পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশের ইতিহাস গড়ার সেই দিন
প্রকাশ: ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ইতিহাস গড়ার এমন কিছুদিন থাকে, যেগুলোকে সহজে ভোলা যায় না। ভুলে থাকা যায় না। ইতিহাসের পাতায় এমন কিছু ঘটনা আছে এ ধরনের চরিত্র ধারণ করে রেখেছে সেগুলো। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসেও তেমন একটি দিন হচ্ছে, ৩ সেপ্টেম্বর। মাত্র এক বছর আগেই এই দিনেই সেই ঐতিহাসিক কীর্তিটি গড়েছিলো বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেট দল।
২০২৪ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে রচনা হয়েছিলো বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অধ্যায়। রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টের শুরুতে মাত্র ২৬ রানে ৬টি উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা অবস্থায় থেকেও দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানকে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছে লাল-সবুজের দল।
২০২৪ সালে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে টেস্ট সিরিজের আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে কোনো টেস্টেই জয় পায়নি বাংলাদেশ। সে জায়গায় পাকিস্তানের মাটিতেই তাদেরকে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ করেছে টাইগাররা।

প্রথম টেস্টে দশ উইকেটের জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় টেস্টের শুরুতে আবারও ধরা দেয় ভয়ঙ্কর বিপর্যয়— প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বসে। এর আগে প্রথম ইনিংসে ২৭৪ রান করে পাকিস্তান। জবাব দিতে নেমে সাদমান ইসলাম, জাকির হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম এবং সাকিব আল হাসানরা শুধু আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিলেন।
২৬ রানের মধ্যে ৬টি উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশের হাল ধরেন লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজ। তখনও ২৪৮ রান পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। এ দু’জনের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ভর করে বাংলাদেশ তুলতে সক্ষম হয় ২৬২ রান। ১৩৮ রান করেন লিটন দাস। ৭৮ রান করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ১৬৫ রানের জুটি গড়েন তারা দু’জন।
অথচ, প্রথম ইনিংসেই বল হাতে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন মিরাজ। এরপর ব্যাট হাতেও লড়াই করেছেন তিনি। আর লিটন দাসের অসাধারণ সেঞ্চুরিটি ছিল তার টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয়।
প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের চেয়ে বাংলদেশ পিছিয়ে ছিল ১২ রানে। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তান ইনিংসে ধস নামান দুই তরুণ পেসার নাহিদ রানা (২১ বছর) ও হাসান মাহমুদ (২৪ বছর)- দুজনই খেলছিলেন মাত্র নিজেদের তৃতীয় টেস্ট। হাসান মাহমুদ নেন ৫ উইকেট এবং নাহিদ রানা নেন ৪ উইকেট।১টি উইকেট নিয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ। পাকিস্তান অলআউট হয় ১৭২ রানে।

বাংলাদেশ জয়ের জন্য লক্ষ্য পায় ১৮৫ রানের। ৪ উইকেট হারিয়ে সেই লক্ষ্য সহজেই টপকে যায় বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটাররা।৬ উইকেটের এই জয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ইতিহাস গড়ে। পাকিস্তানের মাটিতে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ নেওয়ার পাশাপাশি টেস্টে মাত্র তৃতীয়বারের মতো বিদেশের মাটিতে সিরিজ জয়ের কীর্তি গড়ে টাইগাররা।