আইনস্টাইনের ধারণা ভুল প্রমাণ করলেন এমআইটির বিজ্ঞানীরা
প্রকাশ: ৮ আগস্ট, ২০২৫

পদার্থবিজ্ঞানের দুনিয়ায় শতাব্দীপ্রাচীন এক বিতর্কের অবসান করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) একদল বিজ্ঞানী। সম্প্রতি এক গবেষণায় বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের ধারণা ভুল প্রমাণ করে কোয়ান্টাম এনট্যাঙ্গেলমেন্ট বা কোয়ান্টাম জট পাকানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁরা। গবেষণায় দেখা যায়, কোয়ান্টাম কণা তাৎক্ষণিকভাবে দূর থেকে একে অপরকে প্রভাবিত করতে পারে। ক্ল্যাসিক্যাল পদার্থবিজ্ঞানের ধারণা এই প্রভাবকে অস্বীকার করে। নতুন এই গবেষণা ফলাফল কোয়ান্টাম মেকানিকসের বিষয়ে একাধিক ভবিষ্যদ্বাণীকে চ্যালেঞ্জ করেছে।
কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানীরা দূরে অবস্থিত দুটি কণা একে অপরকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রভাবিত বা যোগাযোগ করতে পারে কি না, তা জানার চেষ্টা করছেন। এমআইটির গবেষণায় দেখা গেছে, কোয়ান্টাম কণা যত দূরেই থাকুক না কেন, তাৎক্ষণিকভাবে একে অপরকে প্রভাবিত করতে পারে। এই অদ্ভুত সংযোগকে কোয়ান্টাম জট হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানীরা এই জট নিয়ে বিভ্রান্ত ছিলেন।
কোনো স্পষ্ট সংযোগ বা সংকেত ছাড়া কণা একে অপরকে প্রভাবিত করতে পারে, এমন ধারণা নিয়ে আইনস্টাইনের বেশ অস্বস্তি ছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন, মহাবিশ্ব স্পষ্ট, যৌক্তিক নীতির ওপর পরিচালিত হওয়া উচিত। ১৯৩৫ সালে তিনি বরিস পোডলস্কি ও নাথান রোজেনের সঙ্গে মিলে একটি বিখ্যাত গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন। সেই গবেষণাপত্রে কোয়ান্টাম তত্ত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। সে সময় আইনস্টাইনসহ বরিস পোডলস্কি ও নাথান রোজেন যুক্তি দিয়েছিলেন, কোয়ান্টাম মেকানিকস অবশ্যই অসম্পূর্ণ হতে হবে। কারণ, সেখানে কোনো কারণ ছাড়াই ভয়ংকর মিথস্ক্রিয়া ঘটতে পারে।
আইনস্টাইন মনে করতেন, কোনো কণা তাৎক্ষণিকভাবে অন্য কণাকে প্রভাবিত করতে পারে না। এ জন্য কোনো লুকানো চলক থাকতে হবে, যা সবকিছুকে আরও সহজভাবে ব্যাখ্যা করে। আর তাই আইনস্টাইনের ধারণার প্রমাণ খুঁজে দেখার পাশাপাশি কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার প্রকৃত রূপ জানতে বহু বছর ধরেই গবেষণা করছেন বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা। বিভিন্ন পরীক্ষা কোয়ান্টাম ফিজিকসকে সমর্থন করলেও সেগুলোতে বেশ কিছু ত্রুটি ছিল। তবে এমআইটির গবেষণায় পুরোনো ত্রুটিগুলোর সমাধান করা হয়েছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া