তরুণ-তরুণীরাও কেন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

তরুণী দিশারী। সোনালি চুলের মায়াবী চেহারার অষ্টাদশী এক মেয়ে চেম্বারে এলেন। কিন্তু সৌন্দর্যকে ছাপিয়ে গেল তাঁর অশ্রুসজল বিষণ্ন চোখ দুটো। বললেন, ‘ভালোই ছিলাম। হঠাৎ কয়েক দিন দুর্বল লাগাতে মা বলছিলেন কিছু পরীক্ষা করাতে।
ভেবেছিলাম হয়তো খাওয়াদাওয়া বেশি করে করলে ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু না, পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছিলাম না, শুধু শুয়ে থাকতে ইচ্ছা করে। এক বান্ধবী বলল ডায়াবেটিস পরীক্ষা করতে। উড়িয়ে দিয়েছি তার কথা, এ বয়সে আবার কিসের ডায়াবেটিস? কিন্তু বান্ধবীর বাসায় আন্টি (বান্ধবীর মা) পরীক্ষা করার সময়, কী মনে করে আমিও টেস্ট করলাম—পেলাম ১৪ (মিলিমোল/লি) আমার বিশ্বাস হয়নি, মেশিন নষ্ট বোধ হয়। ল্যাবে টেস্ট করলাম, ১৫.৫ (মিলিমোল/লি)।
মাথার ওপর আকাশ ভেঙে পড়ল। আমার এ বয়সে ডায়াবেটিস? এটা তো জানতাম বয়স্কদের রোগ, রিপোর্ট পাওয়ার পর থেকে মনটা ভীষণ খারাপ।’ তাঁর আকুতি, ‘আপনি আমার ডায়াবেটিস ভালো করে দেন প্লিজ।’
দিশারীর মতো অনেকেরই ধারণা, ডায়াবেটিস বয়স্কদের রোগ। কিন্তু না, ডায়াবেটিস যে কারও যেকোনো বয়সে হতে পারে। বয়সভেদে এর প্রকার ও চিকিৎসা ভিন্ন। মূলত চার ধরনের ডায়াবেটিসের মধ্যে টাইপ ওয়ান ও টাইপ টু ডায়াবেটিসই সর্বাধিক পরিচিত, যা সাধারণত যথাক্রমে শিশু ও পরিণত বয়স্কদের হয়ে থাকে।
তবে আজকে আমরা মূলত শিশু-কিশোর ও তরুণ-তরুণীদের ডায়াবেটিস নিয়ে আলোচনা করব। ১৮ বছরের নিচের শিশুদের ডায়াবেটিস প্রধানত টাইপ ওয়ান হলেও তাদের কিন্তু টাইপ টু ডায়াবেটিসও হতে পারে। তরুণদের মধ্যে টাইপ টু ডায়াবেটিসের প্রাদুর্ভাব আজকাল আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাচ্ছে, যার উদাহরণ দিশারী।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে তরুণদের ডায়াবেটিসের হার ৪ দশমিক ২ শতাংশ। যদিও সব ডায়াবেটিসেই রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। তবে ডায়াবেটিস ভেদে এর কারণ ভিন্ন।
খাদ্যের শর্করা অগ্ন্যাশয় থেকে নিঃসৃত ইনসুলিন নামক হরমোনের মাধ্যমে আমাদের কোষে ঢুকে নানা বিপাকীয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শক্তি উৎপাদন করে। যদি কোনো কারণে অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নিঃসরণ না হয় বা অপর্যাপ্ত হয় অথবা ইনসুলিন পর্যাপ্ত নিঃসরণ হওয়া সত্ত্বেও তার কর্মক্ষমতা হ্রাস পায় (ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স); তবে শর্করা কোষে ঢুকতে পারে না এবং তা রক্তেই থেকে যায়। এটাই ডায়াবেটিস।
রক্তে গ্লুকোজের ভারসাম্য রক্ষা নির্ভর করে মূলত অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নিঃসরণের মাত্রা এবং আমাদের মাংসপেশি, চর্বি কোষ ও লিভারে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতার ওপর।
ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা হ্রাস পেলে, অগ্ন্যাশয় বেশি বেশি ইনসুলিন নিঃসরণ করে গ্লুকোজের ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করে। অতিরিক্ত ইনসুলিন সরবরাহ করতে গিয়ে অগ্ন্যাশয়ের ইনসুলিন নিঃসরণকারী কোষগুলো একসময় ক্লান্ত ও অকার্যকর হয়ে পড়ে এবং পর্যাপ্ত প্রয়োজন মেটাতে অক্ষম হয়।
ফলে রক্তে সুগারের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং ডায়াবেটিস রোগ সৃষ্টি হয়। ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার অন্যতম কারণ স্থূলতা এবং এটিই তরুণদের ডায়াবেটিসে মূল ভূমিকা পালন করে, যা মূলত অস্বাস্থ্যকর ও অনিয়ন্ত্রিত খাদ্য গ্রহণ, কায়িক পরিশ্রমের অভাব, সারাক্ষণ শুয়ে-বসে থাকার অভ্যাস, সুষম খাবারের পরিবর্তে ফাস্ট ফুড বা জাঙ্ক ফুডে আসক্তি, দীর্ঘক্ষণ মুঠোফোন, ল্যাপটপ ও অন্য ডিভাইসে মগ্ন থাকা এগুলো থেকেই দেখা দেয়। এ ছাড়া বয়ঃসন্ধিকালেও সাধারণত ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা স্থূল ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তাদের ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা ৫০ শতাংশ কম থাকে, যারা স্থূলতায় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নয় তাদের তুলনায়। এমনকি এদের ইনসুলিন নিঃসরণের ক্ষমতাও কালক্রমে ৮৫ শতাংশ কমে যায়।
এ ছাড়া দেখা গেছে স্থূলতার পাশাপাশি এডিপোনেকটিন নামের একটি হরমোন, যা আমাদের খাদ্যতৃপ্তি বাড়িয়ে ক্ষুধা কমায় এবং ইনক্রিটিন, যা ইনসুলিন নিঃসরণ বাড়ায়, এ হরমোনগুলো কমে যায়, যা তারুণ্যের ডায়াবেটিসে বাড়তি মাত্রা যোগ করে। পারিবারিক ইতিহাস, জিনগত কারণ এবং অন্যান্য হরমোনজনিত রোগের কারণেও তরুণদের ডায়াবেটিস হতে পারে।
জিনগত কারণের মধ্যে ম্যাচিউরিটি অনসেট ডায়াবেটিস অব দ্য ইয়াং (এমওডিআই) উল্লেখযোগ্য, যা সাধারণত ২৫ বছরের আগেই দেখা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে ইনসুলিন নিঃসরণ কমে যায় কিছুটা; কিন্তু ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা অনেকাংশে ঠিক থাকে, যদি স্থূলতা না থাকে। পরিবারের এ ধরনের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত আরও সদস্য থাকতে পারে।
সামাজিক প্রেক্ষাপট, মানসিক ও সামাজিক চাপ, বিষণ্নতা ও ঘুমের ব্যাঘাত, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে অপর্যাপ্ত ঘুম মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে, যা তারুণ্যের ডায়াবেটিস সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে।
তারুণ্যের ডায়াবেটিসের কারণগুলোর মধ্যে কিছু অপরিবর্তনীয়। যেমন পারিবারিক ইতিহাস, জিনগত সমস্যা, মায়ের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস ও বয়ঃসন্ধিকাল। এ কারণগুলোর সঙ্গে যখন অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অকর্মণ্যতা, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন প্রণালি ও বিশেষ করে স্থূলতা যুক্ত হয়, প্রকারান্তরে তা তরুণদের মধ্যে টাইপ টু ডায়াবেটিসের জন্ম দেয়। অথচ সচেতনতার মাধ্যমে এগুলো সহজেই নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
সামাজিক প্রেক্ষাপট, মানসিক ও সামাজিক চাপ, বিষণ্নতা ও ঘুমের ব্যাঘাত, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে অপর্যাপ্ত ঘুম মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে, যা তারুণ্যের ডায়াবেটিস সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে।
যাদের স্থূলতা আছে, সঙ্গে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা হ্রাসের কিছু চিহ্ন, যেমন ঘাড় বা বগলের নিচে কালো হয়ে যাওয়া, উচ্চ রক্তচাপ, চর্বির আধিক্য, মেয়েদের ডিম্বাশয়ে সিস্ট এবং জন্মকালীন কম ওজনের ইতিহাস আছে, এদের ক্ষেত্রে ১০ বছর বয়সে অথবা বয়ঃসন্ধিকালে অথবা যেটি আগে আগে (বয়ঃসন্ধিকাল বা ১০ বছর) তখনই তাদের ডায়াবেটিস পরীক্ষা করতে হবে।
পরীক্ষার নিয়ম বয়স্কদের মতোই খালি পেটে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ৭ (মিলিমোল/লি) বা তার বেশি অথবা ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার দুই ঘণ্টা পর ১১.১–এর বেশি, যেকোনো সময় ডায়াবেটিসের জরুরি অবস্থার লক্ষণের সঙ্গে গ্লুকোজের মাত্রা ১১.১ মিলিমোল/লি অথবা তিন মাসের গড় ৬.৫ শতাংশ বা তার বেশি, এর যেকোনো একটি পাওয়া গেলেই ডায়াবেটিস হয়েছে ধরে নেওয়া হবে।
জিনগত কারণ ধারণা করলে কিছু জেনেটিক টেস্ট করতে হবে। তবে এ বয়সে যেহেতু টাইপ ওয়ান, টু দুটোই হতে পারে, তাই টাইপ ওয়ান আশঙ্কা দূর করার জন্য রক্তের অ্যান্টিবডিও পরীক্ষা করতে হবে। কেননা এ ধরনের ডায়াবেটিসের চিকিৎসা ভিন্ন এবং রোগ নির্ণয়ে অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় কালক্ষেপণ করলে মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে।
তারুণ্যের ডায়াবেটিসের লক্ষণ নানা রকম হতে পারে। স্থূলতার পাশাপাশি অবসাদগ্রস্ততা, ঘা শুকাতে দেরি হওয়া, মেয়েদের বারবার বাচ্চা নষ্ট হওয়া, বন্ধ্যত্ব, অনিয়মিত মাসিক, ঘন ঘন প্রস্রাবে ইনফেকশন, এমনকি ডায়াবেটিসের জরুরি অবস্থা নিয়েও এ রোগ প্রথম দেখা দিতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে কোনো রকম লক্ষণই থাকে না, যেমনটা দিশারীর ক্ষেত্রে হয়েছিল।
চিকিৎসাক্ষেত্রে প্রথমেই গুরুত্ব দিতে হবে পরিমিত ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, কর্মহীনতা বা অকর্মণ্যতা দূর করে কায়িক পরিশ্রমের মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়া। এ বিষয়ে রোগী ও তার পরিবারের সদস্যদের সচেতন করতে হবে। এ বয়সের ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় পরিবারের লোকজনকেও সম্পৃক্ত করতে হবে।
বয়স্কদের তুলনায় তরুণদের ডায়াবেটিসজনিত জটিলতাগুলো আগেই দেখা দেয়, যা এমনকি মৃত্যুর কারণও হতে পারে। তাই তরুণদের ডায়াবেটিস চিকিৎসায় স্থূলতা এবং এর জটিলতা থাকলে সেগুলোকে প্রাধান্য দিয়েই চিকিৎসা নির্ধারণ করতে হবে। শুধু রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণই মুখ্য উদ্দেশ্য যেন না হয়।
তবে যে জিনিসটা আমরা অবহেলা করি, তা হলো মানসিক সাপোর্ট, যা এ বয়সের জন্য খুবই জরুরি। সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন ৩০ থেকে ৬০ মিনিট মধ্যম বা উচ্চ মাত্রার ব্যায়াম করতে হবে।
ডায়াবেটিসের ওষুধ নির্ধারণে স্থূলতাকে গুরুত্ব দিয়ে ওষুধ নির্ধারণ করতে হবে। বর্তমানে অনেক আধুনিক ওষুধ আবিষ্কৃত হয়েছে, যা একই সঙ্গে ডায়াবেটিস ও স্থূলতা দুটোই নিয়ন্ত্রণ করে। যাদের ডায়াবেটিসের গড় ৮.৫ শতাংশের নিচে, তাদের মেটফরমিন–জাতীয় ওষুধ দিয়ে শুরু করা হয়।
পরে পর্যায়ক্রমে প্রয়োজনবোধে অন্য ওষুধ যোগ করা হয়। যাদের গড় ৮.৫ শতাংশের বেশি, তাদের মেটফরমিনের পাশাপাশি ইনসুলিন শুরু করতে হবে। তবে যদি ডায়াবেটিসের জরুরি অবস্থা দেখা দেয়, তবে শিরায় ইনসুলিন ইনজেকশনের মাধ্যমে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দিতে হবে।
নারী রোগীদের ক্ষেত্রে বাচ্চা নেওয়ার তিন মাস আগে ইনসুলিন নিয়ে কঠোরভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে তবেই বাচ্চা নিতে হবে। বাচ্চার ক্ষতি হবে, এমন ওষুধের ব্যাপারে আগেই সচেতন হতে হবে এবং তা বন্ধ করে দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাচ্চা নেওয়ার আগে ওষুধ পরিবর্তন করতে হবে।
বিশেষ কিছু ক্ষেত্র, যেমন অতিরিক্ত স্থূলতা ও অন্যান্য জটিলতার ক্ষেত্রে মেটাবলিক সার্জারির একটা ভূমিকা আছে।
তিন মাস অন্তর ডায়াবেটিসের গড় পরীক্ষা করতে হবে এবং তা ৭ শতাংশের নিচে রাখতে হবে। যদি সম্ভব হয় ৬.৫ শতাংশের নিচে রাখা ভালো। তবে তা হাইপোগ্লাইসেমিয়ার বিনিময়ে যেন না হয়, এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে নানান জটিলতা হতে পারে।
যেমন উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি, নার্ভ ও চোখের সমস্যা, লিভারে চর্বি জমা, স্থূলতার জন্য ঘুমের ব্যাঘাত, অতিরিক্ত নাকডাকা ও দিনে বেশি ঘুম পাওয়া (অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া), মেয়েদের ডিম্বাশয়ে সিস্ট, হৃদ্রোগ, চর্বির আধিক্য ও মানসিক চাপ, বিষণ্নতায় আক্রান্ত হওয়া। যেহেতু তরুণদের ডায়াবেটিস দিন দিন বেড়ে চলেছে, তাই এ বিষয়ে অধিকতর গবেষণা প্রয়োজন।
তিন মাস অন্তর ডায়াবেটিসের গড় পরীক্ষা করতে হবে এবং তা ৭ শতাংশের নিচে রাখতে হবে। যদি সম্ভব হয় ৬.৫ শতাংশের নিচে রাখা ভালো। তবে তা হাইপোগ্লাইসেমিয়ার বিনিময়ে যেন না হয়, এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে নানান জটিলতা হতে পারে।
বাংলাদেশের এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ২৫ জনে ১ জন তরুণ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, এমনকি এদের দুই-তৃতীয়াংশ জানেই না যে তাদের ডায়াবেটিস আছে।
তরুণদের ডায়াবেটিসের অন্যতম কারণ স্থূলতা। বয়স্কদের ডায়াবেটিসের সঙ্গে তাদের ডায়াবেটিসের মূল পার্থক্য হলো তরুণদের ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা কম ও ইনসুলিন নিঃসরণকারী কোষের সংবেদনশীলতা বেশি। ফলে তাড়াতাড়ি ইনসুলিন নিঃসরণকারী কোষগুলো ক্ষয় হয়ে যায়। এমনকি বয়স্কদের তুলনায় তরুণদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ওষুধের রেসপন্সও কম থাকে।
সর্বোপরি বয়স্কদের তুলনায় তরুণদের ডায়াবেটিসজনিত জটিলতাগুলো আগেই দেখা দেয়, যা এমনকি মৃত্যুর কারণও হতে পারে। তাই তরুণদের ডায়াবেটিস চিকিৎসায় স্থূলতা এবং এর জটিলতা থাকলে সেগুলোকে প্রাধান্য দিয়েই চিকিৎসা নির্ধারণ করতে হবে। শুধু রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণই মুখ্য উদ্দেশ্য যেন না হয়।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এমনিতেই বেশি। তদুপরি তরুণদের ডায়াবেটিস এক হতাশাজনক বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে। এ এক অশনিসংকেত! কেননা এই তরুণেরাই সমাজ বদলায়, দেশের হাল ধরে একটা সময়।
যারা দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে, তারাই যদি অল্প বয়সে দীর্ঘমেয়াদি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়, তাহলে তারা ত্রাণকর্তা না হয়ে হতে পারে জাতির বোঝা। তাই সময় থাকতেই সবার সচেতন হতে হবে এবং প্রতিরোধে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। তবেই দিশারীরা সত্যিকারের আলোর দিশারী হয়ে উঠবে।
ডা. ফারহানা আক্তার: অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ডায়াবেটিস ও হরমোন রোগ বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ