অনিয়ম তুলে ধরে সমাধানে কঠোর সিদ্ধান্ত নিলেন সিলেটের ডিসি
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

সিলেটের দীর্ঘদিনের কিছু সমস্যা তুলে ধরে সেগুলো দ্রুত সমাধানের ঘোষণা দিলেন নতুন যোগ দেওয়া জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম। তিনি সুরমার ঐতিহ্যবাহী কিনব্রিজ দখল করে তার উপর বসানো হাট উচ্ছেদের ঘোষণা দেন।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের ডেকে কিনব্রিজ সংরক্ষণসহ অন্যান্য নানা অনিয়ম তুলে ধরে দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন। এর আগে ঐতিহ্যের ব্রিজটি জঞ্জালমুক্ত করে সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন সিলেটবাসী।
জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম জানান, আগামী শনিবার থেকে কিন ব্রিজের উভয়প্রান্ত বন্ধ করে দেওয়া হবে। ফলে আর মোটরসাইকেল কিংবা হকার কেউই ব্রিজে প্রবেশ করতে পারবেন না। ঐতিহ্যের এই সেতুটি শুধু মানুষের হাঁটার জন্য খোলা থাকবে। এতে কিনব্রিজ দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ পদচারী সেতুতে পরিণত হবে। পর্যটকদের জন্যও এটি হবে এক অনন্য আকর্ষণ।
দিনে হকারদের দখল, রাতে বখাটে-মাদকসেবীদের আড্ডা এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে চলছিল সিলেটের ঐতিহাসিক কিনব্রিজের চিত্র। এর সঙ্গে যুক্ত ছিল ছিনতাইকারী ও অযাচিত নারীদের উৎপাত। অথচ এই ব্রিজ সিলেটের অন্যতম ঐতিহাসিক স্থাপনা এবং নগরীর সৌন্দর্যের প্রতীক। বহুবার উদ্যোগ নিয়েও এ পরিস্থিতি পরিবর্তন সম্ভব হয়নি।
এর আগে ২০১৯ সালে সেতুর প্রবেশ মুখে লোহার গেট বসিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করা হয়েছিল; কিন্তু স্থানীয় চাপ ও অদৃশ্য প্রভাবের কারণে কিছুদিনের মধ্যেই ভেঙে পড়ে সেই উদ্যোগ। এরপর আবারও শুরু হয় রিকশা ও মোটরসাইকেলের চলাচল। হকারদের দখলও বাড়তে থাকে। ধীরে ধীরে পথচারীরা সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন।
লোহার তৈরি লাল রঙের এই সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯৩৩ সালে এবং ১৯৩৬ সালে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। ১ হাজার ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৮ ফুট প্রস্থের এই সেতুর নামকরণ করা হয় আসামের তৎকালীন গভর্নর মাইকেল কিনের নামে। সময়ের পরিক্রমায় সিলেটের পরিচয়ের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে গেছে কিনব্রিজ। এখনো পর্যটকরা সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান দেন—তারা সিলেটে এসেছেন।
প্রশাসনের নতুন পদক্ষেপ ঘিরে সিলেটবাসীর প্রত্যাশা, এবার সত্যিই মুক্তি মিলবে হকার, মোটরসাইকেল আর রাতের অরাজকতা থেকে। আবারও কিনব্রিজ ফিরে পাবে তার স্বকীয় সৌন্দর্য ও ঐতিহ্যের মর্যাদা।
আরও পড়ুন