পিসিওএস বা বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম নিয়ে সচেতন হওয়া জরুরি কেন
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

পিসিওএস হলো নারীদের হরমোনজনিত একটি সমস্যা। এটি মূলত প্রজননক্ষম নারীদের হয়ে থাকে।
এ অবস্থায় নারীদের ডিম্বাশয়ে ছোট ছোট সিস্ট (পানি বা তরলপূর্ণ থলি) তৈরি হয় এবং শরীরে পুরুষ হরমোন অর্থাৎ টেস্টোস্টেরনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়।
এর ফলে ঋতুচক্রে অনিয়ম, গর্ভধারণে সমস্যা, ত্বকে ব্রণ, অতিরিক্ত লোম গজানো ও ওজন বৃদ্ধির মতো সমস্যা হয়ে থাকে।
পিসিওএসের উপসর্গ নারীভেদে ভিন্ন হতে পারে। সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্য রয়েছে—
অনিয়মিত বা বন্ধ মাসিক চক্র
মুখ ও শরীরে অবাঞ্চিত লোম ও ব্রণ
চুল পাতলা হয়ে যাওয়া বা চুল পড়া
ওজন বৃদ্ধি
গর্ভধারণে সমস্যা বা বন্ধ্যত্ব
ক্লান্তি ও মেজাজের পরিবর্তন
ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি
পিসিওএসের নির্দিষ্ট ও স্থায়ী চিকিৎসা নেই। সঠিক জীবনধারা, ওজন নিয়ন্ত্রণ, সুষম খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়ামে উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
পিসিওএস ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ সুষম খাদ্যগ্রহণ। প্রক্রিয়াজাত খাবার, মিষ্টি, অতিরিক্ত চর্বি ও কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে স্বাস্থ্যকর সবজি, ফল, আঁশ ও আমিষ খাওয়া উচিত।
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায় ও হরমোন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ৫ থেকে ১০ শতাংশ ওজন কমাতে পারলেও অনেক উপসর্গের উন্নতি হয়।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হরমোনাল ওষুধ, মেটফরমিন ইত্যাদি নেওয়া যেতে পারে।
গর্ভধারণে সমস্যা থাকলে ফার্টিলিটি চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।
পিসিওএসের মানসিক প্রভাব যেমন উদ্বেগ, হতাশা বা আত্মবিশ্বাস হ্রাসও বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন। কাউন্সেলিং, সাপোর্ট গ্রুপে অংশগ্রহণ সহায়ক হতে পারে।
বিশ্বব্যাপী প্রায় ১০ শতাংশ নারী এই রোগে আক্রান্ত। সময়মতো রোগ শনাক্ত না করা হলে পিসিওএস দীর্ঘ মেয়াদে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ, বন্ধ্যত্ব এমনকি জরায়ু ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়াতে পারে।
কিশোরী বয়স থেকে মাসিক চক্রের বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া, ওজন নিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারার কাউন্সেলিং নিতে হবে।
এ বিষয়ে মা-বাবা ও পরিবারে সচেতনতা তৈরি করা দরকার। স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। স্কুল-কলেজে স্বাস্থ্যশিক্ষা কার্যক্রম রাখা উচিত।