Advertisement

প্রসব–পরবর্তী মানসিক সমস্যার কারণ, ঝুঁকি ও করণীয়

প্রথম আলো

প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

প্রসবের পর প্রায় ৫ শতাংশ মা গুরুতর বিষণ্নতায় ভুগতে পারেনপ্রতীকী ছবি: প্রথম আলো
প্রসবের পর প্রায় ৫ শতাংশ মা গুরুতর বিষণ্নতায় ভুগতে পারেনপ্রতীকী ছবি: প্রথম আলো

প্রসবপরবর্তী মানসিক সমস্যাগুলোর অন্যতম ‘ম্যাটারনিটি ব্লু’ বা ‘পোস্ট পারটাম ব্লু’। প্রতি তিনজন মায়ের দুজনের এ সমস্যা হয়। খিটখিটে মেজাজ, বিরক্তি, দুঃখবোধ, দ্রুত মুড সুইং, মনোযোগ কমে যাওয়া, ঘুম ও খাবারের সমস্যা ইত্যাদি দেখা যায়।

সাধারণত কোনো চিকিৎসার দরকার হয় না। সুষম খাবার, পর্যাপ্ত ঘুম ও সর্বোপরি মানসিক সমর্থন পেলেই একজন মা এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারেন।

প্রসবের পর প্রায় ৫ শতাংশ মা গুরুতর বিষণ্নতায় ভুগতে পারেন। এর লক্ষণগুলো তীব্র ও দীর্ঘমেয়াদি। সাধারণত প্রসবের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এটি শুরু হয়। মুড সুইং, অতিরিক্ত কান্না, শিশুর সঙ্গে বন্ধন তৈরিতে অনীহা, একাকিত্ব বোধ করা, গ্লানি, অরুচি, সন্তানের ক্ষতি এমনকি আত্মহত্যার চিন্তাও আসতে পারে মায়ের মনে।

তবে সবার মধ্যে যে সব লক্ষণ থাকবে, তা নয়। এ ক্ষেত্রে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

আরেকটি সমস্যা হয়; সাইকোসিস। প্রতি হাজারে এক থেকে দুজন মায়ের এ সমস্যা হয়। বিভ্রান্তি, সন্দেহপ্রবণতা, শিশুর বিষয়ে অবসেশন, হ্যালুসিনেশন, ডিলিউশন, নিজের বা সন্তানের ক্ষতি এমনকি মেরে ফেলার মতো কাজ করারও প্রবণতা হতে পারে।

সময়মতো চিকিৎসা শুরু হলে ৭৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই মা সুস্থ হয়ে যান। তবে অবশ্যই মাকে মনোরোগ ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের (গাইনোকলোজিস্ট) তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে।

মায়ের শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনের হঠাৎ ওঠানামা বা তারতম্য।

পরিবারের সহানুভূতি ও সহযোগিতার অভাব, একাকিত্ব এবং ভালোবাসা না পাওয়া।

গর্ভকালীন চিকিৎসা ও শিশুর যত্ন নেওয়ায় আর্থিক সংগতি না থাকা।

অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভাবস্থা, বাল্যবিবাহ, স্বামীর দ্বারা শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন ও দাম্পত্য কলহের মতো কারণে এসব সমস্যায় পড়তে হয় মাকে।

মায়ের মানসিক সমস্যা প্রতিরোধে গর্ভধারণের পরিকল্পনা করার সময় থেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রসবের পর মা নিজেও নবজাতককে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এতে মায়ের যত্ন ও বিশ্রাম ব্যহত হয়। তাই স্বামীসহ পরিবারের সব সদস্যকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।

ডা. সারাবান তহুরা , কনসালট্যান্ট, গাইনি অ্যান্ড অবস, আলোক মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার, ঢাকা

Lading . . .