Advertisement

পিত্তথলিতে পাথর বা গলব্লাডার স্টোন কেন হয়, কারা বেশি ঝুঁকিতে

প্রথম আলো

প্রকাশ: ২৬ আগস্ট, ২০২৫

পিত্তথলিতে পাথর বা গলব্লাডার স্টোন খুবই পরিচিত একটি সমস্যাছবি: ফ্রিপিক
পিত্তথলিতে পাথর বা গলব্লাডার স্টোন খুবই পরিচিত একটি সমস্যাছবি: ফ্রিপিক

পিত্তরসে প্রধানত পানি, কোলেস্টেরল, বিলিরুবিন ও অন্যান্য লবণ থাকে। যখন কোলেস্টেরল বা বিলিরুবিনের পরিমাণ বেড়ে যায় অথবা পিত্তথলি সঠিকভাবে খালি না হয়, তখন পিত্তরস ঘন হয়ে জমাট বাঁধতে শুরু করে এবং পাথরের সৃষ্টি হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, পিত্তথলিতে পাথর পুরুষের চেয়ে নারীদের বেশি হয়। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী, স্থূলকায় ব্যক্তি, ৪০ বা তদূর্ধ্ব বয়সী নারী ও পুরুষ, যাঁরা কম শারীরিক পরিশ্রম করেন বা দীর্ঘদিন না খেয়ে থাকেন, তাঁদের পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

পিত্তথলিতে পাথরকে ‘নীরব’ রোগ বলা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় এর তেমন কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। অধিকাংশ মানুষ জানতেই পারেন না যে তাঁর পিত্তথলিতে পাথর হয়েছে।

তবে চর্বিযুক্ত খাবার খেলে হঠাৎ তীব্র ব্যথা, সাধারণত পেটের ডান দিকে বা মাঝখানে ব্যথা শুরু হয়। একই সঙ্গে হতে পারে বমি, জ্বর, হজমে সমস্যা বা চামড়ায় হলদে ভাব। এমন ব্যথা হলে অনেকে সাধারণত তা গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা মনে করে অবহেলা করেন। এ কারণে রোগটি শনাক্তে দেরি হয়ে যায়।

পিত্তথলির পাথর প্রতিরোধের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনধারা মেনে চলা খুবই জরুরি। নিয়মিত হাঁটা, চর্বিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা, ওজন নিয়ন্ত্রণ, পর্যাপ্ত পানি পান ও সুষম খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে এই সমস্যা অনেকটাই এড়ানো যায়।

পিত্তথলির পাথরের প্রধান চিকিৎসা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পাথর অপসারণ। একে বলে ল্যাপারোস্কোপিক কোলেসিস্টেকটোমি, যা খুব সাধারণ ও নিরাপদ একটি পদ্ধতি। এ সমস্যায় ভুগলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ শল্যবিদ অর্থাৎ সার্জনের পরামর্শ নেবেন।

অনেকে ভুল ধারণা থেকে হোমিওপ্যাথি বা কবিরাজের দ্বারস্থ হন। কিন্তু মনে রাখবেন, এতে জটিলতা আরও বাড়ে। উপসর্গবিহীন পিত্তথলির পাথর থাকলে অনেক সময় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শুধু পর্যবেক্ষণই যথেষ্ট হতে পারে।

পিত্তথলির পাথর সাধারণ মনে হলেও সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এটি জটিলতা তৈরি করতে পারে। তাই এ বিষয়ে সচেতনতা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ডা. মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দীন খান, সহকারী অধ্যাপক, সার্জারি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা

Lading . . .