মাঠের বাইরে ক্রিকেটারদের আচরণ, ‘বিশেষ’ বৈঠকে বসছেন বুলবুল
প্রকাশ: ১৮ আগস্ট, ২০২৫

আগেই জানা, ১৮ আগস্ট অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরে আসবেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল এবং দেশে ফিরে পরদিনই তিনি বসবেন ক্রিকেটারদের সঙ্গে।
যে কথা সেই কাজ। আগামীকাল ১৯ আগস্ট মঙ্গলবার সকালে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে একান্তে বসবেন বিসিবি প্রধান। সঙ্গে বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্তারাও থাকবেন।
বলে রাখা ভালো, গত ৪ দিন শেরে বাংলায় পাওয়ার হিটিং কোচ জুলিয়ান উডের অধীনে পাওয়ার বিশেষ ট্রেনিং করেছেন ক্রিকেটাররা। সেই বহরটিই মঙ্গলবার সকাল ১০টায় হোটেল প্যান প্যাসেফিক সোনারগাঁওয়ে বিসিবি সভাপতি ও বোর্ডের কয়েকজন শীর্ষ কর্তার সঙ্গে বসবেন।
বিসিবি থেকে জানানো হয়েছে, মূলত ক্রিকেটারদের সাথে বোর্ড সভাপতি ও শীর্ষ কর্তাদের যোগাযোগ ও সখ্য বাড়ানোই এ বৈঠকের প্রধান লক্ষ্য। জানা গেছে, আমিনুল ইসলাম বুলবুল ক্রিকেটারদের আচার, আচরণ, কথাবার্তা, চালচলন, নিয়মশৃঙ্খলা নিয়ে কথা বলবেন।
বিসিবির উচ্চ পর্যায়ের এক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, বিসিবির বেতনভুক্ত ক্রিকেটার তথা বর্তমান জাতীয় দলে খেলা ক্রিকেটারদের সাথেই প্রাথমিকভাবে বৈঠক করবেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট। বিসিবি সভাপতি বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের আচরণগত বিষয়ে আরও সচেতন করতে চান।
ক্রিকেটারদের চলাফেরা কেমন হওয়া উচিত, তারা কী করতে পারবেন আর কী করতে পারবেন না; সে সম্পর্কে একটা ক্লাসের মত সেশন করবেন বোর্ড প্রধান।
কিন্তু হঠাৎ কী এমন হলো যে, বিসিবি সভাপতি ক্রিকেটারদের আচরণগত বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন? জানা গেছে, তাসকিন নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারলেও তার বন্ধুদের সাথে ঝগড়া, মারামারি ও পরে ঘটনা পুলিশে গড়ানোয় মনোক্ষুণ্ন বুলবুল।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ক্রিকেটারদের শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আছে অনেক। শাহাদাত হোসেন রাজিব, মোহাম্মদ শহীদ, রুবেল হোসেন, সাব্বির রহমান , নাসির হোসেন এমনকি সাকিব আল হাসানের মত দেশসেরা ক্রিকেটারও বিভিন্ন সময় নানা কাণ্ড ঘটিয়ে আলোচনায় এসেছেন। বোর্ড প্রধান হিসেবে বুলবুল সেসব নেতিবাচক ও নিন্দনীয় ঘটনার অবসান চান। তাই তিনি চান ক্রিকেটারদের সতর্ক ও সচেতন করে তুলতে।
এ দেশের জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের অনেকেই নিজেদের দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন নন। তারা কী করতে পারেন, আর কী করতে পারেন না-বেশিরভাগ ক্রিকেটারের তাও জানা নেই। তারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেশকে শুধু প্রতিনিধিত্বই করেন না, তারা দেশের মর্যাদার প্রতীকও। তারা পাবলিক ফিগার। সাধারণ মানুষ তাদের অনুসরণ করেন।
ক্রিকেটারদের ব্যবহার, কথাবার্তা, চলাফেরা এবং কর্মকাণ্ড সমাজে প্রভাব ফেলে। তাদের ছোট নেতিবাচক আচরণও সাধারণ ভক্ত-সমর্থকদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। সে সব ব্যাপারে ক্রিকেটারদের সতর্ক, সাবধানী ও সচেতন করে তোলার লক্ষ্যেই নিজে ব্রিফ করতে চান বিসিবি প্রধান।
এক বোর্ড পরিচালক জাগো নিউজকে আজ রোববার বিকেলে জানিয়েছেন, বিসিবি সভাপতি ক্রিকেটারদের পরিষ্কার ধারণা দিতে চান যে, খেলার মাঠের বাইরে ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনেও ক্রিকেটারদের নানা কর্তব্য আছে। জাতীয় দল, ক্রিকেট বোর্ডের পাশাপাশি পরিবার, সমাজ ও দেশের প্রতিও তাদের দায়বদ্ধতা আছে। সেই দায়বদ্ধতার কারনণেই তারা ইচ্ছেমত চলাফেরা করতে পারেন না। যা খুশি তা করতে পারেন না। তাই ক্রিকেটারদের সচেতন করে দিতেই বিসিবি প্রধান নিজে তাদের সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহী হয়েছেন।