Advertisement

জুড়ী সীমান্তে ধসে গেছে সংযোগ সড়কসহ বেইলি সেতু, আমদানি-রপ্তানি ও যাত্রী পারাপার বন্ধ

প্রথম আলো

প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢলের তোড়ে সীমান্তের শূন্যরেখার কাছে সংযোগ সড়কসহ বেইলি সেতু ধসে গেছে। এতে বাংলাদেশ–ভারতে পণ্য আমদানি-রপ্তানিসহ যাত্রী পারাপার বন্ধ হয়ে পড়েছে। সোমবার দুপুরে মৌলভীবাজারের জুড়ীর বটুলি শুল্ক স্টেশন এলাকায়ছবি: প্রথম আলো
বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢলের তোড়ে সীমান্তের শূন্যরেখার কাছে সংযোগ সড়কসহ বেইলি সেতু ধসে গেছে। এতে বাংলাদেশ–ভারতে পণ্য আমদানি-রপ্তানিসহ যাত্রী পারাপার বন্ধ হয়ে পড়েছে। সোমবার দুপুরে মৌলভীবাজারের জুড়ীর বটুলি শুল্ক স্টেশন এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার বটুলি শুল্ক স্টেশন ও ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট এলাকায় সীমান্তের শূন্যরেখার কাছে সংযোগ সড়কসহ একটি বেইলি সেতু ধসে গেছে। এতে ওই সড়ক দিয়ে আজ সোমবার সকাল থেকে বাংলাদেশ ও ভারতে পণ্য আমদানি-রপ্তানিসহ যাত্রী পারাপার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বটুলি শুল্ক স্টেশনের বিপরীতে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পুরান রাঘনা বাজার শুল্ক স্টেশন পড়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েক বছর আগে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পাহাড়ি রাঘনাছড়ার ওপর বেইলি সেতুটি নির্মাণ করে। সেতুর পূর্ব প্রান্ত ভারত ও পশ্চিম প্রান্ত বাংলাদেশে পড়েছে। বছরখানেক আগে পশ্চিম প্রান্তে বাংলাদেশ অংশে সংযোগ সড়ক পাকাকরণ করা হয়। গতকাল রোববার রাতে প্রচুর বৃষ্টি হয়। রাঘনাছড়া দিয়ে উজানের পাহাড়ি ঢল নামে। এতে আজ সকালের দিকে বেইলি সেতুর পশ্চিম প্রান্তের সংযোগ সড়কে ধস দেখা দেয়। এর পর সেতুটির ওই প্রান্তও ধসে যায়। এ অবস্থায় পূর্ব প্রান্তে ভারতের পক্ষ থেকে সেতুতে উঠার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পশ্চিম প্রান্তে বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বেলা তিনটার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, রাঘনাছড়ায় পানি কমে গেছে। সেতুঘেঁষে সংযোগ সড়কের কিছু জায়গা ধসে পড়েছে। সেতুরও একই অবস্থা। দুই পাশে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে পূর্ব প্রান্তে ধসে পড়া সেতুর কাছে নতুন সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করেছে ভারত। ওই প্রান্তে কিছু স্থানে মাটি খুঁড়ে রাখা হয়েছে।

বটুলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের দায়িত্বে থাকা সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মোস্তফা হোসেন বলেন, সকাল আট-নয়টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে। প্রবল বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সড়ক ও সেতু ধসে পড়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অনির্দিষ্টকালের জন্য এ চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী পারাপার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমানে এ চেকপোস্ট দিয়ে শুধু ভারতীয় নাগরিকেরা বাংলাদেশে আসা-যাওয়া করতে পারেন। ভিসা সুবিধা না পাওয়ায় বাংলাদেশি নাগরিকেরা ভারত ভ্রমণে এ চেকপোস্ট ব্যবহার করতে পারেন না।

স্থানীয় লোকজন জানান, সকাল থেকে বটুলি শুল্ক স্টেশন দিয়ে কোনো পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়নি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সেখানে দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে বটুলি শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা সুমন আল মাসুদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করলে বটুলি শুল্ক স্টেশনের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট নাজমুল আলম আহমদ বলেন, তিনি ব্যক্তিগত কাজে দেশের বাইরে রয়েছেন। সংযোগ সড়কসহ সেতু ধসে পড়ার খবর সকালেই জেনেছেন। দুই দেশের পক্ষ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

নাজমুল আলম বলেন, বেইলি সেতুটি দীর্ঘ দিন ধরে নড়বড়ে ছিল। মাসখানেক আগে সিলেটে অবস্থিত ভারতের সহকারী হাইকমিশনের সহকারী হাইকমিশনার চন্দ্র শেখর বটুলি শুল্ক স্টেশন এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় বিভিন্ন দাবির পাশাপাশি নড়বড়ে বেইলি সেতুটি ভেঙে সেখানে নতুন সেতু স্থাপনের দাবি জানান তাঁরা। এরই মধ্যে ভারত সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে দিয়েছে। তবে, আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু রাখার স্বার্থে আপাতত ধসে পড়া সংযোগ সড়ক ও সেতু দ্রুত মেরামতে সরকারের উচ্চপর্যায়ে উদ্যোগ নিতে দাবি জানান নাজমুল আলম।

Lading . . .