনো কোচ বা খেলোয়াড় পাওনা অর্থ (বেতন/চুক্তির টাকা ইত্যাদি) না পেলে তিনি ফিফার কাছে অভিযোগ করতে পারেন। তখন প্রক্রিয়াটা সাধারণত পাঁচটি ধাপে সম্পন্ন করে ফিফা।
শুরুতে সংশ্লিষ্ট কোচ বা খেলোয়াড়কে ফিফার প্লেয়ারস স্ট্যাটাস চেম্বার (পিএসসি) বা ডিসপুট রেজল্যুশন চেম্বারে (ডিআরসি) প্রয়োজনীয় প্রমাণ (চুক্তি, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, বকেয়া অর্থের হিসাব) যুক্ত করে লিখিত অভিযোগ করতে হয়।
অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে তদন্তে নামে ফিফা। প্রথমত উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনা হয়। এরপর ক্লাবকে উত্তর দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয় ফিফা।
তিতা ও চাকরৌনের অভিযোগ পর্যালোচনার পর ফিফা এখন কিংসকে জবাব দেওয়ার জন্য ২৭ আগস্ট পর্যন্ত সময় দিয়েছে। তিতা নিজেই আজ প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বর্তমানে তিনি ওমানের ক্লাব আল-সিবের কোচ।
ওমান থেকে তিতা বলেন, ‘অভিযোগটি এখন তদন্ত পর্যায়ে। আমার আইনজীবী জানিয়েছেন, ফিফা আমাদের মামলার বিষয়টি নিয়ে ক্লাবের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে। তারা কিংসকে ২৭ আগস্টের মধ্যে জবাব দিতে বলেছে।’
কিংসের ব্যাখ্যা পাওয়ার পর রায় ঘোষণা করবে ফিফা। যদি কোচের দাবি প্রমাণিত হয়, তবে ফিফা ক্লাবকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ করতে বলবে।
ওই সময়ের মধ্যে তিতা ও চাকরৌনের পাওনা কিংস পরিশোধ না করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে ফিফা। আইন অনুযায়ী, তিন রকমের শাস্তি হতে পারে। এক. ট্রান্সফার ব্যান, অর্থাৎ নতুন খেলোয়াড় দলভুক্তিতে নিষেধাজ্ঞা, দুই. লিগে পয়েন্ট কেটে নেওয়া, তিন. লিগ থেকে অবনমন।
তবে এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বসুন্ধরা কিংস যদি প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ উত্থাপন করতে পারে এবং অভিযোগ ভুল প্রমাণিত হয়, তাহলে আবেদন খারিজ করে দেবে ফিফা।
এ বিষয়ে কিংসের চেয়ারম্যান ইমরুল হাসানকে আজ হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠালেও কোনো উত্তর দেননি তিনি।
গত বছরের জুলাইয়ে অস্কার ব্রুজোনের জায়গায় বসুন্ধরা কিংসের কোচের দায়িত্ব নেন তিতা। রোমানিয়ান এই কোচের অধীন ক্লাবটি চ্যালেঞ্জ কাপ ও ফেডারেশন কাপের শিরোপা জিতেছিল। তবে প্রিমিয়ার লিগ জিততে না পারায় তিতাকে ছাঁটাই করে কিংস।
এরপর বেতন, বোনাস ও আরও কিছু পাওনা নিয়ে ফিফায় অভিযোগ করেন তিতা। কিংসের কাছে কত টাকা পাবেন, সেটা স্পষ্টভাবে না জানালেও এ নিয়ে তিতার ভাষ্য, ‘তারা (কিংস) আমার তিন মাসের বেতন ও বোনাস দেয়নি। বিমানভাড়াও আমি নিজের পকেট থেকে দিয়েছি। একইভাবে ফিটনেস ট্রেইনার তিন মাসের বেতনের সঙ্গে বোনাসও পাবে।’
ফুটবল–বিশ্বে খেলোয়াড়-কোচ ও ক্লাবের মধ্যে দেনা-পাওনা নিয়ে ঝামেলা নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশের আরেক ক্লাব ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স গত মৌসুমে এক উজবেক ফুটবলারকে চুক্তিকৃত অর্থ পরিশোধ করেনি। পরে ফিফায় অভিযোগ করেছিলেন সেই ফুটবলার।
অভিযোগের কারণে ফকিরেরপুল ফিফার ট্রান্সফার নিষেধাজ্ঞায় পড়ে। যদিও পরবর্তী সময়ে অভিযোগকারী ফুটবলারের অর্থ পরিশোধ করায় ৭ আগস্ট নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি মেলে ক্লাবটির।
আরও পড়ুন