Advertisement

রাজধানীর এই মার্কেটে পাবেন লেইসের বিশাল সম্ভার

প্রথম আলো

প্রকাশ: ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

24obnd

মাত্র এক শতাব্দী আগেও বিলাসিতার প্রতীক ছিল লেইস। অভিজাত সেই উপাদানই এখন সবার জন্য উন্মুক্ত। পুরুষদের পোশাক থেকে হারিয়ে গেলেও নারীদের পোশাকের অতি সাধারণ এক অংশ। হাতের কাছের মার্কেটগুলোয় তো বটেই, পথের ধারে ও ফুটপাতে, এমনকি ফেরিওয়ালার ভ্যানেও পাওয়া যাচ্ছে পোশাকের এই উপাদান। হরেক রকম বাহারি লেইসের খোঁজ নিতে অনেকেই ঢুঁ মারেন রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবের প্রিয়াঙ্গন মার্কেটে।

২১ আগস্ট বেলা ১১টায় সেখানে গেলাম। মার্কেটের ভেতরে ঢুকে সিঁড়ির বাঁ পাশে লেইসের প্রথম দোকানটিই নজর কাড়ল। নাম মোহনা লেইস হাউস। মাত্রই দোকান খুলেছেন ম্যানেজার মোহাম্মদ সজীব। হাজারো নকশার লেইস থেকে কয়েকটি বের করে দেখাতে দেখাতে সেগুলোর সঙ্গে পরিচয়ও করিয়ে দিলেন। সুতা, ক্রুশ কাঁটা, জয়পুরী, কেমিক্যাল, কারচুপি, কাটওয়ার্ক, কুন্দন, নেট আরও কত কী। আজকাল সবচেয়ে বেশি চলছে কেমিক্যাল লেইস, জানান সজীব। চিকন সুতার নকশা করা এ লেইসগুলো কামিজের হাতে, গলায় ও ঝুলে লাগানো হয়। অনেকে পায়জামার নিচেও এ লেইসগুলো দেন। সজীব বলেন, কেমিক্যাল লেইসগুলো চীন থেকে আনা হয়। এগুলোর দাম সবচেয়ে কম। আকার ও নকশার ভিত্তিতে দাম ৫ থেকে ৩০ টাকা গজ।

অন্যান্য লেইসের দরদামেরও ধারণা দিলেন সজীব। ক্রুশ কাঁটার লেইসের দাম প্রতি গজ ১৫ থেকে ৫০ টাকা। জয়পুরী ও কাটওয়ার্কের লেইসের দাম প্রতি গজ ৬০ থেকে ৩০০ টাকা। কারচুপি ও কুন্দনের লেইসগুলো সবচেয়ে দামি, দাম প্রতি গজ ১০০ থেকে ৫০০ টাকা।

কথা বলতে বলতেই হালকা গোলাপি লেইস খুঁজতে এলেন ফাহমিদা হক। লেইস কিনতে প্রায়ই এখানে আসেন তিনি। ফাহমিদা বলেন, খুব হালকা ছাপের কাপড়ে একটু লেইস জুড়ে দিলেই সেটি অন্য রকম দেখায়। তা ছাড়া নিজের মতো একেবারে অন্য রকম কিছু তৈরি করা যায়। জামার রঙের সঙ্গে মিলিয়ে লেইস লাগাতে পছন্দ করেন।

লেইস কিনতে আসা আরও কয়েকজন ক্রেতা জানান, লেইসের দাম আগের চেয়ে অনেক বেশি। তাঁদের ধারণা, ক্রেতার সংখ্যা বেশি, তাই দাম ছাড়তে চান না বিক্রেতারা। তবে বিক্রেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। মার্কেটের ভেতরের সিঁড়ি দিয়ে উঠে সিঁড়ির সঙ্গেই বেশ কয়েকটি দোকান। দোতলার সিঁড়ির ডান পাশে লেইসের দোকানটির নাম মদিনা লেইস ঘর। দোকানের কর্মচারী ওমর ফারুক বলেন, ভারত ও চীন থেকে আসে সব লেইস। দেশে খুব একটা তৈরি হয় না। তাই দামও একটু বেশি। তা ছাড়া তাঁরা বেছে বেছে ক্রেতাদের পছন্দসই লেইসগুলো আনেন।

মার্কেটের আরও কয়েকটি দোকান ঘুরে বোঝা গেল, সবচেয়ে বেশি চলছে সাদা, ধূসর ও কালো রঙের লেইস। প্রতিদিনকার পরনের পোশাকে সেগুলো ব্যবহার হচ্ছে। তবে মৌসুমভেদে সব লেইসেই চাহিদা আছে, যেমন বিয়ের কনেরা বিয়ের ওড়না কারচুপি, জরি সুতা আর কুন্দনের লেইস দিয়ে তৈরি করেন। জমকালো শাড়িতেও অনেকে লেইস লাগান। ওড়নার চারপাশে চিকন লেইস আর পায়জামার নিচে লাগানোর জন্য কেউ নিচ্ছেন মোটা নেটের লেইস।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লেইসের দোকানগুলোয় ভিড় বাড়ছিল। দোকানিরাও ব্যস্ত হয়ে উঠছিলেন। চলছে দরদাম। পরিমাণে বেশি নিলে দাম অনেকটাই কমিয়ে রাখছেন। চাঁদনী চক মার্কেট, চন্দ্রিমা মার্কেট, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, মোহাম্মাদিয়া মার্কেট, উত্তরার রাজলক্ষ্মী, মিরপুর নান্নু মার্কেট, মৌচাক মার্কেট ও আজিমপুর ইডেন মহিলা কলেজের সামনের ফুটপাতেও পাবেন নানা নকশার লেইস। দাম এমনই পড়বে।

Lading . . .