প্রকাশ: ৮ আগস্ট, ২০২৫

সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সিলেট জেলা, মহানগর ও বিভিন্ন উপজেলা কমিটিতে পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে। সর্বশেষ পদত্যাগের তালিকায় নাম লেখালেন জুলাই আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে নিহত সাংবাদিক আবু তাহের মোহাম্মদ তুরাবের ভাই আবুল আজরফ আহসান জাবুর। এ নিয়ে সিলেটে এনসিপি থেকে ১০ জন পদত্যাগ করলেন।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাতে নিজেই কালবেলাকে তার পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক বরাবর পদত্যাগপত্র দাখিল করেছি।’
শহীদ সাংবাদিক আবু তাহের মোহাম্মদ তুরাবের ভাই আবুল আজরফ আহসান জাবুর সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌরসভার ফতেহপুর গ্রামের বাসিন্দা। গত ১৯ জুন রাতে এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের স্বাক্ষরিত জেলার সমন্বয় কমিটিতে প্রধান সমন্বয়কারী পদ পান নাজিম উদ্দিন শাহান। সেই কমিটিতে যুগ্ম সমন্বয়কারী পদে ছিলেন শহীদ সাংবাদিক এটিএম তুরাবের ভাই আবুল আজরফ আহসান জাবুর।
আবুল আজরফ আহসান জাবুর তার পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেন, তিনি এনসিপি সিলেট জেলা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী। ব্যক্তিগত ও পারিবারিকভাবে ব্যস্ত থাকায় দলের কার্যক্রমে সময় দিতে পারছেন না। তাই স্বপদে বহাল থাকা নতুন রাজনৈতিক দলের বন্দোবস্তের মধ্যে পড়ে না। স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে অব্যাহতি ও পদত্যাগ করার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে কমিটি ঘোষণার পর সম্প্রতি সিলেটে এনসিপি থেকে বারবার নেতাকর্মীদের পদত্যাগের ঘটনা ঘটছে। কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়া, না জানিয়ে কমিটিতে রাখাসহ নানা কারণে তারা পদত্যাগ করেছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। এ পর্যন্ত সিলেটে এনসিপি থেকে পদত্যাগ করেছেন ১০ জন নেতা।
গত ১২ জুলাই কমিটি ঘোষণার পরদিন বিশ্বনাথ ও গোয়াইনঘাট উপজেলা কমিটি থেকে চার নেতা পদত্যাগ করেন। এদের মধ্যে গোয়াইনঘাট উপজেলা কমিটি থেকে সদস্য ফাহিম আহমদ ও যুগ্ম সমন্বয়কারী নাদিম মাহমুদ এবং বিশ্বনাথ উপজেলা কমিটি থেকে যুগ্ম সমন্বয়কারী রুহুল আমিন ও সদস্য শাহেদ আহম্মেদ পদত্যাগ করেন। এর দুইদিন পর ১৪ জুলাই বিয়ানীবাজার উপজেলা কমিটির সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন রুহুল আমিন নামে আরেক নেতা।
এ ছাড়া গত ২১ জুলাই গোয়াইনঘাট উপজেলা কমিটি থেকে আরও চার নেতা পদত্যাগ করেন। এরা হলেন যুগ্ম সমন্বয়কারী এনামুল হক মারুফ, সদস্য তরিকুল ইসলাম, কিবরিয়া আহমদ ও কামরুল হাসান।
পদত্যাগের বিষয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী এমডি সালাহ উদ্দিন সাজু কালবেলাকে বলেন, ‘রাজনৈতিক দলে যোগদান এবং পদত্যাগ একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তা ছাড়া এনসিপি এ দেশের একটু রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের নতুন একটি দল। দেশের বিভিন্ন এলাকায় এনসিপির কমিটি ঘোষণার পর থেকে পারিবারিক সদস্য, আত্মীয়স্বজন কিংবা বিভিন্ন সূত্রে পরিচয় থাকার সুবাদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের চাপ সৃষ্টি করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করায় কিছু কিছু নেতাকর্মী কমিটি থেকে পদত্যাগ করছেন।
তিনি বলেন, পদত্যাগ নিয়ে এনসিপির হাইকমান্ডের দুশ্চিন্তার কিছুই নেই। বরং এনসিপি আরও বৃহৎ পরিসরে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে আস্থা ও নির্ভরযোগ্য রাজনৈতিক দল হিসেবে স্থান করে নেবে ইনশাআল্লাহ।