Advertisement

অ্যাপল কি এত বোকা

জাগোনিউজ টোয়েন্টিফোর

প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

অ্যাপল কি এত বোকা
অ্যাপল কি এত বোকা

অ্যাপলের মতো মেধাবী প্রতিষ্ঠান পৃথিবীতে কম আছে। সে যে এত বড়, তার পেছনে কারণ তাদের মেধা। তবে এ বছর নতুন হ্যান্ডসেটের ঘোষণা দিতে গিয়ে তারা যা করেছে, তা দেখে কেউ কেউ ভাবতে পারেন, অ্যাপল কি বোকা নাকি?

অ্যাপল প্রি-অর্ডার নিতে শুরু করেছে আইফোন ১৭ সিরিজের। সম্প্রতি তারা এই সিরিজের তিনটি ফোনের বিস্তারিত জানিয়েছে। মডেলগুলো হলো আইফোন ১৭, আইফোন ১৭ প্রো, আইফোন ১৭ প্রো ম্যাক্স। এ তিনটির বাইরে একটি ব্যতিক্রম ফোন ছিল আইফোন এয়ার, যা নিয়ে হইচই পড়ে গেছে। নতুন কী আছে সেটগুলোতে? কীভাবে প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে এগিয়ে থাকবে সে? আর যেটাকে অনেকে অ্যাপলের বোকামো ভাবতে পারে, সেটা কি আসলে বোকামো নাকি ব্যবসায়িক কৌশল?

আইফোন ১৬-এর ২৫৬ গিগাবাইট সংস্করণের দাম ছিল ৮৯৯ ডলার। একই ধারণক্ষমতার নতুন আইফোন ১৭-এর দাম শুরু হয়েছে ৭৯৯ ডলার থেকে। আইফোন ১৭ প্রো শুরু হয়েছে ১ হাজার ৯৯ ডলার থেকে। আইফোন ১৭ প্রো ম্যাক্সের দাম সর্বনিম্ন ১ হাজার ১৯৯ ডলার। ২৫৬ গিগাবাইট ধারণক্ষমতার আইফোন এয়ারের দাম শুরু হয়েছে ৯৯৯ ডলার থেকে। কোনটি নেবে গ্রাহক? নিশ্চয়ই কম দামেরটা? কিন্তু কেন? টাকা যাদের সমস্যা নয়, তারা কিন্তু দামের দিকে তাকাবেন না। কিন্তু বেশিরভাগ গ্রাহক ৭৯৯ ডলারের ফোনটি নিতে চাইবেন। এতে বিক্রি কম হবে বেশি দামেরগুলোর। এটা কি বোকামি?

অ্যাপল কি এত বোকা

অ্যাপল কি এত বোকা

অ্যাপল বোকা নয়। তারাও বুঝে ফেলেছে যে, সবচেয়ে দামি স্মার্টফোনের সেই আগের ক্রেজ তাদের ফোনের নেই। কারণ স্যামসাং, গুগলের পিক্সেলের সঙ্গে দৌড়ে সে পিছিয়ে পড়েছে। নতুন সেটের ঘোষণার দিনের কথা যদি কারো মনে থাকে, দেখবেন এআই নিয়ে সেদিন তেমন কোনো কথা বলেনি প্রতিষ্ঠানটি। অথচ ঠিক আগেরবার সেটাই ছিল সবচেয়ে জরুরি খবর। নতুন ফোনে তাহলে কী আছে!

যা আছে অ্যাপলের নতুন ফোনে
অ্যাপল সব পুরোনো জিনিসই দিয়েছে। কিন্তু যে জিনিস গ্রাহক অনেক দিন ধরে চাইছিল, সেটাও দিয়েছে এবার। সেটা হচ্ছে রিফ্রেশ রেট! ১২০ হার্জ রিফ্রেস রেট আর সেটা সব সময় দেখা যাবে ডিসপ্লের ওপরে। আইফোনের সেরা সংস্করণ ১৪, ১৫, ১৬, প্রতিটা ফোনেই এটি ছিল ৬০ হার্জ। প্রতি বছর দাবি উঠতো, ১২০ হার্জ দেওয়া হোক। অন্তত ৯০ হার্জ দিলেও খুশি হওয়া যেত। কিন্তু একলাফে তারা ১২০ হার্জই দিয়ে দিলো!

নতুন ফোনে আরও আছে বায়নিক এ নাইন চিপ। ফ্রন্ট ক্যামেরা ১২ মেগাপিক্সেল থেকে বাড়িয়ে আপগ্রেড করে দিয়েছে, ফার্স্ট চার্জিং শিটটাও সামান্য বাড়িয়েছে, স্টোরেজ ১২৮ জিবি থেকে করেছে ২৫৬ জিবি, কিন্তু দামটা তুলনামূলক কম রেখেছে। ১২৮ এর যে দাম, তার থেকে ২৫৬ সামান্য কিছু টাকা বাড়তি। ১৭-এ আল্ট্রা ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স আপগ্রেড হয়েছে, ১২ থেকে ৪৮ মেগাপিক্সেল। কিন্তু কেন? কম দামে বেশি সুবিধার কারণ কী?

অ্যাপল কি এত বোকা

অ্যাপল কি এত বোকা

যে কারণে সেটের উন্নয়ন, দামে অবনয়ন
অ্যাপল চায় প্রো বা ম্যাক্স নয়, আইফোন ১৭ বিক্রি হোক বেশি বেশি। প্রতি বছর প্রো সংস্করণগুলো বেশি বিক্রি করতে চেয়েছে তারা। কারণ, দাম বেশি। বিক্রি হলে লাভ বেশি হবে। কিন্তু যেখানে সার্বিকভাবে আইফোনের চাহিদাই কমে যাচ্ছে, সেখানে প্রো দিয়ে কী হবে? চীন, যুক্তরাষ্ট্র সব জায়গায় বিক্রি কমে গেছে, এমনকি মার্কেট শেয়ারও। উল্টো ঘটনা ঘটেছে স্যামসাংয়ের ক্ষেত্রে। প্রিমিয়াম ফোনের মার্কেট শেয়ার বেড়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে অ্যাপলের জায়গায় অন্য প্রতিষ্ঠান কী করতো? ফ্ল্যাগশিপ ফোনকে আরও ভালো করার চেষ্টা করতো। প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে চেষ্টা করতো এবং পরাজিত হতো। কারণ এত দামি ফোনে এআই নেই, ফলে জিনিসটার প্রতি মানুষের আগ্রহ যাবে কমে। তাই অ্যাপল হাঁটলো উল্টো পথে। প্রো সংস্করণের বদলে নিয়ে এলো ১৭, দেদারসে বিক্রি করার জন্য।

আইফোন ১৭ কতটা ভালো
ফোন হিসেবে আইফোন ১৭ নিখুঁত। ডিসপ্লের ব্রাইটনেস বেড়ে গেছে। ডিসপ্লের আকার এখন ৬.৩ ইঞ্চি। যারা ভাবতেন একদিন আইফোন কিনবেন, কিন্তু ৬০ হার্জ বলে কেনেননি, তারাও এবার এটি কিনতে চাইবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অ্যালুমিনিয়াম বডি দেওয়া হয়েছে খরচ কমানোর জন্য। যদিও ফ্রেম ও ব্যাক প্যানেল আলাদা নয়। পুরো একটা ঢালা ছাঁচের মতো। সেটার ঠিক মাঝখানে একটা জায়গা আছে, যেটা ম্যাগনেটিক কয়েলের জন্য, ওয়ারলেস চার্জারের জন্য।

আগে যখন ফোনের ব্যাক সাইডে গ্লাস থাকতো, পুরোটা জুড়েই থাকতো। তখন ফোনের ব্যাক প্যানেল কোনভাবে ভেঙে গেলে মেরামত করতে খরচ হতো বেশি। এবার যেহেতু পুরোটাই মেটাল বডি, তাই ভেঙে যাওয়ার ভয় কম। ব্যাক সাইডে গ্লাসের পরিমাণও কমে গেছে। তাই ভাঙার সম্ভাবনা যেমন কমেছে, তেমনি ভাঙলে মেরামতের খরচও কমে যাবে।

অ্যাপল কি এত বোকা

Lading . . .