কিনব্রিজে হকার বসতে পারবে না : ডিসি সরোয়ার
প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারোয়ার আলম বলেছেন, সিলেটের কিনব্রিজে আর কোনো হকার বসতে দেওয়া হবে না। এখন মোটরসাইকেল চলাচল করে। ব্রিজে আর মোটরসাইকেলও উঠতে দেওয়া হবে না। এটি শুধু হাঁটাহাটির জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।
তিনি বলেন, মোটরসাইকেল যাতে ব্রিজে উঠতে না পারে এ জন্য বিজ্রের দুই প্রবেশ মুখ বন্ধ করে দেওয়া হবে। আগামী শনিবার থেকেই এ কাজ শুরু হবে।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নতুন জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
সারোয়ার আলম বলেন, সিলেটের যে কয়টি ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে তার মধ্যে আলী আমজদের ঘড়ি অন্যতম। এ ঘড়িঘরে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এ নিয়ে আপত্তি উঠায় ঘড়িঘর থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আশপাশে অন্য কোথাও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, চাঁদনীঘাটে সুরমা নদীর তীরে ট্রাক পার্কিং করে রাখা হয়। ফলে এখানে যারা ঘুরতে আসেন তারা দুর্ভোগে পড়েন। এখন থেকে এখানে আর ট্রাক পার্কিং করতে দেওয়া হবে না। আগামী শনিবার থেকেই এ এলাকাকে পরিচ্ছন্ন করার কাজ শুরু হবে।
ফুটপাত হকারদের দখলে চলে যাওয়া বিষয়ে ডিসি বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে হকারদের পুনর্বাসনের একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। একটি জায়গাও নির্ধারণ করা আছে। এটি আবার কার্যকর করার উদ্যোগ গ্রহণ করব। ফুটপাত ও সড়ক দখলমুক্ত করতে হবে।
তিনি বলেন, আমি ঘুষ খাইনি, ঘুষ খাই না এবং ভবিষ্যতেও খাব না। কারও ব্যক্তিগত স্বার্থে কিংবা কোনো কমিউনিটির নাম ব্যবহার করে যদি আমার কাছে তদবির আসে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না। প্রশাসনকে পেশাদারভাবে পরিচালনা করতে হলে এসব অনৈতিক চাপ মোকাবিলা করতে হবে।
সারোয়ার আলম বলেন, সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা। তবে এ পেশাকে যারা নিজের স্বার্থে অপব্যবহার করছেন, সাংবাদিক নামধারী হয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছেন- তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভুঁইফোঁড় সাংবাদিকদের বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স নীতিতে থাকব।
১৯৩৩ সালে নির্মিত হয় ১ হাজার ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের ও ১৮ ফুট প্রস্থের কিনব্রিজ। এটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় ১৯৩৬ সালে। ভারতের আসাম প্রদেশের তৎকালীন গভর্নর মাইকেল কিনের নামেই কিনব্রিজ হিসেবে নামকরণ করা হয়। লোহা দিয়ে লাল ধনুকের মতো বাঁকানো এই সেতুটি পর্যটকদের কাছেও আকর্ষণীয়।
এর আগে ২০১৯ সালে ঐতিহ্যের এ সেতুটিকে সংরক্ষণ করতে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুসারে ওই বছরের ৩১ আগস্ট মধ্য রাতে কিনব্রিজের উভয় প্রবেশপথে লোহার বেষ্টনি লাগিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেতুর সামনে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ লেখা সাইনবোর্ড টানানো হয়। শুধু পথচারীরা সেতুটি ব্যবহার করার সুযোগ পান।
তবে কিনব্রিজ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার পর সেতুর দক্ষিণ পাড়ের বাসিন্দারা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তাদের যাতায়াত সুবিধার জন্য এ সেতু দিয়ে যান চলাচল অব্যাহত রাখার দাবি জানান। কিছুদিন পর কিনব্রিজের উভয় প্রবেশপথে লাগানো লোহার বেষ্টনি ভেঙে রিকশা চলাচল শুরু হয়। এরপর ধীরে ধীরে প্রায় পুরো বেষ্টনিই গায়েব হয়ে যায়।