ঘরেই বানান ভাইরাল রাইস পেপার মাস্ক, ত্বক হবে ঝকঝকে–সতেজ
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট, ২০২৫

রান্নাঘর থেকে সরাসরি ত্বকচর্চায়—শুনতে অদ্ভুত লাগছে? হ্যাঁ, রাইস পেপার মূলত চালের গুঁড়া, পানি আর ট্যাপিয়োকা স্টার্চে তৈরি পাতলা শিট। এসব শিট রোদে শুকিয়ে কড়কড়ে করা হয়। ভিয়েতনামি রান্নায় রাইস পেপার পানিতে ভিজিয়ে নরম করে স্প্রিং রোলের মতো খাবার মোড়ানো হয়। তবে খাবারের জন্য তৈরি হলেও ত্বকের যত্নে এটি সিরাম বা টোনারের ‘বাহক’ হিসেবে দারুণ কাজ করে।
মনে রাখবেন: ‘রাইস পেপার’ শব্দটি কখনো কখনো কারুশিল্পে ব্যবহৃত একধরনের পিথ পেপার (গাছের আঁশ থেকে তৈরি কাগজ) বোঝাতেও ব্যবহৃত হয়। এসব রাইস পেপার খাওয়াও উপযোগী নয় এবং বা ত্বকের যত্নেও ব্যবহার করা হয় না।
দুটি কিন্তু আলাদা জিনিস। রাইস পেপার হলো খাবার উপযোগী, শুকনো, পাতলা শিট। আর রাইস ওয়াটার তো আমরা সবাই চিনি। সোজা কথায় চাল সেদ্ধ করে যে স্টার্চ বা মাড়সমৃদ্ধ পানি পাওয়া যায়, সেটাই রাইস ওয়াটার। এটি প্রাথমিক গবেষণায় ত্বকের আর্দ্রতা–বর্ধক ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবে সম্ভাবনা দেখিয়েছে, তবে প্রমাণ এখনো সীমিত।
রাইস পেপার মাস্ক বা যেকোনো শিট মাস্ক মুখের ত্বকের ওপরের স্তরে একটি ভেজা আবরণ হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ এর ফলে ত্বক থেকে পানি দ্রুত উবে যায় না। এ কারণে ত্বকের আর্দ্রতা বাড়ে এবং মাস্কের সঙ্গে যুক্ত করা হিউমেকট্যান্ট বা জলগ্রাহী উপাদানগুলো ত্বকের উপকার করে। রাইস পেপার মাস্কের মতো বায়োসেলুলোজ–জাত (ব্যাকটেরিয়া দ্বারা উৎপাদিত) মাস্ক নিয়ে মানবদেহে পরীক্ষা–নিরীক্ষায় ত্বকের সজীবতা বাড়ার প্রমাণ মিলেছে।
মনে রাখতে হবে, রাইস পেপার মাস্ক ত্বককে শুধু আর্দ্রতাই দেবে। এর সঙ্গে আপনি যা যুক্ত করবেন (যেমন টোনার বা সিরাম), সেটাই করবে মূল কাজ। রাইস পেপারের কিন্তু নিজস্ব হায়ালুরনিক অ্যাসিড বা কোলাজেন নেই; সেসব আলাদা সিরাম হিসেবে যোগ করলে তবেই মিলবে উপকার।
কেউ কেউ ত্বকের হাইড্রেশন ও গ্লো বাড়াতে রাইস পেপারে গ্রিন–টি, অ্যালোভেরা বা ভিটামিন সি সিরাম ভিজিয়ে ব্যবহার করছেন।
ফ্লেবারবিহীন খাবার উপযোগী রাইস পেপার কিনুন।
কুসুম গরম পানিতে চাইলে কয়েক ফোঁটা গোলাপজল বা অ্যালো জেল মেশাতে পারেন।
ওই পানিতে রাইস পেপার শিট ১৫–৩০ সেকেন্ড ভিজিয়ে নরম করুন। একেবারে বেশি নরম যেন না হয়।
মুখের আকারে কেটে ১০–১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন।
শুকিয়ে কড়কড়ে হওয়ার আগেই খুলে ফেলুন, তারপর হালকা ময়েশ্চারাইজার লাগান।
মনে রাখবেন: এই মাস্ক সপ্তাহে ১–২ বার ব্যবহারই যথেষ্ট।
আর্দ্রতা বাড়ায়: শুষ্ক বা পানিশূন্য ত্বকে হাইড্রেশন দেয়।
ত্বক ঠান্ডা রাখে: রোদে থাকার পর ঠান্ডা অনুভূতি দেয়।
উজ্জ্বলতা আনে: ভিটামিন সি বা নায়াসিনামাইড–যুক্ত সিরামের সঙ্গে ব্যবহার করলে ত্বকের দাগ ও মলিনতা কমে।
কোমলতা দেয়: সংবেদনশীল ত্বকের জন্যও এই মাস্ক বেশ আরামদায়ক।
রাইস পেপার নিজে কোলাজেন বা হায়ালুরনিক অ্যাসিডের জোগান দেয় না। এসব উপাদানের সুবিধা পেতে রাইস পেপার মাস্কে সিরাম যোগ করতে হবে।
রাইস পেপার মাস্ক কিন্তু সানস্ক্রিনের বিকল্প নয়। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষা পেতে ভালো মানের সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
ব্রণ বা কোনো সংক্রমণে ভুগলে এই মাস্ক ব্যবহার করবেন না।
রাইস পেপার মাস্ক ব্যবহারে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা ও সঠিক উপাদান বাছাই করতে ভুলবেন না।
রান্নাঘরের এই সস্তা উপকরণ কি আপনার স্কিনকেয়ার রুটিনে নতুন জায়গা করে নেবে? চেষ্টা করেই দেখুন!
সূত্র: আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজি, ভিয়েত ওয়ার্ল্ড কিচেন, সিরিয়াস ইটস, মেডিকেল নিউজ টুডে, অ্যালিউর ও পিএমসি
আরও পড়ুন