এমবাপের ২ পেনাল্টি গোলে ১০ জন নিয়ে রেয়াল মাদ্রিদের জয়
প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

কিলিয়ান এমবাপের ওভারহেড শট দিয়ে আক্রমণের যে ঝড় তুলল রেয়াল মাদ্রিদ, তা চলল একেবারে শেষ পর্যন্ত। ফিনিশিংয়ের দুর্বলতায় অবশ্য অসংখ্য সুযোগ হারাল তারা। আচমকা গোল হজম করে পিছিয়েও পড়ল, শেষ দিকে অনেকটা সময় খেলতে হলো একজন কম নিয়ে। তবে খেই না হারিয়ে প্রত্যাশিত জয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শুভসূচনা করল রেকর্ড চ্যাম্পিয়নরা।
সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে মঙ্গলবার রাতে মার্সেইয়ের বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতেছে শাবি আলোন্সোর দল। টিম ওয়েহর গোলে পিছিয়ে পড়ার পর, জোড়া পেনাল্টি গোলে ব্যবধান গড়ে দেন এমবাপে।
শুরুর দিকে বেশিরভাগ সময় পজেশন রাখার পাশাপাশি আক্রমণে একচেটিয়া আধিপত্য করে রেয়াল মাদ্রিদ। ধীরে ধীরে চিত্র বদলায়। শেষ পর্যন্ত বল দখলে রাখার হিসেবে অনেকটাই এগিয়ে যায় সফরকারীরা।
৪০ শতাংশের একটু বেশি সময় পজেশন রেখে গোলের জন্য ২৮টি শট নিয়ে ১৫টি লক্ষ্যে রাখতে পারে রেয়াল। আর মার্সেইয়ের ১৫ শটের পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে।
ঘরোয়া লিগে শতভাগ সাফল্যের আত্মবিশ্বাস নিয়ে এখানে মাঠে নেমে দ্বিতীয় মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতে রেয়াল। প্রতিপক্ষের ভুলে ছয় গজ বক্সের মুখে বল পেয়ে বাইসাইকেল কিক মারেন এমবাপে, বল দূরের পোস্ট দিয়ে বেরিয়ে যায়।
পঞ্চম মিনিটেই বেশ একটা ধাক্কা খায় রেয়াল মাদ্রিদ; চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ট্রেন্ট অ্যালেকজ্যান্ডার আর্নল্ড। বদলি নামেন দানি কার্ভাহাল।
পরের মিনিটে তাদের সামনে আরেক দুর্ভাগ্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়। গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে কাছ থেকে ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনোর প্রচেষ্টা পোস্টে লাগে।
প্রবল চাপ তৈরি করে পরের পাঁচ মিনিটে আরও চারটি শট নেয় রেয়াল; কিন্তু একটিও ঠিকানা খুঁজে পায়নি। এমবাপের জোরাল শট গোলরক্ষক জেরোনিমো রুলির পায়ে লেগে বাইরে যায়।
শুরুর দিকে কোণঠাসা মার্সেই ২২তম মিনিটে লক্ষ্যে প্রথম শটেই এগিয়ে যায়।
মাঝমাঠে ডিন হাউসেনের ছোট পাস ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি আর্দা গিলের। বল কেড়ে নিয়ে দ্রুত আক্রমণে ওঠেন ম্যাসন গ্রিনউড। ডি-বক্সের মুখে গিয়ে তিনি পাস দেন ডান দিকে, আর বল ধরেই জোরাল শটে রেয়ালকে হতভম্ব করে দেন টিম ওয়েহ।
পিছিয়ে পড়ার ছয় মিনিটের মধ্যে সফল স্পট কিকে সমতা টানেন এমবাপে। ডি-বক্সে রদ্রিগো ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টিটি পায় তারা।
৩৩তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে অহেলিয়া চুয়ামেনির বুলেট গতির শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক রুলি। পরের দুই মিনিটে দুই পক্ষই ভুল করে বিপদে পড়তে বসেছিল; তবে কেউই প্রতিপক্ষের মুহূর্তের দুর্বলতাকে পুঁজি করতে পারেনি। পিয়েরে-এমেরি অবামেয়াং লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেওয়ার পর, অন্য পাশে এমবাপে পারেননি গোলরক্ষকের বাধা এড়াতে।
শুরু থেকে দারুণ খেলা মাস্তানতুয়োনো বিরতির ঠিক আগে পরিষ্কার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। এমবাপের পাস বক্সে ফাঁকায় পেয়ে শট নেন ১৮ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড, ঝাঁপিয়ে রুখে দেন রুলি।
বিরতির পরও একইভাবে শুরু করে রেয়াল। ৫০তম মিনিটে এমবাপের শটে বল প্রতিপক্ষের একজনের পায়ে লেগে রুলির ওপর দিয়ে গিয়ে ক্রসবারে লাগে।
উত্তেজনায় ঠাসা লড়াইয়ে ৭০তম মিনিটে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি খায় রেয়াল। প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে তাদের গোলরক্ষকের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন কার্ভাহাল, মেজাজ হারিয়ে মাথা দিয়ে রুলির চোখের কাছে গুতো মেরে বসেন। ভিএআর মনিটরে দেখে সরাসরি লাল কার্ড দেখান রেফারি।
দলে একজন কমে গেলেও রেয়ালের আক্রমণের ধার কমেনি। পুনরায় খেলা শুরু হতেই বাঁ দিক দিয়ে পরপর কয়েকবার আক্রমণে শাণান রদ্রিগোর বদলি নামা ভিনিসিউস জুনিয়র। তেমনই একটি আক্রমণে ডি-বক্সে ফাকুন্দো মেদিনার হাতে বল লাগলে ফের পেনাল্টি পায় রেয়াল এবং ৮১তম মিনিটে স্পট কিকে দলকে এগিয়ে নেন এমবাপে।
ম্যাচে ফিরতে শেষ দিকে কয়েকটি ভালো আক্রমণ করে মার্সেই। তবে আর কোনো বিপদ হতে দেয়নি টুর্নামেন্টের ১৫ বারের চ্যাম্পিয়নরা।
৮ গোলের রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে হারের দুয়ার থেকে ইউভেন্তুসের অবিশ্বাস্য ফেরা