Advertisement

বিয়ের ফাঁদে ফেলে ৩ নারীকে পাচারের চেষ্টা, চীনা নাগরিক আটক

যুগান্তর

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

24obnd

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় প্রতারণা করে ‎বিয়ের ফাঁদে ফেলে তিন নারীকে চীনে পাচারের চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় চীনা নাগরিকসহ দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।

রোববার দিবাগত রাতে কেন্দুয়া পৌর সদরের সল্পকমলপুর গ্রামের রুবেল মিয়ার বাড়ি থেকে তাদের আটক করা হয়। আটকদের কেন্দুয়া থানা হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

আটক হওয়া চীনের নাগরিকের নাম লি ওই হাও (৩২)। আর তার সহযোগী হলেন মো. ফরিদুল ইসলাম (৩৪)। তিনি কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার সুখদেব পশ্চিমপাড়া গ্রামের আবদুল হানিফ মিয়ার ছেলে।

উদ্ধার হওয়া নারীরা হলেন- কেন্দুয়া পৌরসভার কমলপুর গ্রামের আলফা আক্তার (১৮), একই উপজেলার মোজাফরপুর ইউনিয়নের গগ্গডা গ্রামের মহর উদ্দিনের মেয়ে লিজা আক্তার (২০) ও জামালপুর জেলার মেলান্দহ থানার মৃত বছির উদ্দিনের মেয়ে বৃষ্টি আক্তার (১৭)।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রোববার দিবাগত রাত ১০টার দিকে জেলার কেন্দুয়ার সল্পকমলপুর গ্রামের রুবেল মিয়ার বাড়িতে একটি প্রাইভেটকারে করে একজন চীনা নাগরিকসহ দুইজন স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল মিয়ার গার্মেন্টসকর্মী কন্যা ও তার খালাতো বোন এবং তার বান্ধবী জামালপুরের এক কিশোরীকে নিয়ে আসে।

পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে বিদায় নিতে ওই নারীরা চীন চলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়িতে আসে। এখান থেকে রাতেই ঢাকায় চলে যাবে বলে পরিবারের লোকজনকে জানায়। ঢাকায় গিয়ে পরে তারা কয়েক দিনের মধ্যেই চীন চলে যাবে বলেও জানায়। চীনা নাগরিকের সঙ্গে রুবেল মিয়ার কন্যার বিয়ে হয়েছে বলে জানতে পেরে পরিবার ও স্থানীয়দের সন্দেহ হয়।

‎পরে স্থানীয় কয়েকজন বিয়ের কাগজপত্র চাইলে তারা মোবাইল ফোনে কিছু কাগজপত্র দেখায়। কাগজপত্রে অসংগতির প্রমাণ পাওয়ায় স্থানীয়রা সেনা ক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট শাহরিয়ারকে মোবাইল ফোনে জানান।

‎পরে মদন সেনা ক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট শাহরিয়ার এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে তাদের আটক করে।

‎পরে কেন্দুয়া থানার তদন্ত বিভাগের প্রধান পরিদর্শক (তদন্ত) মিহির রঞ্জন দেব রোববার রাত সোয়া ২টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনজন কিশোরী ও একজন চীনা নাগরিকসহ পাঁচজনকে থানায় নিয়ে আসেন।

আটক মো. ফরিদুল ইসলাম নিজেকে গার্মেন্টকর্মী পরিচয় দিলেও তার মোবাইল ঘেঁটে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার অসংখ্য কিশোরী মেয়েদের ছবি, বিভিন্ন নারীর ভোটার আইডি কার্ড, পাসপোর্ট, অর্থ লেনদেনের চ্যাটিং, হোয়াটসঅ্যাপে নারী পাচার করে কোটি টাকা ইনকাম করার তথ্য পাওয়া গেছে বলে নিশ্চিত করে পুলিশ।

‎জামালপুর থেকে আসা কিশোরী জানায়, তারও অপর একজন চীনা নাগরিকের সঙ্গে রোববার সকালে বিয়ে হয়েছে। এখন সে চীনে চলে যাবে। এজন্য সে বান্ধবীর সঙ্গে কেন্দুয়ায় এসেছে।

‎ভুক্তভোগী কিশোরীরা জানায়, তারা ঢাকা মালেক মিয়া নামে একজনের বাড়িতে থেকে গার্মেন্টসে চাকরি করেন। সেখান থেকে আরও দুই বান্ধবী এভাবে বিয়ে করে কিছুদিন আগে চলে গেছে নিশ্চিত হয়েই তারাও চীন চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

নেত্রকোনার পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ বলেন, চীনা নাগরিকসহ দুজনকে আটক করা হয়েছে। তিন নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Lading . . .