প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

গর্ভধারণ ও ওজন বৃদ্ধির জন্য ত্বক প্রসারিত হয়। তাই ত্বক ফাটা বা চুলকানি হতে পারে। বিশেষত পেটের ত্বকে বেশি হয়। এ ছাড়া হাত, পা বা স্তনেও হতে পারে।
ত্বকের শুষ্কতা চুলকানির একটি কারণ। ত্বক প্রসারিত হওয়ার সময় ত্বকের কোলাজেন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে প্রদাহ হতে পারে। শুষ্ক ত্বকে এটি বেশি হয়।
গর্ভকালে থাইরয়েডের সমস্যা দেখা দিলে ত্বকের শুষ্কতা বেড়েও চুলকানি হয়।
যাঁদের আগে থেকে ত্বকের সমস্যা বা অ্যালার্জি আছে, তাঁদের এ সময় সমস্যার তীব্রতা বাড়তে পারে।
গর্ভাবস্থায় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায় বলে নানা ছত্রাক সংক্রমণ হতে পারে।
অনেক ঘাম হলে হতে পারে ঘামাচিও।
হরমোনের প্রভাবে গর্ভকালে পিত্তরস প্রবাহে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে হতে পারে তীব্র চুলকানি।
শুষ্ক ত্বকে চুলকানি বেশি হয়। তাই ত্বক আর্দ্র রাখতে হবে।
ভালো মানের ময়েশ্চরাইজার, অলিভ অয়েল বা নারকেল তেল ত্বকে দিতে হবে।
প্রচুর পানি পান করতে হবে।
চুলকানির জায়গায় ভেজা কাপড় বা বরফের সেঁক দিলে আরাম পাওয়া যায়।
ক্যালামাইনযুক্ত লোশন বা মেনথল ব্যবহারে ত্বক শীতল হয় ও আরাম পাওয়া যায়।
সুতি ও ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে। এ সময় গরম ও ঘাম বেশি হয়। এমন কাপড় পরতে হবে, যেন বাতাস চলাচল করে।
ঘামে ভেজা কাপড় দ্রুত পাল্টে ফেলতে হবে।
রাতে ঘুমানোর সময় পাতলা ঢিলেঢালা পোশাক পরবেন। বাতাস চলাচল করে, এমন ঘরে ঘুমাবেন।
নিজের পোশাক, বিছানার চাদর, তোয়ালে ইত্যাদি পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কারও ব্যবহার্য জিনিসপত্র ব্যবহার করবেন না।
যাঁদের অ্যালার্জি ও একজিমা–জাতীয় সমস্যা আছে, তাঁরা ধুলাবালু, পশুপাখির লোম ও অ্যালার্জেনযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলবেন।
সাধারণ চুলকানিতে গর্ভকালীন নিরাপদ এমন অ্যান্টি হিস্টামিন ওষুধ সেবন করা যায়। হরমোনের সমস্যাটা কেবল অন্তঃসত্ত্বাদেরই হয়ে থাকে। এটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা। এতে তীব্র চুলকানি ও লিভারের পরীক্ষায় সমস্যা শনাক্ত হয়।
এ ক্ষেত্রে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অনেক সময় আরসোডিঅক্সিকোলিক অ্যাসিড ব্যবহার করা হয়।
একজিমা বা অ্যালার্জির ক্ষেত্রে ইমোলিয়েন্ট, অয়েন্টমেন্ট, স্টেরয়েড মলম ইত্যাদি চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যবহার করতে হবে।
গর্ভাবস্থায় মুখে খাবার অ্যান্টি ফাঙ্গাল বা ছত্রাকরোধী ওষুধ সাধারণত নিরাপদ নয়। বাহ্যিক মলম বা ক্রিমে না সারলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে তার যথাযথ চিকিৎসা করতে হবে।
ডা. ফারজানা শারমিন , সহযোগী অধ্যাপক, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগ, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়