Advertisement

পেঁয়াজের তেলে কি আসলেই চুল গজায়

প্রথম আলো

প্রকাশ: ৮ আগস্ট, ২০২৫

24obnd

পেঁয়াজের উপকারিতা শুধু খাবারেই সীমাবদ্ধ নয়, চুলের জন্যও এটি ভালো প্রাকৃতিক সমাধান। চুলের গোড়া মজবুত করতে, নতুন চুল গজাতে এবং চুলের সামগ্রিক সৌন্দর্য বাড়াতে পেঁয়াজের তেল বেশ ভালো কাজ করে। পেঁয়াজের তেলে রয়েছে প্রচুর সালফার, যেটা চুলের গঠনকে দৃঢ় করে এবং ভাঙা, ডগা ফাটা ও পাতলা হয়ে যাওয়া রোধ করে।

পেঁয়াজের তেলে থাকা নির্দিষ্ট কিছু এনজাইম অকালে চুল পাকাকে ধীর করে। পেঁয়াজের তেলে একধরনের ঝাঁজ থাকে। এটি মাথার ত্বককে জীবাণুমুক্ত করে। সোরিয়াসিস আর খুশকি থাকলে সেটাও দূর করে। ভিটামিন সি, ফলেট (ভিটামিন বি৯), ভিটামিন বি৬, পটাশিয়ামসহ নানা পুষ্টি আছে পেঁয়াজে। পেঁয়াজের তেলে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মাথার ত্বক সুস্থ রাখে, খুশকি কমাতে সাহায্য করে এবং নতুন চুলও গজায়।

কীভাবে বানালে ও ব্যবহারে উপকারিতা পাওয়া যাবে, জানালেন রূপবিশেষজ্ঞ শারমিন কচি।

প্রাকৃতিক তেল নেবেন কতটা

পেঁয়াজের রস সব সময় তেলের সঙ্গে ব্যবহার করাই ভালো। পেঁয়াজের রস ও তেল সব সময় ১: ২ অনুপাতে ব্যবহার করতে হবে। অর্থাৎ পেঁয়াজের রস যদি ১ কাপ নেওয়া হয়, তাহলে তেল নিতে হবে দুই কাপ। এখানে তেলের বিষয়েও একটি কথা আছে। অনেক পেঁয়াজের তেলে তিলের তেল, নারকেল তেল, বাদাম তেল ও ক্যাস্টর অয়েলের মতো উপকারী উপাদান থাকে, যেগুলো চুলের স্বাস্থ্যে আলাদা অবদান রাখে।

অনেকে আবার নানা ধরনের তেলের মিশ্রণে একটি তেল বানাতে চান। সে ক্ষেত্রে সব ধরনের তেল নিয়ে বানানো তেলটির মিশ্রণও হবে ওই একই অনুপাতে। তবে নানা ধরনের তেল যখন বানাবেন, সেখানেও পরিমাপের নিয়মটি মানতে হবে। নারকেল তেলকে মূল তেল হিসেবে রাখার পরামর্শ দিলেন শারমিন কচি।

কারণ, এটি হালকা। নিতে পারেন এক কাপ। এরপর জলপাই তেল বা বাদাম তেলের ভেতরে যেকোনো একটি বেছে নিন। কারণ, এই দুটি তেলই ঘন। মাপ হবে আধা কাপ। কালিজিরা তেল বা তিসির তেল অথবা তিলের তেল থেকে বেছে নিতে পারেন একটি। কারণ, এই তিনটিই ভারী। মাপ হবে সিকি কাপ। এই মাপটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। না হলে পরে সমস্যা হতে পারে। কারণ, এই তিনটি তেলই সহায়ক তেল হিসেবে ভালো ভূমিকা পালন করে। মূল তেল হিসেবে নয়।

মাথার ত্বক থেকে জীবাণু চলে গেলে পোরস পরিষ্কার হয়ে যায়। তখন চুল গজাতে শুরু করে। আরেকটু কার্যকর করতে ভিটামিন ই আর কোলাজেন সাপ্লিমেন্ট বা ক্যাপসুল মেশাতে পারেন পেঁয়াজের তেলে।

খেয়াল রাখবেন, গরম তেলে বা ফ্রিজ থেকে বের করা ঠান্ডা তেলে কখনোই এই ক্যাপসুল মেশানো যাবে না। তেল যখন ঘরের তাপমাত্রায় থাকবে, তখনই মেশাতে পারবেন। চুলের গোড়া থেকে তেল লাগানো শুরু করুন। এরপর একদম আগা পর্যন্ত লাগান। এতে করে চুল ভেঙে যাওয়ার সমস্যাও কমে যাবে। চুল মাঝখান থেকে ভেঙে যাওয়ার সমস্যা বেশি থাকলে ২টি কোলাজেন ক্যাপসুল ব্যবহার করুন।

ব্যবহার

ভালো ফল পেতে প্রথম সপ্তাহে প্রতিদিনই ব্যবহার করুন। দ্বিতীয় সপ্তাহে ৩-৪ বার। তৃতীয় সপ্তাহে ২-৩ বার। এভাবে পরবর্তী সপ্তাহগুলোতে ২ দিন করে ব্যবহার করুন। ১ ঘণ্টা তেল লাগিয়ে এরপর ধুয়ে ফেলুন। এই এক ঘণ্টার মধ্যে সম্ভব হলে দুবার মালিশ করুন।

পাশাপাশি হট টাওয়েল নিন। চুলের রুক্ষতা চলে যাবে, চুলের পোরসও খুলে যাবে। এতে করে তেলের পুষ্টি ত্বকের ভেতরে যাবে। সারা রাত না লাগিয়ে রাখলেই ভালো। পেঁয়াজের ঝাঁজ বেশিক্ষণ মাথার ত্বকে থাকলে এপিডার্মিস স্তরের ক্ষতি হতে পারে।

ফলাফল

চুল পড়া কমা বা নতুন চুল গজানোর লক্ষণ দেখা দিতে ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ, কখনো কখনো ৮ থেকে ১২ সপ্তাহও লাগতে পারে।

বানাবেন কীভাবে

পেঁয়াজের খোসা ছাড়িয়ে ছোট টুকরা করে নিন। শুধু পেঁয়াজের রসটা নিন, ব্লেন্ড করে। এক কাপ পেঁয়াজের রসের সঙ্গে ২ কাপ নারকেল তেল বা মেশানো তেল মিলিয়ে নিন। সঙ্গে দিতে পারেন মেথি। মেথি ভিজিয়ে রেখে দিন কিছুক্ষণ।

এরপর তেলের সঙ্গে জ্বাল দিন। অল্প আঁচে ১০-১৫ মিনিট রান্না করুন, যতক্ষণ না তেলের রং হয় ঘন। ঠান্ডা হলে পাতলা ছাঁকনিতে ছেঁকে নিয়ে একটি পরিষ্কার বোতলে ভরে রাখুন। ফ্রিজে রেখে এক মাস সংরক্ষণ করতে পারবেন।

সতর্কতা

সংবেদনশীল ত্বকের ক্ষেত্রে আগে অল্প একটু লাগিয়ে দেখুন। কারও কারও ত্বকে অ্যালার্জি বা জ্বালাপোড়া হতে পারে, সে ক্ষেত্রে ব্যবহার বন্ধ করে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নিন।

Lading . . .