মেরিনোর হ্যাটট্রিক, তুরস্কের জালে ভয়ঙ্কর স্পেনের ৬
প্রকাশ: ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

কোচ দিয়েছিলেন আরও ভালো খেলার চ্যালেঞ্জ, তাড়না ছিল পেদ্রি-ইয়ামালদের মাঝেও। দুইয়ে মিলিয়ে বিধ্বংসী হয়ে উঠল স্পেন। চমৎকার এক হ্যাটট্রিক উপহার দিলেন মিকেল মেরিনো। জোড়া গোলের আলো ছড়ালেন পেদ্রি। তাদের দাপুটে ফুটবলের সামনে খড়কুটোর মতো উড়ে গেল তুরস্ক।
প্রতিপক্ষের মাঠে রোববার রাতে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে ৬-০ গোলে জিতেছে স্প্যানিশরা। তাদের আরেক গোলদাতা ফেররান তরেস।
তিন দিন আগে বুলগেরিয়ার বিপক্ষে ছড়ি ঘুরিয়ে প্রথমার্ধেই তিন গোল করে স্পেন। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে দলটি কিছুটা খেই হারিয়ে ফেলে। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা ৩-০ গোলে জেতে তারা, অনায়াস জয়ের পরও যা হতাশ করে কোচ দে লা ফুয়েন্তেকে। সেদিনই তিনি বলেছিলেন, তুরস্কের বিপক্ষে আরও ভালো খেলবে তার দল।
ম্যাচ শুরু হতেই অবশ্য আক্রমণ শানায় তুরস্ক, ডি-বক্সের বাইরে থেকে হাকান কালহানোগ্লুর শটটা রুখে দেন স্পেন গোলরক্ষক উনাই সিমোন।
এরপরই টানা আক্রমণ শুরু করে স্পেন। খুব দ্রুত গোলও পেয়ে যায় তারা। ষষ্ঠ মিনিটে নিকো উইলিয়ামসের পাস ধরে ডি-বক্সের বাইরে থেকে শটে দলকে এগিয়ে নেন পেদ্রি।
দুই মিনিট পর ডান দিকের সাইডলাইন ধরে দারুণ ক্ষীপ্রতায় আক্রমণে উঠে, বল পায়ে কারিকুরিতে ডি-বক্সে দুজনকে কাটিয়ে শট নেন ইয়ামাল; কিন্তু গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে পারেননি তিনি।
প্রথম ২০ মিনিটে প্রায় ৭০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে, গোলের জন্য ছয় শটের পাঁচটি লক্ষ্যে রাখতে পারা স্পেন ২২তম মিনিটে চমৎকার এক গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে। ডি-বক্সে চার জন নিজেদের মধ্যে বল দেওয়া-নেওয়া করে পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে শটে বল জালে পাঠান মেরিনো।
গত বৃহস্পতিবার বুলগেরিয়ার বিপক্ষে দলের শেষ গোলটি করেছিলেন মেরিনো।
দুই মিনিট পর গোলের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও হতাশ করেন ইয়ামাল। পেদ্রির ফিরতি পাস ছয় গজ বক্সের মুখে পেয়ে অবিশ্বাস্যভাবে উড়িয়ে মারেন তরুণ তারকা। কিছুক্ষণ পর কাছাকাছি জায়গা থেকে তার শট ক্রসবার ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে একটা ধাক্কা খায় স্পেন। চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন উইঙ্গার নিকো উইলিয়ামস।
এতে অবশ্য তাদের দাপুটে পারফরম্যান্সে কোনো প্রভাব পড়েনি, এর প্রমাণ মেলে পরক্ষণেই। দুই মিনিট যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে, আরেকটি পাসিং ফুটবলের আক্রমণে মিকেল ওইয়ারসাবালের পাস বক্সে ফাঁকায় পেয়ে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন মেরিনো।
অনেক আগে থেকেই ছোট ছোট পাসের তিকি-তাকা ফুটবলে পারদর্শী স্পেন। কোচ দে লা ফুয়েন্তে তার সঙ্গে যোগ করেছেন ক্ষীপ্রতা, তাতে দলটি হয়ে উঠেছে আরও ভয়ঙ্কর। তাদের পরের গোলে মেলে সেই গতির দেখা।
দ্বিতীয়ার্ধের অষ্টম মিনিটে প্রতিপক্ষের একটি আক্রমণে রুখে দিয়ে তড়িৎ পাল্টা আক্রমণে ওঠে স্পেন। ইয়ামালের পাস ধরে স্কোরলাইনে নাম লেখান তরেস।
চার মিনিট পর বুদ্ধিদীপ্ত শটে, দৃষ্টিনন্দন গোলে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন মেরিনো। এই গোলেও জড়িয়ে ইয়মালের নাম। বার্সেলোনা ফরোয়ার্ডের পাস ধরে সামনে এক পলকে দেখে নেন মেরিনো, কয়েকজন সতীর্থ সামনেই ছিল, কিন্তু পাস না দিয়ে আচমকা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে শট নেন তিনি, উড়ে গিয়ে ক্রসবার ঘেঁষে বল জড়ায় জালে।
এবারের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে দুই ম্যাচেই চারটি গোল হয়ে গেল মেরিনোর। জাতীয় দলের হয়ে আর্সেনাল মিডফিল্ডারের গোল হলো আটটি।
৬২তম মিনিটে স্কোরলাইন ৬-০ করেন পেদ্রি। বল পায়ে দারুণ কারিকুরিতে একজনকে ফাঁকি দিয়ে সামনে পাস বাড়ান ওইয়ারসাবাল, আর ডি-বক্সে বল ধরে ডান পায়ের শটে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন বার্সেলোনা মিডফিল্ডার।
টানা দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘ই’ গ্রুপের শীর্ষে স্পেন। সমান ৩ করে পয়েন্ট নিয়ে জর্জিয়া দুইয়ে ও তুরস্ক তিনে আছে।