মৌলভীবাজারে নানা থিম আর সাজে রঙিন পূজামণ্ডপ
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
দরজায় কড়া নাড়ছে বাঙালি হিন্দুদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। উৎসব ঘিরে এখন চারদিকে সাজ সাজ রব। আয়োজনকে উৎসবমুখর করতে সংগঠক, আয়োজকদের এখন দিনরাত একাকার হয়ে আছে।
পূজাকে উপলক্ষ করে দূরের মানুষ ছুটে আসছেন ঘরের কাছে। যে যেখানে আছেন, মন তাঁর পড়ে আছে এই ঢাকঢোল, কাঁসর-ঘণ্টার মন আনচান করা সুরের কাছে। দুর্গোৎসবের এই আঁচ লেগেছে মৌলভীবাজারের পথে–ঘাটে, হাটবাজারে। নানা থিম ও সাজে রঙিন হয়ে উঠছে পূজামণ্ডপগুলো।
সোমবার সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার শহরের কয়েকটি পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা গেল, এরই মধ্যে মণ্ডপ তৈরির অনেকখানি কাজ এগিয়ে আনা হয়েছে। পুরোদমে কাজ এগিয়ে চলছে। কোথাও চলছে প্রতিমা নির্মাণের কাজ। কোথাও তৈরি হচ্ছে প্যান্ডেল। কয়েক দিন বৃষ্টি কিছুটা বাগড়া দিয়েছে, কাজ ঠিকঠাক করা যায়নি। এখন বৃষ্টি নেই। রাতদিনের পুরো সময়কে এখন কাজে লাগানো হচ্ছে।
শহরের কাশীনাথ আলাউদ্দিন স্কুল ও কলেজ মাঠে পূজার আয়োজন করেছে মহেশ্বরী। তারা পূজামণ্ডপের তোরণকে আকর্ষণীয় করে সাজিয়ে তুলছে। ককশিটে তৈরি তোরণটি এর মধ্যে অনেকটা সেজে উঠেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা।
মহেশ্বরী পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দোলন কুমার দাশ বলেন, তাঁরা এ বছর বিশেষভাবে গেট তৈরি করছেন। দেশে-বিদেশে তাঁদের প্রায় ৩৫০ সদস্য আছেন, তাঁদের চাঁদাতেই পূজার আয়োজন হয়।
মনু নদের পাড় ঘেঁষে সৈয়ারপুর এলাকায় পূজার আয়োজন করেছে ত্রি-নয়নী শিববাড়ি সর্বজনীন দুর্গা উৎসব পরিষদ। ত্রি-নয়নী বেশ কয়েক বছর ধরে এই স্থানে পূজার আয়োজন করে আসছে। প্রতিবছরই তাদের আয়োজনে নতুন কিছু থাকে। আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এবারও তাঁদের মণ্ডপে একটি থিম নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। দুর্গাপ্রতিমার পাশাপাশি আরও ১২ দেব-দেবীর মূর্তি স্থাপন করা হচ্ছে। ১২ মাসে এই ১২ দেব-দেবীর পূজা দেওয়া হয়।
ত্রি-নয়নী শিববাড়ি সর্বজনীন দুর্গা উৎসব পরিষদের সভাপতি স্বাগত কিশোর দাশ চৌধুরী বলেন, ‘পূজার প্রস্তুতি সাড়ম্বরে চলছে। আমাদের মণ্ডপে এবার ১২ মাস যেসব দেব-দেবীর পূজা হয়, তাদের মূর্তি আছে। চাইলে কেউ আলাদা আলাদা পূজা দিতে পারবেন।’
পূজা উদ্যাপন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ বছর ৯৯৩টি প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বজনীন ৮৬৭টি এবং ব্যক্তিগত ১২৬টি।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ মৌলভীবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মহিম দে বলেন, প্রশাসন থেকে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। প্রশাসনের সার্বক্ষণিক নজরদারি আছে। পূজা নিয়ে কোনো শঙ্কা দেখছেন না বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন ফ্রন্ট মৌলভীবাজারের আহ্বায়ক সুনীল কুমার দাশ।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাব, আনসার সদস্যদের নিয়ে নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের টহল থাকবে। যেসব এলাকায় মানুষের সমাগম বেশি, সেখানে সাদাপোশাকে পুলিশ থাকবে। সবাই যাতে আনন্দের সঙ্গে উৎসব উদ্যাপন করতে পারেন, সে রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।