Advertisement

ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম বা আইবিএস দূর করবে যে ৪টি প্রাকৃতিক সাপ্লিমেন্ট

প্রথম আলো

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ক্ষুধা লাগলে পেট জ্বালা করে বা পেটব্যথার মতো কষ্টদায়ক কোনো অনুভূতি হয়ছবি: পেক্সেলস
ক্ষুধা লাগলে পেট জ্বালা করে বা পেটব্যথার মতো কষ্টদায়ক কোনো অনুভূতি হয়ছবি: পেক্সেলস

ইসবগুল মূলত দ্রবণীয় ফাইবার বা খাদ্য আঁশ। এটা পানির সঙ্গে মিশে জেলের মতো হয়ে ওঠে। ফলে ইসবগুল মল নরম করে। এমনকি ডায়রিয়া হলে মলত্যাগ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। কারণ, ইসবগুল মলে ভর বা ঘনত্ব যোগ করে, তাতে মল বেশি তরল না হয়ে কিছুটা শক্ত হয়।

ইসবগুলে অ্যারাবিনোক্সাইলান নামের একটি বিশেষ পদার্থ থাকে, যেটি আমাদের পেটের ভালো ব্যাকটেরিয়ার খাবার হিসেবে কাজ করে। তাই এটি প্রিবায়োটিকের মতো কাজ করে এবং অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম করে উন্নত। অর্থাৎ ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে, বিশেষ করে বিউটারেট উৎপাদনকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ায়।

কিছু ফাইবার পেট ফাঁপাসহ অন্যান্য উপসর্গ বাড়িয়ে দিতে পারে, কিন্তু ইসবগুল আইবিএসের সঙ্গে ভালোভাবে মানিয়ে নেয়। এটি অন্ত্রের গতিশীলতা বাড়ায় এবং স্বাভাবিক মলত্যাগে সহায়তা করে।

এল-গ্লুটামিন হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ অ্যামিনো অ্যাসিড, যা অন্ত্রের ভেতরের আবরণের অখণ্ডতা বজায় রাখে। অনেক আইবিএস রোগী, বিশেষ করে যাঁদের লিকি গাট বা প্রদাহ আছে, তাঁদের জন্য এল-গ্লুটামিন দারুণ উপকারী।

অন্ত্র প্রদাহের কারণে আইবিএসের উপসর্গ দেখা দিলেও এল-গ্লুটামিন উপকারে আসে। ২০২১ সালের এক ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা গেছে, লো-ফডম্যাপ ডায়েট (এটি আইবিএস নিয়ন্ত্রণের একধরনের ডায়েট) অনুসরণকারীরা প্রতিদিন ১৫ গ্রাম এল-গ্লুটামিন গ্রহণ করেছিলেন।

এতে তাঁদের পেটব্যথা কমেছিল এবং মলত্যাগের অভ্যাসে এসেছিল ইতিবাচক পরিবর্তন। এল-গ্লুটামিন প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ—দুই ধরনের হাই-প্রোটিন খাবারে বেশি পাওয়া যায়। এটি প্রধানত মাংস, মাছ, ডিম, দুধ, ডাল, সাদা ভাত, বাঁধাকপি ও ব্রকলি থেকে পাওয়া যায়।

প্রোবায়োটিকস হলো উপকারী ব্যাকটেরিয়া, যা অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এসব হজমে সহায়ক, পেট ফাঁপা কমায়, এমনকি ডায়রিয়াতেও উপকারী। তবে এটি নির্ভর করে ব্যক্তির কোন ধরনের আইবিএস আছে, তার ওপর।

আবার এটাও মনে রাখতে হবে, সব প্রোবায়োটিক এক রকম নয়। কোন প্রোবায়োটিক নেওয়া উচিত এবং কতটুকু নেওয়া উচিত, এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই দুটি বিষয় ঠিক না হলে প্রোবায়োটিক নেওয়ার পরও ভালো ফল অধরা থেকে যেতে পারে।

অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রোবায়োটিক শুধু দুগ্ধজাত পণ্যে নয়, নন-ডেইরি ফারমেন্টেড খাবারেও পাওয়া যায়। এর মধ্যে আছে সয়াবিনভিত্তিক খাবার, সিরিয়াল, ডাল, বাঁধাকপি, ভুট্টা, বাজরা, জোয়ার ইত্যাদি।

পিপারমিন্ট বা পুদিনা সহজলভ্য এবং এর কার্যকারিতা সত্যিই বিস্ময়কর। বিশেষ করে সাপ্লিমেন্ট আকারে গ্রহণ করলে এটি আইবিএস রোগীদের জন্য দারুণ উপকারী। পুদিনা অন্ত্রের ভেতরের পেশি শিথিল করে। ফলে পেটব্যথা কমে, ফাঁপা ভাব নিয়ন্ত্রণে আসে এবং অতিরিক্ত গ্যাসের সমস্যা অনেকটাই দূর হয়।

এন্টারিক-কোটেড ক্যাপসুল সবচেয়ে কার্যকর। কারণ, এসব পেটে ভেঙে যায় না, সরাসরি অন্ত্রে গিয়ে কাজ শুরু করে। এতে পুদিনার গুণাগুণ অন্ত্রে ভালোভাবে পৌঁছায় এবং হজমে কোনো সমস্যা হয় না।

গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত পুদিনার সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করলে আইবিএসের উপসর্গ অনেকটা কমে আসে, বিশেষ করে যাঁদের আইবিএস-ডি, অর্থাৎ ডায়রিয়া-প্রধান আইবিএস আছে।


সূত্র: এমএসএন

Lading . . .